স্টিভ রোডসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশের সঙ্গেও চুক্তি নবায়ন করেনি বোর্ড। সামনেই শ্রীলঙ্কা সফর। সেখানে সাকিব-মুশফিকদের সঙ্গে থাকবেন কে? অতীতে ভারপ্রাপ্ত কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন সাবেক অধিনায়ক ও দলের বর্তমান ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন। ২০১৮ সালে দেরাদুনে অনুষ্ঠিত আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশ দলের অন্তর্বর্তীকালীন কোচের দায়িত্ব পালন করার অভিজ্ঞতা রয়েছে সুজনের। তবে এবার তিনি আগ্রহী নন। গতকাল সুজন বলেন, ‘বারবার এক সিরিজের জন্য ভারপ্রাপ্ত কোচ হতে চাই না। সেটা আমার জন্য ঠিক হবে না।’ তবে সুজন এটাও বলেছেন যে, ‘আমি সব সময় প্রস্তুত থাকি।
কোচিং আমার একটি পেশা। বোর্ড একবার আমাকে দায়িত্ব দিয়েছিল। আমি আবারও অস্থায়ী পদে কাজ করবো কি না এটাও একটা কথা। বোর্ডও আমাকে সেভাবে চিন্তা করবে কি না এটাও একটা কথা।’
কোচ হিসেবে ঘরোয়া ক্রিকেটে অনেক খ্যাতি রয়েছে সুজনের। ২০১৪ সালে তার অধীনে ঢাকা প্রিমিয়ার লীগের শিরোপা জেতে প্রাইম ব্যাংক। এরপর ২০১৫-১৬, ২০১৭-১৮ এবং ২০১৯-২০ মৌসুমে আবাহনী লিমিটেডকে ঘরোয়া লীগের শিরোপা এনে দেয়ার পেছনে বড় অবদান ছিল সুজনের। টানা চার মৌসুম ধরে আবাহনীর কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এ ছাড়া ২০১৬ সালে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে (বিপিএল) ঢাকা ডাইনামাইটসের কোচ হিসেবে শিরোপা জেতেন সুজন। আর বিপিএলের গত দুই আসরে তার কোচিংয়ে রানার্সআপ হয় ঢাকা ডায়নামাইটস।
সুজন জানিয়েছেন, ম্যানেজারের দায়িত্বই পালন করে যেতে যান আপাতত। কোচিং ভাবনা নেই তার। তিনি বলেন, ‘কোচিং নিয়ে কথা বলবো না কারণ আমি কোচিংয়ের অংশ নই। আমি পুরো দলের ম্যানেজার। দল নির্বাচন যখন আমরা করি তখন চেষ্টা করি সেরা খেলোয়াড়টি বাছাই করতে। এরপর কোচিং বিভাগের কাজ। ১৫ জনের স্কোয়াড যায়, তখন কোচরা প্ল্যান করে একাদশে কে খেলবে, কে খেলবে না। কাকে কোন দায়িত্ব দেয়া হবে। এটি আমার এখতিয়ারভুক্ত না, আমি আসলে কোচিং বিভাগের অংশই নই।’
ওয়ালশের বিদায়
বিশ্বকাপের পর অনেক কোচের চুক্তি শেষ হবে। সুজন মনে করেন, বিসিবি দ্রুত পদক্ষেপ নিলে শ্রীলঙ্কা সফরের আগেই নতুন কোচ পেয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘আমরা সঠিক সময়ে কোচ পেয়ে যাবো বলে আশা করছি। ভালো কোচ আনার চেষ্টা চলছে বিসিবির পক্ষ থেকে। আমি বিশ্বাস করি, বিশ্বকাপ শেষে অনেক কোচের চুক্তি শেষ হবে। আমরা যদি স্বল্প সময়ের মধ্যে এটা করতে পারি তাহলে ভালো কোচ আসতে পারে।’
কয়েকদিন ধরেই বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশকে ছাঁটাইয়ের কথা শোনা যাচ্ছিল। গতকাল বিসিবির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা এলো- ওয়ালশের সঙ্গে আর চুক্তি নবায়ন করছে না তারা। ২০১৬ সালে বাংলাদেশের বোলিং কোচ হয়ে আসেন ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তির পেসার ওয়ালশ। কিন্তু তার অধীনে বাংলাদেশের বোলিংয়ের বিশেষ কোনো উন্নতি চোখে পড়েনি। ফিজিও থিহান চন্দমোহনের সঙ্গেও চুক্তি বাড়াচ্ছে না বিসিবি। বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন বলেন, ‘আপনারা ইতিমধ্যে জেনেছেন, সমঝোতার মাধ্যমে আমাদের প্রধান কোচের সঙ্গে চুক্তি শেষ হয়ে যাওয়ায় আমরা সেটা আর চালিয়ে নিচ্ছি না। এর বাইরে দু-একজন কোচ, কোর্টনি ওয়ালশদের সঙ্গে বিশ্বকাপ পর্যন্ত চুক্তি ছিল। আমরা সেটাও আর করছি না। ফিজিও যে ছিল তার সঙ্গেও আমরা আর চুক্তি বাড়াচ্ছি না।’ তবে স্পিন উপদেষ্টা সুনিল যোশি, ব্যাটিং কোচ নিল ম্যাকেঞ্জি ও ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুকের ব্যাপারে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি বলে জানান বিসিবি প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন।