বিদায়টা মোটেও সুখকর হলো না স্টিভ রোডসের। বিশ্বকাপের ব্যর্থতার দায় পুরোটাই তার কাঁধে চাপিয়ে বরখাস্ত করা হয় এই ইংলিশ কোচকে। তাইতো বিদায় বেলায় কোনো কথাই বললেন না রোডস। সম্পর্কটা আনুষ্ঠানিকভাবে ছিন্ন করে বিসিবি ছাড়লেন। বিদায় বেলায় তাকে দেখে মনে হয়েছে, এভাবে বিদায় নিতে চাননি তিনি। এক বছরের বাংলাদেশ-অধ্যায়ে যিনি কখনোই সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করেননি সেই রোডস কাল বিদায়ক্ষণে একটা কথাও বললেন না। আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ-পর্বটা তার শেষ হলো নীরবেই। বিসিবি বলছে, ‘এটা পারস্পরিক সমঝোতার বিচ্ছেদ।’
গত বছর বাংলাদেশ দলের যখন দায়িত্ব নিয়েছিলেন, তখন বরং খানিকটা বিস্ময় ছিল তা। আন্তর্জাতিক কোনো দলে কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা নেই, ক্রিকেটার হিসেবেও বড় কেউ নন- এমন একজন বাংলাদেশ দলের চাপ কতটা সামলে নিতে পারবেন? বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান রোডসের কোচ ঘোষণার সময় প্রথম সংবাদ সম্মেলনেই স্পষ্ট করে বলেছিলেন, ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে একজন ইংলিশকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন তারা।
রোডসও প্রথমবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেছিলেন, বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ফাইনালে যাওয়াও অসম্ভব মনে করছেন না। যদিও এক বছরের মধ্যে সেই স্বপ্ন বুদবুদ হয়ে মিলিয়ে গেছে হতাশার সাগরে।
গতকাল রোডসের বিদায় নিয়ে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘রোডসের বিসিবি আসাটা ছিল আনুষ্ঠানিকতা। কিছু আনুষঙ্গিক বিষয় ছিল, অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া। সেগুলো আমরা শেষ করলাম। তিনি সম্ভবত রাতেই বাংলাদেশ থেকে চলে যাচ্ছেন।’ যদিও বুধবার লন্ডনে ইন্টার পার্লামেন্টারি ক্রিকেট টুর্নামেন্টে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, শ্রীলঙ্কা সিরিজে দায়িত্ব পালন করতে পারেন রোডস।
ঠিক তার পরের দিনই আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানালেন বাংলাদেশ কোচ। বিসিবি সভাপতির কথার সঙ্গে বাস্তবের এ অমিল নিয়ে সুজন বলেন, ‘আমরা আগেও বলেছি যে সমঝোতার মাধ্যমে বিষয়টি হয়েছে। কিছু শর্ত থাকে। বোর্ড সভাপতি সেটাই বলেছেন যে তিনি চূড়ান্তভাবে কবে যাবেন বা কী করবেন সেটি তারই (কোচের) সিদ্ধান্ত। সেটি আমাদের কাল জানিয়েছেন (কোচ)। আমরা সভাপতিকে রাতে জানিয়েছি বিষয়টি যে তিনি আজ চলে যেতে চাইছেন।’
স্টিভ রোডস চলে যাওয়ার পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন, নতুন কোচ সন্ধানের ব্যাপারে বিসিবি কী উদ্যোগ নিচ্ছে? বিসিবির প্রধান নির্বাহী জানালেন, তারা কোচ খোঁজার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন। যত দ্রুত সম্ভব শূন্য স্থান পূরণ করা হবে। শুধু প্রধান কোচই নন, কোচিং স্টাফে আরও কিছু জায়গাও দ্রুতই পূরণ করতে হবে বিসিবিকে। রোডসকে প্রধান কোচ হিসেবে নির্বাচিত করার পেছনে বিসিবি ইংল্যান্ড বিশ্বকাপকে প্রাধান্য দিয়েছিল। এবার কোচ নির্বাচনে কোনো কিছু প্রাধান্য নয়, বিসিবি ‘উন্মুক্ত’ থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।