বিশ্বকাপের রেডিও সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রি করে বিপাকে পড়েছে ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা- আইসিসি। সমপ্রচার স্বত্ব বিক্রির টাকা এখনো পুরোপুরি পায়নি সংস্থাটি। যাদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে তাদের দেয়া নিশ্চয়তা চেক বাউন্স হয়েছে। এ ছাড়া রেডিও সমপ্রচারের ধারাবিবরণীতে থাকা সাবেক ক্রিকেটাররা পারিশ্রমিকও পাননি। ধারাভাষ্যকারদের পারিশ্রমিক বকেয়া পড়া আর চেক বাউন্স হওয়ায় বিশ্বকাপের রেডিও সমপ্রচার আপাতত বন্ধ। এ জন্য ঠিক কে বা কারা দায়ী, তা এখনো পরিষ্কার না হলেও এ ঘটনায় বিপাকে যে আইসিসি, সেটা পরিষ্কার।
রেডিও ধারাবিবরণী সমপ্রচার করছে যে প্রতিষ্ঠান, তারা এর আগে ধারাভাষ্যকার হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কার্ল হুপার ও রিকার্ডো পাওয়েলকে নিয়োগ দিয়েছিল। পারিশ্রমিক বকেয়া পড়ে থাকায় সাবেক এ দুই ক্রিকেটারই আলাদা করে মামলা করেছেন। এ ছাড়া ভারতের সাবেক ক্রিকেটার সৈয়দ কিরমানি, দীপ দাশ গুপ্ত, মোহাম্মদ কাইফদের পারিশ্রমিকও বকেয়া।
ধারাভাষ্যকার চারু শর্মাও পারিশ্রমিক ঠিকমতো পাননি। তাদের মধ্যে কয়েকজন আইনি সাহায্যের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ধারাভাষ্যকার চারু শর্মা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রথমে আমার ফোন কেউ ধরেনি। মেইলের জবাবও পাইনি। আমার মতো আরও অনেকেই পারিশ্রমিক পায়নি। অনেকেই এ নিয়ে কথা বলছে না। হয়তো ভেবেছে দেরিতে হলেও পারিশ্রমিক পাওয়া যাবে, তাই চুপচাপ আছে।’ ২০২৩ পর্যন্ত নিজেদের সব টুর্নামেন্টের ডিজিটাল রেডিও সমপ্রচার স্বত্ব দুবাইভিত্তিক ‘চ্যানেল টু’র কাছে বিক্রি করেছে আইসিসি। এ প্রতিষ্ঠানের মালিক ভারতের ব্যবসায়ী অজয় শেঠি। ব্যাংক নিশ্চয়তা হিসেবে চ্যানেল টু আইসিসিকে যত চেক দিয়েছে, গত দুই সপ্তাহে সবই বাউন্স (অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা না থাকলে যা হয়) করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র মারফত সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সমপ্রচার স্বত্বের জন্য কোনো দরপত্র আহ্বান করা হয়নি, আর রেডিও ধারাবিবরণী সমপ্রচারের পূর্ব কোনো অভিজ্ঞতাও নেই চ্যানেল টুর। চ্যানেল টু অবশ্য এসব অভিযোগের কোনো দায় নেয়নি। তাদের দাবি, ভারতের একটি প্রতিষ্ঠানকে স্বত্ব ইজারা দেয়া হয়েছে। পারিশ্রমিক বকেয়া থাকার দায় মূলত ওই প্রতিষ্ঠানের। আর তারা নাকি অডিও বিবরণীও তৈরি করেনি। ভারতের সংবাদমাধ্যম ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’ মনে করছে, এ দুটি প্রতিষ্ঠানের সমপ্রচার ক্রয়কারী চ্যানেল টু ও ইজারা নেয়া প্রতিষ্ঠান স্পোর্টস ফ্লাশের মধ্যে পারিশ্রমিক সংক্রান্ত বিষয়াদি খেলাপি হয়ে পড়ায় আইসিসিও তাদের সমপ্রচার স্বত্ব বিক্রির টাকা পাচ্ছে না। এখন চলছে দোষ চাপান-উতোর খেলা।
রেডিও সমপ্রচারের বৈশ্বিক স্বত্ব কেনা চ্যানেল টুর মালিক অজয় শেঠি পুরো দায় চাপিয়েছেন স্পোর্টস ফ্লাশের ওপর, ‘তারা আমাদের সঙ্গে বিশাল জালিয়াতি করেছে। এটা তাদের পক্ষ থেকে মারাত্মক ভুল। আমি বিষয়টি দেখছি।’ ভারতের অনলাইনভিত্তিক সাইট স্পোর্টস ফ্লাশের কর্ণধার রমন রাহেজা শেঠির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ‘সে (শেঠি) যোগাযোগ করে বলেছে রেডিও সমপ্রচার স্বত্ব পেয়েছে। পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়া সে কীভাবে এ স্বত্ব পেল, তা আমাদের কাছে এখনো বিস্ময়। সে যাই হোক, আমরা নিজেদের কাজটা করতে ভালো অঙ্কের টাকা লগ্নি করেছি, অডিও সমপ্রচার করতে ১৭ জন ক্রিকেটারকেও সংযুক্ত করা হয়। দ্রুতই বোঝা যাবে যে এটা আমাদের অনুষ্ঠান।’