নতুন ধরনের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন শুরু হচ্ছে আজ। গেল বছরের চেয়ে বিভিন্ন কারণে এবারের ডিসি সম্মেলনে ভিন্নতা রয়েছে। এবারই প্রথম তিন দিনের বদলে পাঁচ দিনের সম্মেলন হচ্ছে। প্রতিবারের মতো এবারও সম্মেলনটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন। আজ সকাল নয়টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে। অনুষ্ঠানে থাকছে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বক্তব্য, মন্ত্রিপরিষদ সচিবের স্বাগত ভাষণ এবং মাঠ প্রশাসনের উদ্বাধন/সেবা/উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ভিডিও চিত্র। এরপর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেবেন বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিরা। এবারই প্রথম স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের জন্য আলাদা আলাদা সেশন রাখা হয়েছে।
এদিকে ৩৩৩ প্রস্তাব এবারের ডিসি সম্মেলনের জন্য পাঠিয়েছেন ডিসিরা। সম্মেলনে যোগ দিতে দেশের সব ডিসিরা এখন ঢাকায়। গতকাল বিকাল সাড়ে তিনটায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে ডিসিদের অভ্যন্তরীণ ব্রিফিং দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন জেলার ডিসিরা তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব দিয়েছেন। এর মধ্যে মাদারীপুরের ডিসি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আয়করের আওতা বাড়ানোর জন্য জেলা পর্যায়ে ডিসি এবং উপজেলা পর্যায়ে ইউএনওকে সভাপতি করে কমিটি গঠনের প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। একই সঙ্গে ডিসিদের নিরাপত্তায় এক প্লাটুন সশস্ত্র পুলিশ ফোর্স দেয়ার প্রস্তাব করেছেন কুমিল্লা, কক্সবাজার, বাগেরহাট ও চুয়াডাঙ্গার ডিসি। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে (ইউএনও) উপজেলা প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টেশন অফিসারের (পিআইও) বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন (এসিআর) লেখার ক্ষমতা দেয়ার প্রস্তাব করেছেন গোপালগঞ্জের ডিসি। একই সঙ্গে সরকারি বিভিন্ন বাহিনীর অধীনে ব্যাংক ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মতো বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের জন্য ‘জনপ্রশাসন ব্যাংক’ নামে একটি আলাদা ব্যাংক প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেছেন নোয়াখালীর ডিসি। অন্যদিকে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ‘বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেছেন নরসিংদীর ডিসি। এদিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত জেলা কমিটি পুনর্বিন্যাস করে সংসদ সদস্যকে উপদেষ্টা ও ডিসিদের সভাপতি করার প্রস্তাব দিয়েছেন ঝালকাঠির ডিসি। উপজেলা শিক্ষা কমিটি পুনর্গঠন করে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে উপদেষ্টা ও ইউএনওকে সভাপতি করার প্রস্তাবও করেছেন ঝালকাঠির ডিসি। এদিকে ডিসি সম্মেলনের প্রথম দিনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেবেন ডিসিরা। সচিবালয়ে ফিরে ডিসিদের প্রথম দিনের সম্মেলন শুরু হবে বেলা ২ টা ৩১ মিনিটে। শেষ হবে বিকাল চারটায়। এ সেশনে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী অংশ নেবেন। তাদের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেবেন। এরপর প্রথম দিনের দ্বিতীয় অধিবেশন বিকাল চারটায় শুরু হয়ে পাঁচটায় শেষ হবে। এ অধিবেশনে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী, একই মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অংশ নেবেন। তাদের সহায়তা করবেন মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পাঁচ দিনব্যাপী ডিসি সম্মেলন শেষ হবে আগামী বৃহস্পতিবার।