সিদ্ধ চাল রপ্তানির বাজার খুলছে ফিলিপাইনে। বাংলাদেশের চাল কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে তারা। গতকাল সচিবালয়ে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ফিলিপাইনের সরকারের পক্ষে একটি প্রতিনিধি দল চাল কেনার আগ্রহের কথা জানায়। এ সময় চাল রপ্তানিকারকরাও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এবার বাংলাদেশে চালের উৎপাদন, বিশেষ করে বোরোর উৎপাদন বেশি হয়েছে। বিগত কয়েকটি সিজন আউশ-আমনে এক কোটি ৪০ লাখ টন টার্গেট ছিল, উৎপাদন হয়েছে এক কোটি ৫৩ লাখ টন। এখন আমাদের অনেক মিলার-ব্যবসায়ীর গুদামে যথেষ্ট চাল রয়েছে। এবার বোরোতে উৎপাদন ভালো হওয়ায় অস্বাভাবিকভাবে চালের দাম কমে যায়।
আমার বলতে কোনো দ্বিধা নাই, এ মুহূর্তে চালের দাম খুবই কম। এজন্য আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। আমাদের কৃষক-চাষিরা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না। ধান চাষাবাদ করে তাদের কোনো লাভ হচ্ছে না। এই পরিপ্রেক্ষিতে সরকার কিছু চাল বিদেশে রপ্তানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বলেন, ফিলিপাইন থেকে একটি পার্টি এসেছে। তারা চালের আমদানিতে সে দেশের সরকারকে সহযোগিতা করেন। দেশটির সরকারও বলছে, তারা জি-টু-জি (সরকার-টু-সরকার) মাধ্যমে চাল কিনতে পারে। তারা কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন মিলে গেছে, মান দেখেছে। তারা বলেছে, বাংলাদেশে চালের গুণগত মান ভালো। কৃষিমন্ত্রী বলেন, ফিলিপাইনের মানুষ সিদ্ধ চাল খায়। সেটাও আমাদের জন্য ফেভারেবল। কাজেই দেশটিতে সহজেই চাল বিক্রি করা যাবে। আমাদের কিছু মিলারের সাথে আলাপ-আলোচনা করেছে, তারা মনে করেছে দামও মোটামুটি রিজান্যাবল। ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড তো মূল রফতানিকারক, তাদের দামের তুলনায় আমাদের চালের যে কোয়ালিটি তাতে দাম মোটামুটি ভালো হবে। ফিলিপাইন কোন ধরনের চাল নিতে চায়- জানতে চাইলে চাল রফতানিকারক ও রশিদ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুর রশিদ বলেন, মাঝারি ধরনের আটাশ ও ঊনত্রিশ চালের ডিমান্ড তাদের বেশি। সাথে সাথে হয়তো মিনিকেটও কিছু করা যেতে পারে। দামের বিষয়ে জানতে চাইলে- এ ব্যবসায়ী বলেন, তারা যে প্রাইস বলেছে, সরকার যদি সহায়তা না করে তা হলে তাদের প্রাইসের সঙ্গে সমন্বয় করা কঠিন হয়ে যাবে। কারণ অন্যান্য দেশে চালের দাম এখনও অনেক কম। দেশজুড়ে এখন বন্যা হচ্ছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এ বন্যা এমন কোনো বন্যা না। বাংলাদেশ বন্যা-খরার দেশ। আমরা ছোটবেলা থেকে পড়েছি, বন্যা আমাদের জন্য আশীর্বাদ, আবার খুব খারাপ হলে অভিশাপ।