বগুড়ার শেরপুরে রাতের আঁধারে নিজ শোবার ঘরে এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর গলা কেটে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এরপর গুরুতর আহত অবস্থায় ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে শেরপুর উপজেলার ৮নং সুঘাট ইউনিয়নের জয়লা-গুয়াগাছি গ্রামের বাড়িতে মাটির ঘরের সিঁধ কেটে রাতের আঁধারে এক স্কুলছাত্রীর নিজ শোবার ঘরে ঢুকে এমন ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে। গত বুধবার ১৭ই জুলাই দুপুরে শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) বুলবুল ইসলাম অভিযোগ পাবার পর ওই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সেই সঙ্গে ধর্ষণের মতো ওই জঘন্য ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে জয়লাজুয়ান গ্রামের আবদুল মতিনের ছেলে মো. শাকিল আহম্মেদ (১৮) নামের এক বখাটে যুবককে গ্রেপ্তার করেছে।
স্থানীয়রা জানায়, শেরপুর উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের জয়লা-গুয়াগাছি গ্রামের দিনমজুর কামরুল ইসলাম সেখের মেয়ে গুয়াগাছি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী (১৫) প্রতিদিনের দিনের ন্যায় মঙ্গলবার রাতে পড়াশোনা শেষে ঘুমিয়ে পড়ে। এরপর রাত অনুমান ১টার দিকে ৩-৪ জন দুর্বৃত্ত স্কুলছাত্রীর ঘরের মাটির নিচে সিঁধ কেটে সেখান দিয়ে ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় স্কুলছাত্রীর ঘুম ভেঙে যায়। এ সময় অজ্ঞাত নামা দুর্বৃত্তরা ওই মেয়েকে ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মুখে কাপড় দিয়ে হাত-পা বেঁধে ফেলে।
এরপর যুবকরা পালাক্রমে তাকে ধর্ষণ করে। এসময় স্কুলছাত্রীটি চিৎকার দেয়ার চেষ্টা করলে দুর্বুত্তরা তাদের হাতে থাকা ধারালো চাকু দিয়ে ওই স্কুলছাত্রীর গলা কেটে হত্যার চেষ্টা চালায়। এর মাঝে বাড়ির অন্য ঘরে ঘুমিয়ে থাকা পরিবারের লোকজন জেগে উঠায় দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে পরিবারের পক্ষ থেকে ঘটনাটি শেরপুর থানা পুলিশকে জানানো হয়। এরপর তাকে উদ্ধার করে শেরপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শেরপুর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক ডা. মাহজাবিন আক্তার জানান, ওই স্কুলছাত্রীর গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত ও ধারালো চাকুর কাটা দাগ আছে। এছাড়া ধর্ষণের বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বলা যাবে।
এদিকে স্কুল ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া শাকিল বেশ কিছুদিন যাবত মেয়েটি স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। এমনকি নানা কায়দায় তাকে প্রেম প্রস্তাব দেয়া হয়। কিন্তু ওই বখাটে যুবকের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সে এমন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ তোলে।
শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) বুলবুল ইসলাম এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বখাটে শাকিলকে গ্রেপ্তারের কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জঘন্য ওই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে শেরপুর থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।