× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

এরশাদের দল-সম্পত্তির কী হবে?

শেষের পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
১৬ জুলাই ২০১৯, মঙ্গলবার

জীবদ্দশায় আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রে ছিলেন তিনি। মৃত্যুর পরও তাকে নিয়ে আলোচনা চারদিকে। দলে-দলের বাইরে নানা প্রশ্ন। সেনাপ্রধান থেকে রাষ্ট্র প্রধান হয়ে উঠা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের হাতে গড়া জাতীয় পার্টির এখন কি হবে? তার রেখে যাওয়া সম্পদেরই বা কি হবে? শনিবার সকালে ৮৯ বছরের দীর্ঘ জীবনের ইতি টেনে জীবনাবসান হয় এরশাদের। আজ তার দাফনের কথা রয়েছে। এরশাদের দাফন নিয়ে ব্যস্ত নেতাকর্মীরা। কোথায় দাফন হবে এ নিয়ে ধোঁয়াশায় নেতাকর্মীরা। তাকে রংপুরে দাফন করতে নেতাকর্মীরা অনড়।
এরশাদের মৃত্যুর পর তার হাতে গড়া দলের ভবিষ্যৎ কী হবে এ প্রশ্ন এখন মানুষের মুখে মুখে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সেনাপ্রধান থেকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসা এরশাদের হাতে গড়া জাতীয় পার্টির ভবিষ্যৎ এখন অন্ধকারাচ্ছন্ন। এর কারণ, রাজনৈতিক দল হিসেবে জাতীয় পার্টি গড়ে উঠতে পারেনি। এরশাদের অবর্তমানে দলটি নেতৃত্ব সংকটে পড়বে। এছাড়া ক্ষমতার কাছাকাছি থাকা দলটির সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হলো নেতাকর্মীদের দলে ধরে রাখা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার  হোসেন এ বিষয়ে মানবজমিনকে বলেন, প্রথমতো জাতীয় পার্টি দুইভাগে বিভক্ত এটি   অনেকটা দৃশ্যমান। একটি অংশ রওশন এরশাদের সঙ্গে আছেন। আরেকটি এরশাদের ভাই জিএম কাদেরের পক্ষে। পার্টি চেয়ারম্যানের অবর্তমানে এখন নেতাকর্মীদের কেউ কেউ ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাবেন। এছাড়া সামনের জাতীয় নির্বাচনের আগে পরিস্থিতি বুঝে অনেকে পক্ষ বদল করবে। তিনি বলেন, সামনে জাতীয় পার্টি অস্থিত্ব সংকটে পড়বে। কারণ জাতীয় পার্টির কোনো আদর্শও নেই, দলটি ব্যক্তিকেন্দ্রিক কিছু লোকজন নিয়ে হয়েছিল। এদের কর্মীদের মধ্যে আর্দশিক কোনো অস্তিত্ব নেই। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে সেনা ছাউনি থেকে রাজনৈতিক দল সৃষ্টি করা যায় না। সেটা বাংলাদেশেই সম্ভব হয়েছে। জাতীয় পার্টি রাজনৈতিক কোনো দল নয়, সেটা রাজনৈতিক মঞ্চ হতে পারে ।

এদিকে, এরশাদ গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পর থেকেই জাতীয় পার্টির ভবিষ্যৎ নিয়ে নানামুখি আলোচনা চলছে। সর্বশেষ তার মৃত্যুর পর দাফন নিয়েই গত দুই দিনে কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি নেতারা। শনিবার জানানো হয়েছে ঢাকা এবং রংপুরে জানাজা ও শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মঙ্গলবার বনানীর সামরিক কবরস্থানে এরশাদকে দাফন করা হবে। এ সিদ্ধান্ত জানানোর পর পার্টির নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ। তারা বলছেন, এরশাদকে রংপুরে সমাহিত করতে হবে। রংপুর জাপার নেতাকর্মীরা গতকাল আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানিয়েছেন। এদিকে, গত দুই দিনেও এ বিষয়ে পার্টির পক্ষ থেকে স্পষ্ট কিছু জানানো হয়নি। এতে নেতাকর্মীদের মাঝে হতাশা ছড়িয়ে পড়েছে। দলীয় সূত্র জানিয়েছে, এরশাদের দাফনের পরই দলের নেতৃত্বের বিষয়টি সামনে আসবে। মৃত্যুর আগে ভাই জিএম কাদেরকে নিজের রাজনৈতিক উত্তরসুরী ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করে যান এরশাদ। এ নিয়ে এরশাদ পত্নী রওশান এরশাদ শিবিরে অসন্তোষ ছিল শুরু থেকে। এখন জিএম কাদের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে দলকে কতোদূর এগিয়ে নিতে পারেন সেটাই দেখার বিষয়। এদিকে, সংসদে বিরোধী দলের নেতার পদেও ছিলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তার মৃত্যুতে এ পদটি শুন্য হয়েছে। এ পদে কে আসবেন এটি নিয়েও পার্টিতে টানাপড়েনের আভাস মিলেছে। বিরোধী দলের উপ নেতা রওশন এরশাদকে বিরোধী দলের নেতার পদে  দেখতে চাইবেন তার পক্ষের নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে, দলের চেয়ারম্যান হিসেবে এ পদে জিএম কাদেররে রাখার পক্ষে অনেক নেতাকর্মী। এ অবস্থায় বিষয়টি কিভাবে সুরাহা হবে এটি একটি বড় প্রশ্ন।

এদিকে, উত্তরাধীকারীদের জন্য এরশাদ কী পরিমান সম্পদ রেখে গেছেন এবং এসব সম্পত্তির কি হবে এ নিয়েও নানা প্রশ্ন দলের ভেতরে-বাইরে। এরশাদের সম্পত্তির উত্তরাধিকারদের মধ্যে রয়েছেন প্রথম স্ত্রী রওশন এরশাদ,  ছেলে রাহগির আল মাহি (শাদ এরশাদ), দ্বিতীয় স্ত্রী বিদিশার ছেলে শাহতা জারাব (এরিক এরশাদ)। এছাড়া দুই পোষ্য সন্তানের জন্যও এরশাদ নিজের সম্পদের ভাগ দিয়ে গেছেন। দলীয় সূত্র জানিয়েছে, প্রত্যেক উত্তরাধিকারীর জন্য এরশাদ কিছু সম্পত্তি নির্ধারিত করে দিয়ে গেছে। এর মধ্যে স্ত্রী রওশন এরশাদ ও শাদ এরশাদের জন্য গুলশানে আলাদা ফ্ল্যাট, পালিত পূত্র আলমকে দিয়েছেন একটি ফ্ল্যাট। এছাড়া প্রেসিডেন্ট পার্কের ফ্ল্যাট, গুলশানের বাড়ি, দোকানসহ নগদ অর্থ ও ব্যাংক হিসাবে থাকা টাকা ট্রাস্ট করে রেখে গেছেন। এই ট্রাস্টের মাধ্যমে এরিকের ভরণ পোষণ হবে। রংপুরের কিছু সম্পত্তিও এই ট্রাস্টের অধীনে রেখে গেছেন এরশাদ। এছাড়া কাকরাইলের পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভবনটি তিনি পার্টির নামে লিখে দিয়ে গেছেন।  

এরশাদের সম্পত্তি দেখভালের দায়িত্ব পাওয়া ট্রাস্টের সদস্য হিসেবে রয়েছেন, ছোট পুত্র এরিক এরশদ, এরশাদের একান্ত সচিব অবসরপ্রাপ্ত মেজর খালেদ আক্তার, চাচাতো ভাই মুকুল ও তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর