শেষের পাতা
রিকশা শ্রমিকদের অবরোধে রাজধানীজুড়ে দুর্ভোগ
স্টাফ রিপোর্টার
২০১৯-০৭-১০
গুরুত্বপূর্ণ সড়কে রিকশা চলাচল বন্ধ করার প্রতিবাদে দ্বিতীয় দিনের মতো অবরোধ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে রিকশা শ্রমিকরা। রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড থেকে সায়েদাবাদ পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন স্থানে শ্রমিকরা সড়ক আটকে বিক্ষোভ করেন। এতে এ সড়কে যানচলাচল বন্ধ থাকে। চরম দুর্ভোগে পড়েন লাখো মানুষ। যানবাহন চলতে না পারায় হেঁটে সাধারণ মানুষকে কর্মস্থল বা গন্তব্যে যেতে দেখা যায়। দিনভর বিক্ষোভের পর এক দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে কর্মসূচি শেষ করেন শ্রমিকরা। বুধবারের মধ্যে তাদের দাবি মেনে না নেয়া হলে বৃহস্পতিবার থেকে বৃহৎ কর্মসূচি দেয়া হবে বলে তারা ঘোষণা করেন। এদিকে সমস্যা সমাধানে আলোচনা করতে আজ নগরভবনে রিকশা শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মেয়র সাঈদ খোকন।
এদিকে সকাল ৭ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত দীর্ঘ ৯ ঘণ্টা ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়কে আন্দোলনকারীদের অবরোধের কারণে যানযট ছড়িয়ে পড়ে। অবরোধ হওয়া সড়কগুলোতে আটকা পড়ে হাজার হাজার গাড়ি। এমনকি ওই এলাকার ফ্লাইওভারগুলোতেও গাড়ির দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। এতে দুর্ভোগে পড়েন গাড়ির যাত্রী ও পথচারীরা।
গাড়ি থেকে নেমে অনেকেই গন্তব্যস্থলে হেঁটে রওনা দেন। সকাল ৭ টার দিকে ‘রিকশা ভ্যান মালিক ঐক্য পরিষদ’-এর একটি ব্যানারে রিকশা চালকরা রামপুরা ব্রিজের সামনে মিছিল বের করে। এসময় তারা ‘রিকশা চালাতে এক লেন চাই, দিয়ে দাও, অযোক্তিক শর্ত মানি না মানবো না, বলে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। একপর্যায়ে তারা সড়কের মধ্যে বসে পড়েন। যান চলাচলে বাধা প্রদান করেন। এসময় তাদের অবস্থানের খবর ছড়িয়ে পড়লে কুড়িল বিশ্বরোড, বাড্ডা, রামপুরা, খিলগাঁও, সায়দাবাদ ও মালিবাগ রেলগেট এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন ওইসব এলাকার শ্রমিকরা।
এলাকাগুলোতে অবরোধ হওয়ার কারণে আশপাশের এলাকা উত্তরা, বনশ্রী, মেরাদিয়া, কাকরাইল, মগবাজারে যানজট ছড়িয়ে পড়ে। দুর্ভোগের বেশী শিকার হন অসুস্থ ও শিশুরা।
রামপুরা ব্রিজের কাছে সড়কে বাঁশ দিয়ে অবরোধকারী গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম ক্ষুব্ধ কন্ঠে জানান, আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই সড়কে রিকশা চালাচ্ছি। সড়কের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। আমাদের বিস্তারিত না জানিয়ে সিটি করপোরেশন এই উদ্যোগ কেন নিলো বুঝতে পারছি না।
রিকশা চালক মায়েদুর রহমান জানান, আমার গ্রামের বাড়ি নীলফামারী। মহাজনের সুদের টাকা শোধ করার জন্য ঢাকায় আসি রিকশা চালাতে। সুদের টাকা পরিশোধের পাশাপাশি পরিবারের ভরণ পোষণ চালাই। রিকশা না চালালে আমাদের উপায় কী। ভিআইপি রোড বাদ দিয়ে আশপাশের লোকাল রোডে রিকশা চালালে ক্ষতি কী প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ভিআইপি রোডে যাত্রী বেশী পাওয়া যায়। ভাড়াও বেশী। লোকাল সড়কে তা পাওয়া যায় না।
শাহজাহান নামের এক রিকশাচালক বলেন, আমরা দিন আনি দিন খাই। মেয়র তো জানেন। আমাগো পেটে লাথি মারার আগে একবার চিন্তা করলো না কেন। তিনি বলেন, রিকশা বন্ধ না করে আলাদা লেন কইরা দিলে সমস্যা হয় না। কিন্তু বন্ধ কইরা দিলে বউ বাচ্চা নিয়ে আমরা কই যাবো।
যানচলাচল বন্ধ হওয়ায় দুর্ভোগের শিকার হওয়া নাফিসা নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, কলেজে যাওয়ার জন্য বেরিয়েছি। মিডটার্ম পরীক্ষা চলছে। সময়মতো পৌঁছাতে পারবো না। আফজাল হোসেন নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ইসলামপুর মালের অর্ডার দিয়ে রাখছি। আজ ডেলিভারি দিবে। কিন্তু অতদূর যাবো কিভাবে। আগে আন্দোলন হলে রিকশা পাওয়া যেত। এখন তো রিকশাওয়ালাদেরই আন্দোলন। হাঁটা ছাড়া উপায় নাই। হেঁটেই যেতে হবে।
