× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

রাষ্ট্রপতির ক্ষমার পরেও কারাগারে ৯ বছর /স্কুলশিক্ষক আজমতকে দ্রুত মুক্তি দেয়ার নির্দেশ

এক্সক্লুসিভ

স্টাফ রিপোর্টার
১৬ জুলাই ২০১৯, মঙ্গলবার

রাষ্ট্রপতির ক্ষমার পরেও ৯ বছর ধরে কারাগারে থাকা স্কুলশিক্ষক আজমত আলীকে অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। গত ২৭শে জুন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি করে এই রায় দেন। গতকাল পূর্ণাঙ্গ রায় লেখা শেষে আপিল বিভাগের বিচারিক শাখা রেজিস্ট্রি ডাকযোগে রায়ের কপি জামালপুরের কেন্দ্রীয় কারাগার বরাবর পাঠানো হয়। ওইদিন লিগ্যাল এইডের আবেদনের পক্ষে ছিলেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন এবং আজমতের পক্ষে ছিলেন, আইনজীবী জয়ন্ত কুমার দেব।
আদালত বলেন, রাষ্ট্রপতির ক্ষমার পরেও আজমতকে আবার জেলে পাঠানো অযৌক্তিক ও অপ্রত্যাশিত। সাজা মওকুফ হওয়া আসামি একই মামলায় আবার কেন গ্রেপ্তার হলেন, এ দায় কার? এমন প্রশ্নের জবাবে জামালপুর আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি নির্মল কান্তি ভদ্র বলেন, এর জন্য দায়ী আসামিপক্ষ। তাদের অবহেলার কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে। মুক্তির বিষয়টি আগেই তাদের অবহিত করার দরকার ছিল। কিন্তু তারা সেটা করেনি।
পরে আজমতের আইনজীবী জয়ন্ত কুমার দেব সাংবাদিকদের বলেন, আজমত আলী মুক্তির পর লিভ টু আপিলের বিষয়ে আর খোঁজখবর রাখেননি। এছাড়া, কেউই আর রাষ্ট্রপতির আদেশের বিষয়টি উল্লেখ করেনি। সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কার্যালয়ের সমন্বয়ক রিপন পৌ স্কু বলেন, আজমত আলীর মেয়ে বিউটি খাতুনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড তার পক্ষে রিভিউ আবেদন করেন। আবেদন পর্যালোচনা সাপেক্ষে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যানের নির্দেশে আপিল বিভাগে রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদন দায়ের করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরপর লিগ্যাল এইড তার পক্ষে রিভিউ আবেদন করে এবং আপিল বিভাগ দ্রুত মুক্তির রায় দেন। আশা করি আজকের মধ্যেই কারাগারে রায়ের কপি পৌছে যাবে ।
২০১৮ সালের ২৫শে অক্টোবর একটি জাতীয় দৈনিকে ‘রাষ্ট্রপতির ক্ষমার পরেও ৯ বছর কারাগারে’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমায় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন স্কুলশিক্ষক আজমত আলী। উচ্চ আদালতের রায়েও তিনি খালাস পান। কিন্তু মুক্তি পাওয়ার ১৩ বছর পর আবার সে মামলার কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। সেই থেকে ৯ বছর ধরে কারাগারে আছেন এই বৃদ্ধ। জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার তারাকান্দি এলাকার পাখিমারা গ্রামের ইজ্জত উল্ল্যা সর্দারের ছেলে আজমত আলী। টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার ঘোড়ামারা এলাকার ভেঙ্গুলা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন তিনি। ১৯৮৭ সালের ১লা এপ্রিল জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এলাকার কলিম উদ্দিনের ছেলে রেজাউল করিম নিহত হন। এই ঘটনায় আজমত আলীকে আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়। এ মামলায় ১৯৮৯ সালের ৮ই মার্চ জামাল পুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালত তাকে যাবজ্জীবন সাজা দেন। বিচারিক আদালতের সাজার রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন আজমত আলী। একই সময় তিনি রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমার জন্যও আবেদন করেন। আপিল বহাল থাকার সময় রাষ্ট্রপতির ক্ষমায় ১৯৯৬ সালের ২১শে আগস্ট জামালপুর কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। আবার ২০০৫ সালের ২রা মার্চ হাইকোর্টের রায়েও তিনি খালাস পান। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ, যার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ২০০৮ সালের ২০শে ফেব্রুয়ারি আসামিকে (আজমত আলী) নিম্ন আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন। ২০০৯ সালের ২৯শে অক্টোবর গ্রামের বাড়ি থেকে আজমতকে গ্রেপ্তার করে নিম্ন আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। সেই থেকে কারাগারে আছেন তিনি। ২০১০ সালের ১১ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষের আপিলে আসা রায়ে হাইকোর্টের রায় (খালাস) ও আদেশ রদ করে নিম্ন আদালতের রায় (যাবজ্জীবন) ও আদেশ বহাল রাখা হয়।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর