× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বিষণ্ন সাঙ্গাকারা-আকাশ চোপড়া

ক্রিকেট বিশ্বকাপ-২০১৯

স্পোর্টস রিপোর্টার, বার্মিংহাম থেকে
১২ জুলাই ২০১৯, শুক্রবার

ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া সেমিফাইনালের ধারাভাষ্য দিতে ব্যস্ত ভারত, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের সাবেক তারকারা। মাঠে প্রবেশ করতেই লিফটে দেখা সুনীল গাভাস্কারের সঙ্গে। পাশে দাঁড়ানো ব্রিটিশ এক সংবাদকর্মীকে দেখেই বলেন, ‘এত কাছে গিয়েও ভারত হেরে গেলো, দুঃখজনক। যাই হোক দারুণ লড়াই হয়েছে।’ তার মুখে হাসি থাকলেও কণ্ঠে রাজ্যের বিষণ্নতা। লিফট থেকে নামতেই দেখা লঙ্কান গ্রেট কুমার সাঙ্গাকারার সঙ্গে। সুনীলকে দেখেই সম্ভাষণ জানিয়ে হাত মেলালেন। দু’জনই নিজ নিজ দেশ নিয়ে আফসোস করলেন কিছুক্ষণ। সুযোগ পেয়ে সাঙ্গাকারার দিকে এগিয়ে গেলাম।
বাংলাদেশ পরিচয় পেতেই বলে উঠলেন, ‘দুর্ভাগ্য বাংলাদেশের জন্যও। ভালো খেলেছে, কিন্তু কী করার!’ অনুরোধ করলাম ইন্টারভিউর জন্য। এবার একটু দ্বিধায় পড়ে গেলেন। হেসে জানালেন আইসিসির সঙ্গে চুক্তির কথা। তবে একবারে নিরাশ করলেন না, বললেন ভিডিও রেকর্ড না করলে দুই একটি কথা বলতে পারবেন। তবে সেটিও দ্রুত করতে হবে। দেরি না করেই প্রশ্ন ছুড়ে দেয়া হলো বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও সবশেষ ভারতের বিদায়ে কতটা রং হারিয়েছে বিশ্বকাপ? সাঙ্গাকারা বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে বিষণ্ন। তবে ক্রিকেট এমনই। হ্যা, কোনো একটি দল যদি টিকে থাকতো তাহলে ভালো লাগতো।’
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ও বিদায় নিয়ে এখনো ইংল্যান্ডে চলছে নানা আলোচনা।  কেমন হলো বাংলাদেশ দলের ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ এমন প্রশ্নের জবাবে সাঙ্গাকারা বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে বাংলাদেশ দলকে আরো ধৈর্য্যশীল হতে হবে ওয়ানডে ক্রিকেটে। উন্নতির শেষ নেই, কেউ বলতে পারবে না আমি সব উন্নতি করে ফেলেছি। যখন দল ভালো করে তখন দায়িত্ব আরো বেড়ে যায়। তাই বলছি সামনে এগিয়ে যেতে ধৈর্য্য ধরতেই হবে। সেই সঙ্গে নিজেদের কাজগুলোও সঠিকভাবে করতে হবে। সবেচেয়ে বড় কথা হলো, ক্রিকেটে যা চলে গেছে তা নিয়ে ভেবে লাভ নেই। তাকাতে হবে সামনে।’ তবে বাংলাদেশ নিয়ে কথা বললেও নিজ দেশ শ্রীলঙ্কা নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে না বলেই জানিয়ে দিলেন লঙ্কান এই গ্রেট। তিনি বলেন, ‘আমি আসলে এই মুহূর্তে শ্রীলঙ্কা নিয়ে কোনো কথা বলতে চাচ্ছি না। আমার বলা উচিত হবে কিনা জানি না। তাই শ্রীলঙ্কার বিষয়ে কিছু জানতে না চাইলেই আমি খুশি হবো।’
বাংলাদেশের কোচ ছিলেন লঙ্কান চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। ওয়ানডে বিশ্বকাপের দেড় বছর আগে তার বিদায় হয়েছে বেশ বাজেভাবেই। এরপর এলেন স্টিভ রোডস। বিশ্বকাপ শেষে তার বিদায়টাও ভালো হয়নি। যদি সাঙ্গাকারা বাংলাদেশ দলের কোচের প্রস্তাব পান তাহলে ভাববেন কিনা! প্রশ্ন শুনেই হেসে উঠলেন, বলেন, ‘অনেক কঠিন প্রশ্ন, আমি আপাতত যা ভাবছি তা বললে তুমি হতাশ হবে। হ্যা, কোচ  হলো বাংলাদেশের বিষয়, তারা জানে কাকে আনতে হবে আর কাকে আনবেনা। তবে বাংলাদেশের ভালো হয় এমন কিছুই চিন্তা করবে বিসিবি।’ আরো কথা বলার সুযোগটা ছিনিয়ে নিলেন আইসিসির মিডিয়া ম্যানেজার। দ্রুত এসে হাসতে হাসতে বলেন, বিনা রেকর্ডেও ইন্টারভিউ চলবে না। কথা শুনে সাঙ্গাকারাও হেসে বিদায় নিয়ে বলেন, ‘আমি দুঃখিত, হয়তো তোমার প্রশ্নের সঠিক জবাবগুলো দিতে পারিনি।’
সাঙ্গাকারাকে বিদায় দিয়ে নিচে নামতেই দেখা ভারতের সাবেক ক্রিকেটার আকাশ চোপড়ার সঙ্গে। বাংলাদেশের সংবাদকর্মী পরিচয় পেতেই বললেন, ‘আরে এখন তোমাদের মতই আমার অবস্থা। একটি দলও থাকলো না! যাই হোক ক্রিকেটটাই কিন্তু এমন।  তোমার লক্ষ্য যদি শেষ পর্যন্ত থাকে তাহলে খেলতে হবে সেইভাবেই। বিশেষ করে আমি ধারাবাহিকতার কথা বলছি। সেটি বাংলাদেশ বলো, ভারত, শ্রীলঙ্কা আর পাকিস্তান। এই ধরনের টুর্নামেন্টে যেখানে একের পর এক ম্যাচ থাকে তখন নিজেদের ধৈর্য্যের সর্বোচ্চ পরিচয় দিতে হয়। তবে এশিয়ার অভিজ্ঞ তিন দলের তুলনাতে বাংলাদেশ অনেক অনেক ভালো খেলেছে। তবে আমি বিষন্ন। দলগুলোর সমর্থকদের জন্য। তারা সবচেয়ে বেশি হতাশ হয়েছে। আমাদের চেয়ে তাদের মন বেশি ভেঙেছে।’ কথা শেষ হতেই বললেন, ‘কি এত টুকু কথাতে হবে? যদি এর চেয়ে বেশি জানতে চাওতো আমি দুঃখিত, চাকরি বাঁচাতে হবে।’ এ কথা বলেই হাসতে হাসতে লিফটে উঠে গেলেন। যাওয়ার আগে বলেন, ‘আগামীবারের জন্য জমা রইলো।’
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর