আইসিসি ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে এগিয়ে ইংল্যান্ড। অজিরা যেখানে পাঁচে, ইংলিশদের অবস্থান সেখানে শীর্ষে। গত বছর অস্ট্রেলিয়াকে ঘরের মাঠে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা দিয়েছিল তারা। তবে চলতি বিশ্বকাপে পারফরম্যান্স বিচারে ইংলিশদের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে অজিরা। দু’দলের শক্তি-দুর্বলতা দেখে নেয়া যাক।
অস্ট্রেলিয়ার শক্তিব্যাটিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার শক্তি টপ-অর্ডার। চলতি আসরে ৯ ম্যাচে ৭৯.৭৫ গড়ে ৬৩৮ রান করেছেন বাঁহাতি ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার। সমান তিনটি করে সেঞ্চুরি ও হাফসেঞ্চুরি এসেছে তার ব্যাট থেকে। আরেক ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চ ৯ ম্যাচে ৫৬.৩৩ গড়ে করেছেন ৫০৭ রান।
২ সেঞ্চুরি ও ৩ হাফসেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন তিনি। মিডল অর্ডারে অস্ট্রেলিয়ার রয়েছে অ্যালেক্স ক্যারির মতো ব্যাটসম্যান। ৯ ম্যাচে ৩২৯ রান করেছেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। স্ট্রাইকরেট ১১৩.৪৪! আর বোলিংয়ে অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্বে দিচ্ছেন বাঁহাতি পেসার মিচেল স্টার্ক। ৯ ম্যাচে স্টার্কের শিকার ২৬ উইকেট। প্যাট কামিন্সও মন্দ করেননি। ১৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি। এ দুজনের সঙ্গে রয়েছেন জেসন বেরেনডর্ফ। মাত্র ৪ ম্যাচে ৯ উইকেট পেয়েছেন এ বাঁহাতি। এর মধ্যে এক ম্যাচেই নিয়েছেন ৫ উইকেট।
ইংল্যান্ডের শক্তিএবারের বিশ্বকাপে সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ ইংল্যান্ডের। এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ দলীয় রানের ইনিংস দুটিই তাদের। ব্যাটিং উইকেটে তাদের ব্যাটসম্যানরা হয়ে উঠেন বিধ্বংসী। ইংল্যান্ডের টপ অর্ডার দারুণ ফর্মে। ওপেনার জনি বেয়ারস্টো ৯ ম্যাচে ২ সেঞ্চুরি ও ২ হাফসেঞ্চুরিতে ৪৬২ রান করেছেন। গত দুই ম্যাচেই শতক হাঁকান ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। আরেক ওপেনার জেসন রয় ইনজুরি কাটিয়ে ফিরেই টানা দুই ফিফটি মেরেছেন। আসরে ১৫৩ রানের একটি ইনিংস আছে তার। ৩ নম্বরে নামা জো রুট ৫০০ রান সংগ্রহ করেছেন। অধিনায়ক মরগান, উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান জস বাটলার দুজনেই টুর্নামেন্টে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। ব্যাটে-বলে ফর্মে আছেন বেন স্টোকসও। স্টোকস ব্যাট হাতে ৩৮১ রান ও বল হাতে নিয়েছেন ৭ উইকেট। আর ইংল্যান্ডের আছে শক্তিশালি পেস আক্রমণ। জফরা আর্চার ১৭, মার্ক উড ১৬ ও ক্রিস ওকস নিয়েছেন ১০ উইকেট।
অস্ট্রেলিয়ার দুর্বলতাস্টিভেন স্মিথ ৯ ম্যাচে মাত্র ২৯৪ রান করেছেন। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল বড় ইনিংস খেলতে পারছেন না। ওভারে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪৬* করার পর গত চার ম্যাচে ৩২, ১২, ১৮, ১২ রান করেছেন ম্যাক্সওয়েল। মিডল অর্ডারে আলেক্স ক্যারি ছাড়া অন্য ব্যাটসম্যানদের ফর্ম নেই। চোটের কারণে উসমান খাজা খেলতে পারছেন না। এবারের বিশ্বকাপে দুটি তিনশোর্ধ্ব রান তাড়া করতে গিয়ে দুটোই হেরেছে অস্ট্রেলিয়া। প্রথমটি ভারত ও সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। আর ব্যাটিং সহায়ক উইকেট অস্ট্রেলিয়ার স্পিনাররা বেশ রান দিচ্ছেন । যা তাদের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ।
ইংল্যান্ডের দুর্বলতাহঠাৎ ফর্ম পড়ে গেছে অধিনায়ক এউইন মরগান ও জস বাটলারের। মরগান আফগানিস্তানের বিপক্ষে ঝড়ো সেঞ্চুরির পর গত ৪ ম্যাচে কোনো ফিফটির দেখা পাননি মরগান। বাটলারের একই দশা। পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে সেঞ্চুরি ও বাংলাদেশের সঙ্গে হাফসেঞ্চুরির পর আর বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। বোলিং উইকেটে ইংল্যান্ডের রেকর্ড বাজে। যদিও এজবাস্টনের উইকেট ব্যাটিং সহায়ক হবে বলেই মনে হচ্ছে। কিন্তু স্যাতসেঁতে আবহাওয়ায় সেটি পেসারদের সাহায্য করবে। আর আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে আজ বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।