সকাল থেকে বৃষ্টি মাথায় লর্ডসমুখী হয়েছেন দর্শকরা। ফাইনালে ইংল্যান্ড তাই ইংলিশ দর্শকদেরই মাঠ দখলে থাকার কথা। কিন্তু ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ডের ফাইনালেও মাঠে সরব ছিলেন ভারতীয়রাই। টিকিটের বড় একটা অংশ দখল করে নিয়েছিল তারা। যে কারণে তাদের বেশির ভাগই এসেছিলেন খেলা দেখতে। তারাই ইংলিশদের কণ্ঠ ছাপিয়ে গ্যালারিতে ‘ইন্ডিয়া’ ‘ইন্ডিয়া’ বলে স্লোগান দিয়েছেন অনবরত। নিজেদের দল মাঠে না থাকলেও এসেছিলেন ভারতের জার্সি পরেই। আবার অনেক ব্রিটিশ ভারতীয় জার্সি বদলে সমর্থন দিয়েছেন ইংল্যান্ডকে।
দল ফাইনালে না থাকলেও তাদের সরব উপস্থিতি ইংলিশদের আলাদাভাবে আনন্দ দিয়েছে আবার দুঃখও। কারণ নিজ দেশের ফাইনালের টিকিট না পাওয়াতে তাদের থাকতে হয়েছে মাঠের বাইরে। নয়তো বা কোনো ভারতীয় সমর্থকের কাছ থেকে টিকিট কিনে নিতে হয়েছে চড়া মূল্যে। স্টেডিয়ামের বাইরে বিভিন্ন স্থানে দাঁড়িয়ে ভারতীয়দের টিকিটি বিক্রি করতে দেখা গেছে ঘুরে ঘুরে। মূলত বিরাট কোহলির দল সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে পড়ায় দারুণ হতাশায় ভুগেছেন তাদের ভক্ত সমর্থকরা।
ভারত থেকে ২০ বন্ধু সপরিবারে ইংল্যান্ড এসেছিলেন। লম্বা সময় প্রায় প্রতিটি শহর ঘরে দলকে সমর্থন দিয়েছেন। নিশ্চিত ফাইনাল ধরে নিয়ে অনেক আগেই কিনে ফেলেছিলেন টিকিটও। কিন্তু তাদের স্বপ্ন ভেঙে বিদায় নিয়েছে দল। তবে লর্ডসের ফাইনালে ঠিকই উপস্থিত হয়েছেন দেশের পোশাক পড়ে। তাদের একজন রাজেশ চোপড়া একটু পরপর নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিংয়ের সময় চিৎকার করলেন- ‘ইন্ডিয়া’ ইন্ডিয়া বলে। কেন এমন সমর্থন করছেন জানতে চাইলে বলেন, ‘দেশ নেইতো কি হয়েছে। আমরা বিরাটদের দেখাতে চাই যে তোমরা এখানে থাকলে ভারতীয়রা কী করতে পারতো। তোমরা কোটি মানুষের স্বপ্ন ভেঙেছ। দর্শকদেরও নানাভাবে অবহেলা করেছো। এখন তোমরা মাঠের বাইরে কিন্তু আমরা ঠিকই মাঠে।’
অন্যদিকে ফাইনালের আরেক প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ডের সমর্থকদের অবস্থা ছিল শোচনীয়। একেতো নিজ দেশের বাইরে। তার উপর ভারত ও ইংলিশ সমর্থকদের দখলে টিকিট। দেশ থেকে যে কয়েকজন এসেছেন তাদেরও বেশির ভাগই থাকতে হয়েছে মাঠের বাইরে ফ্যান জোনে। নিউজিল্যান্ড সমর্থক টম নিকোল বেশ হতাশ, হন্যে হয়ে খুঁজছিলেন টিকিট। অবশেষে তা পাওয়া গেল এক ভারতীয়র কাছে। অনেক আগ্রহ নিয়ে টিকিট নিতে চাইলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই তার মুখ লজ্জায় লাল। কারণ টিকিটের যে চড়া মূল্য তা তিনি দিতে পারবেন না। হতাশ হয়ে তাই বসেছিলেন বৃষ্টি ভেজা রাস্তাতেই। কাছে যেতেই গলায় ঝোলানো আইসিসির অ্যাক্রিটিডেশন কার্ড দেখে প্রশ্ন- ‘তুমি কি আইসিসির কেউ! টিকিট আছে!’ না বলতেই হতাশ। বলেন, ‘না ফাইনাল দেখা হলো না। এখন ফ্যান জোন ছাড়া উপায় নেই। ভেবেছিলাম নিউজিল্যান্ডের নতুন একটি ইতিহাসে যুক্ত হতে পারবো। আমরা আসলে ধারণাই করিনি যে এত দূর আসবে দল!’