ছেলেকে দেখতে হাসপাতালে যাবেন সুলতানা আহমেদ নামের এক গৃহিণী। সড়কে কোনো যানবাহন না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন। ওদিকে ছেলে একা। তিনি বলেন, আমার ছেলে হাসপাতালে একা। তাকে দেখার কেউ নেই। খুব চিন্তায় পড়ে গেছি।
‘রিকশা ভ্যান মালিক ঐক্য পরিষদ’-এর সহ-সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস মানবজমিনকে জানান, সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ কোন আলোচনা না করেই এ সিন্ধান্ত নিয়েছে। আমাদের দাবি হচ্ছে, পৃথক লেনে রিকশা চলবে। যদি দাবি না মানা হয় তাহলে সড়কে আমরা অনশন করবো। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কেউ ঘরে ফিরে যাবো না। কারণ একটি রিকশা চালকের সঙ্গে একটি পরিবার জড়িত। আমরা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি স্মারকলিপি প্রদান করবো।
ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশের ডিসি (পূর্ব) মো. কামরুজ্জামান জানান, সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। অনেক অনুরোধ সত্ত্বেও আন্দোলনকারীরা সড়ক ছেড়ে যায়নি। তিনি আরও জানান, আন্দোলনের নামে যাতে কেউ নাশকতা না করতে পারে সেদিকে পুলিশের লক্ষ্য ছিল। অবরোধীকারীরা বিকাল ৪ টার দিকে সড়ক ছেড়ে দিয়ে চলে যায়।
এদিকে, আন্দোলনরত রিকশাচালকদের ব্যাপারে কথা বলেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন। গতকাল রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকরা আন্দোলনকারীদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, নগরীর কোটি মানুষকে জিম্মি করে, ভোগান্তি দিয়ে দাবি আদায় করা কতটা যৌক্তিক ভেবে দেখতে হবে। এটা প্রতিবাদের ভাষা হতে পারে না। আসুন সবাই মিলে বসে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করি। আমি লাইসেন্সধারী রিকশাচালকদের নগর ভবনে চায়ের দাওয়াত দিচ্ছি। তাদের আলোচনায় বসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আলোচনা করে এই সমস্যার সমাধান করতে পারি। তিনি জানান, নগরীতে ১ হাজারের ওপরে রাস্তা রয়েছে। সেখান থেকে মাত্র তিনটি সড়কে রিকশা বন্ধ করা হয়েছে। এতে আন্দোলনের কিছু নেই। এতে রিকশাচালক ভাইদের সমস্যা হওয়ার কথা না।
এদিকে সকাল ৭ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত দীর্ঘ ৯ ঘণ্টা ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়কে আন্দোলনকারীদের অবরোধের কারণে যানযট ছড়িয়ে পড়ে। অবরোধ হওয়া সড়কগুলোতে আটকা পড়ে হাজার হাজার গাড়ি। এমনকি ওই এলাকার ফ্লাইওভারগুলোতেও গাড়ির দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। এতে দুর্ভোগে পড়েন গাড়ির যাত্রী ও পথচারীরা।
গাড়ি থেকে নেমে অনেকেই গন্তব্যস্থলে হেঁটে রওনা দেন। সকাল ৭ টার দিকে ‘রিকশা ভ্যান মালিক ঐক্য পরিষদ’-এর একটি ব্যানারে রিকশা চালকরা রামপুরা ব্রিজের সামনে মিছিল বের করে। এসময় তারা ‘রিকশা চালাতে এক লেন চাই, দিয়ে দাও, অযোক্তিক শর্ত মানি না মানবো না, বলে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। একপর্যায়ে তারা সড়কের মধ্যে বসে পড়েন। যান চলাচলে বাধা প্রদান করেন। এসময় তাদের অবস্থানের খবর ছড়িয়ে পড়লে কুড়িল বিশ্বরোড, বাড্ডা, রামপুরা, খিলগাঁও, সায়দাবাদ ও মালিবাগ রেলগেট এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন ওইসব এলাকার শ্রমিকরা।
এলাকাগুলোতে অবরোধ হওয়ার কারণে আশপাশের এলাকা উত্তরা, বনশ্রী, মেরাদিয়া, কাকরাইল, মগবাজারে যানজট ছড়িয়ে পড়ে। দুর্ভোগের বেশী শিকার হন অসুস্থ ও শিশুরা।
