× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

এরশাদের মৃত্যুতে রংপুরে শোকের ছায়া

দেশ বিদেশ

জাভেদ ইকবাল, রংপুর থেকে
১৫ জুলাই ২০১৯, সোমবার

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান, সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে রংপুরের নিজ আবাসভূমিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দলের চেয়ারম্যানকে চিরতরে হারিয়ে যেমনি শোকাহত দলীয় নেতাকর্মীরা, তেমনি এ সূর্য সন্তানকে হারিয়ে শোকার্ত রংপুরের সাধারণ মানুষও। এরশাদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন উপজেলা-ইউনিয়ন থেকে নেতাকর্মীরা সেন্ট্রাল রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ে আসতে শুরু করেন। প্রিয় নেতা ও অভিভাবকের বিদায়ে তাদের অশ্রুসিক্ত নয়ন। এরশাদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। রংপুর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে গোটা নগরজুড়ে কালো পতাকা লাগানো, কালো ব্যাচ ধারণ, নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে মাইকে কোরআন তেলাওয়াত করানোর প্রস্তুতি চলছে। জাতীয় পার্টির নেতাকর্মী, এরশাদভক্তরা সামাজিক মাধ্যমগুলোতে তাদের শোক প্রকাশ করেছেন। তুলে ধরেছেন এরশাদের শাসনামল ও জীবনভর দেশের মানুষের জন্য করে যাওয়া নানা উন্নয়নের কথা।


সদর উপজেলার পাগলাপীরের হিমেল চৌধুরী (২৮) বলেন, রংপুরের ছেলে হয়ে এরশাদ দেশের নেতৃত্ব দিয়েছেন- এটা আমাদের জন্য গৌরবের। আমরা তাকে সম্মান করেছি। এমন নেতা আর জন্মাবে না। রাজনীতির অঙ্গনে আমরা আজ একজন অভিভাবক হারালাম।
মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, জাপা চেয়ারম্যান এরশাদ আমাকে ছেলের মতো দেখতো। তিনি তার ছেলে এরিখ এরশাদের কাছেও আমাকে ছেলে হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। মহান এ নেতার মৃত্যুতে আজ যেন বাবা হারানোর শোক আমার মধ্যে বিরাজ করছে।

এদিকে এরশাদের মৃত্যু ও সমাধিকে কেন্দ্র করে গতকাল সকালে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন স্থানীয় জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা। সেখানে তারা রংপুরের পল্লীনিবাসে এরশাদের সমাধিস্থল করার দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির রংপুর মহানগর সভাপতি সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, জাপা চেয়ারম্যান একজন অবিসংবাদিত নেতা। তার কৈশোর, যৌবনসহ জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময় তিনি রংপুরে কাটিয়েছেন। আমরা রংপুরের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে তাকে লালন করে এসেছি। জীবনের বিভিন্ন চড়াই-উতরাইয়ে রংপুরের মানুষ তাকে সঙ্গ দিয়ে আসছে। তাই তার সমাধি রংপুরের পল্লীনিবাসে করার দাবি জানাচ্ছি। বিগত সময়ে এরশাদ তাকে রংপুরে সমাহিত করার জন্য ওসিয়ত করে গিয়েছিলেন। এ ছাড়া বনানী সামরিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হলে সেখানে নেতাকর্মী, এরশাদ ভক্তদের অবাধ প্রবেশাধিকার থাকবে না। তারা প্রিয় নেতাকে শ্রদ্ধা জানাতে পারবে না। রংপুরের সন্তানকে রংপুরে ফিরিয়ে দেয়া হোক। তাকে যেন রংপুরে শায়িত করা হয় সেজন্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সহধর্মিণীর কাছে আমরা দাবি জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে আমাদের দাবির সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতাদের একমত পোষণ করার অনুরোধ রাখছি।

মোস্তফা বলেন, জাতীয় রাজনীতিতে তিনি বড় ফ্যাক্টর ছিলেন। আমরা চেয়েছিলাম তাকে যেন জাতীয় নেতার সম্মান দেয়া হয়। সে হিসেবে আমরা দুটি স্থান চয়েজে দিয়েছিলাম। একটি হলো- জাতীয় ৩ নেতার কবরের পার্শ্বে। যেহেতু এই ৩ নেতার কবরের অবকাঠামো নকশা জাপা চেয়ারম্যান এরশাদই করেছেন। তার পার্শ্বে সমাহিত করলে আমাদের কোনো আপত্তি ছিল না। আমরা আরেকটি চয়েজ দিয়েছিলাম আসাদ গেটের পার্শ্বে সংসদ ভবনের সামনে যে কবরস্থানটি আছে সেখানে। যেখানে আমাদের মশিউর রহমান যাদু মিয়া, সবুর খান, আতাউর রহমান শায়িত আছেন। আমরা চাই ওপেন প্লেসে তাকে কবরস্থ করা হোক, যেন আমাদের নেতাকর্মীরা তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারে। তাই বনানীর সামরিক কবরস্থানে তাকে দাফনের চেয়ে রংপুরের পল্লীনিবাসে কবরস্থ করা ভালো।
স্থানীয় জাতীয় পার্টির সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বাদ জোহর হেলিকপ্টারযোগে জাপা চেয়ারম্যান এরশাদের মরদেহ আনা হবে রংপুরে। কালেক্টর ঈদগাহ্‌ মাঠে তার জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে রংপুর বিভাগের ৮ জেলার নেতাকর্মীদের কাছে জানাজায় অংশগ্রহণের জন্য প্রচারণার ব্যবস্থা করতে বার্তা পাঠানো হয়েছে। জানাজায় সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণের জন্য মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এদিকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে রংপুরের বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা শোক প্রকাশ করেছেন। তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে শোক প্রকাশ করেন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জাপা মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা, আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য চৌধুরী খালেকুজ্জামান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. রেজাউল করিম রাজু, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিয়ার রহমান সফি, সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল, জাসদের মহানগর সভাপতি গৌতম রায়, সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমেদ, বাংলার চোখ সাংস্কৃতিক সামাজিক ও ক্রীড়া সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান তানবীর হোসেন আশরাফী প্রমুখ।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর