চলে গেলেন অভিনেতা স্বরূপ দত্ত। বুধবার ভোরে প্রয়াত হয়েছেন সাতের দশকের সুদর্শন এই নায়ক। তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। বয়সের ভারে ন্যুজ হয়ে গিয়েছিলেন। হারিয়ে গিয়েছিল শারীরিক ক্ষমতা। বিছানাতেই কাটছিল দিন। দীর্ঘ রোগভোগের পর যমে-মানুষের লড়াইয়ে হার মানলেন শেষ পর্যন্ত। গত শনিবার তাকে ভর্তি করা হয়েছিল মল্লিকবাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
রেখে গিয়েছেন স্ত্রী ও পুত্রকে। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে গত শনিবার বালিগঞ্জের বাড়িতে পড়ে গিয়ে সংজ্ঞাহীন হয়ে যান তিনি। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ভর্তি করা হয়েছিল হাসপাতালে। তিনদিন ভেন্টিলেশনে থাকার পরে শেষ হলো লড়াই। হাসপাতাল থেকে বর্ষীয়ান অভিনেতার দেহ নিয়ে যাওয়া হয় বালিগঞ্জ প্লেসে তার বাড়িতে। শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে কেওড়াতলা মহাশ্মশানে। বিশিষ্ট এ অভিনেতার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ টলিউড। স্বরূপ দত্তের জন্ম ১৯৪১ সালের ২২শে জুন। ১৯৫৮ সালে ম্যাট্রিকুলেশন সাউথ পয়েন্ট হাই স্কুল থেকে। এর পর আই এ উত্তীর্ণ হন বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দির থেকে। সেন্ট জেভিয়ার্স থেকে অর্থনীতির এই স্নাতক অভিনয়ের পেশা বেছে নিয়েছিলেন নিজের প্যাশনে। স্কুলজীবনেই আলাপ উৎপল দত্তের সঙ্গে। সেই প্রভাব থেকে গিয়েছিল জীবনভর। তপন সিংহের পরিচালনায় ‘আপনজন’ সিনেমায় তার অভিনয় মন জয় করেছিল দর্শক ও সমালোচক, দু’ মহলেরই। এরপর ‘পিতাপুত্র’, ‘মা ও মেয়ে’, ‘এখনই’, ‘সাগিনা মাহাতো’, ‘অন্ধ অতীত’, ‘স্বর্ণ শিখর প্রাঙ্গণে’ সিনেমায় কাজ তাকে আলাদা জায়গা করে দেয় বাংলা ছবির ইন্ডাস্ট্রিতে । ‘উপহার’ সিনেমায় জয়া বচ্চনের (তখন ভাদুড়ি) সঙ্গে তার অভিনয় তাকে পরিচিতি দেয় জাতীয় সিনেমার মঞ্চে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চরিত্রাভিনেতার ভূমিকায় সেভাবে পাওয়া যায়নি তাকে। শক্তিশালী অভিনয় তুরূপের তাস হলেও তার নাম ধরা পড়েনি প্রথম সারির ম্যাটিনি আইডলদের পাশে। তিনি রয়ে গেলেন কিছু সিনেমার সুদর্শন নায়ক হিসেবেই। তবে সাদা কালো বাংলা সিনেমা নিয়ে আলোচনা তাকে ছাড়া অসম্পূর্ণ।