রামপুরা ব্রিজের কাছে সড়কে বাঁশ দিয়ে অবরোধকারী গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম ক্ষুব্ধ কন্ঠে জানান, আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই সড়কে রিকশা চালাচ্ছি। সড়কের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। আমাদের বিস্তারিত না জানিয়ে সিটি করপোরেশন এই উদ্যোগ কেন নিলো বুঝতে পারছি না।
রিকশা চালক মায়েদুর রহমান জানান, আমার গ্রামের বাড়ি নীলফামারী। মহাজনের সুদের টাকা শোধ করার জন্য ঢাকায় আসি রিকশা চালাতে। সুদের টাকা পরিশোধের পাশাপাশি পরিবারের ভরণ পোষণ চালাই। রিকশা না চালালে আমাদের উপায় কী। ভিআইপি রোড বাদ দিয়ে আশপাশের লোকাল রোডে রিকশা চালালে ক্ষতি কী প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ভিআইপি রোডে যাত্রী বেশী পাওয়া যায়। ভাড়াও বেশী। লোকাল সড়কে তা পাওয়া যায় না।
শাহজাহান নামের এক রিকশাচালক বলেন, আমরা দিন আনি দিন খাই। মেয়র তো জানেন। আমাগো পেটে লাথি মারার আগে একবার চিন্তা করলো না কেন। তিনি বলেন, রিকশা বন্ধ না করে আলাদা লেন কইরা দিলে সমস্যা হয় না। কিন্তু বন্ধ কইরা দিলে বউ বাচ্চা নিয়ে আমরা কই যাবো।
যানচলাচল বন্ধ হওয়ায় দুর্ভোগের শিকার হওয়া নাফিসা নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, কলেজে যাওয়ার জন্য বেরিয়েছি। মিডটার্ম পরীক্ষা চলছে। সময়মতো পৌঁছাতে পারবো না। আফজাল হোসেন নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ইসলামপুর মালের অর্ডার দিয়ে রাখছি। আজ ডেলিভারি দিবে। কিন্তু অতদূর যাবো কিভাবে। আগে আন্দোলন হলে রিকশা পাওয়া যেত। এখন তো রিকশাওয়ালাদেরই আন্দোলন। হাঁটা ছাড়া উপায় নাই। হেঁটেই যেতে হবে।
ছেলেকে দেখতে হাসপাতালে যাবেন সুলতানা আহমেদ নামের এক গৃহিণী। সড়কে কোনো যানবাহন না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন। ওদিকে ছেলে একা। তিনি বলেন, আমার ছেলে হাসপাতালে একা। তাকে দেখার কেউ নেই। খুব চিন্তায় পড়ে গেছি।
‘রিকশা ভ্যান মালিক ঐক্য পরিষদ’-এর সহ-সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস মানবজমিনকে জানান, সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ কোন আলোচনা না করেই এ সিন্ধান্ত নিয়েছে। আমাদের দাবি হচ্ছে, পৃথক লেনে রিকশা চলবে। যদি দাবি না মানা হয় তাহলে সড়কে আমরা অনশন করবো। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কেউ ঘরে ফিরে যাবো না। কারণ একটি রিকশা চালকের সঙ্গে একটি পরিবার জড়িত। আমরা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি স্মারকলিপি প্রদান করবো।
ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশের ডিসি (পূর্ব) মো. কামরুজ্জামান জানান, সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। অনেক অনুরোধ সত্ত্বেও আন্দোলনকারীরা সড়ক ছেড়ে যায়নি। তিনি আরও জানান, আন্দোলনের নামে যাতে কেউ নাশকতা না করতে পারে সেদিকে পুলিশের লক্ষ্য ছিল। অবরোধীকারীরা বিকাল ৪ টার দিকে সড়ক ছেড়ে দিয়ে চলে যায়।
এদিকে, আন্দোলনরত রিকশাচালকদের ব্যাপারে কথা বলেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন। গতকাল রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকরা আন্দোলনকারীদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, নগরীর কোটি মানুষকে জিম্মি করে, ভোগান্তি দিয়ে দাবি আদায় করা কতটা যৌক্তিক ভেবে দেখতে হবে। এটা প্রতিবাদের ভাষা হতে পারে না। আসুন সবাই মিলে বসে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করি। আমি লাইসেন্সধারী রিকশাচালকদের নগর ভবনে চায়ের দাওয়াত দিচ্ছি। তাদের আলোচনায় বসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আলোচনা করে এই সমস্যার সমাধান করতে পারি। তিনি জানান, নগরীতে ১ হাজারের ওপরে রাস্তা রয়েছে। সেখান থেকে মাত্র তিনটি সড়কে রিকশা বন্ধ করা হয়েছে। এতে আন্দোলনের কিছু নেই। এতে রিকশাচালক ভাইদের সমস্যা হওয়ার কথা না।