গাইবান্ধার বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। সবগুলো নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রতিদিন প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। গাইবান্ধার দুটি উপজেলা বাদ দিয়ে ৫টি উপজেলার ৫ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি। গতকাল রাত থেকে যমুনা ও ঘাঘট নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে আজও রেল লাইনে পানি ওঠায় দুদিন থেকে উত্তরের সঙ্গে গাইবান্ধার রাজধানীর ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ আছে।
শহরের জেলা প্রশাসকের বাস ভবন, মেয়রের বাড়িসহ সব বাড়ি ও ঘরের মধ্যে এখন পানি। রাস্তায় বের হওয়া যাচ্ছে না। চালানো যাচ্ছে না মোটরসাইকেল বা অন্যকোনো যানবাহন।
ফলে লোকজন তাদের স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছে না। গাইবান্ধার সাত শতাধিক স্কুল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এসব স্কুল আশ্রয় কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহার করলেও সেগুলোর মধ্যে অনেক স্কুলেও পানি উঠেছে। গবাদি পশু হাঁস-মুরগি নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে এলেও শান্তি নেই। বেঞ্চ উঁচু করে কোনো মতে বসে থাকলেও মলমূত্র ত্যাগের সমস্যা ও খাবার পানির সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে।
বন্যা আর এখন গ্রাম, ও চরাঞ্চলে নেই। শহরের ও গ্রামের সবর্ত্র থৈ থৈ পানি। পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগের পাশাপাশি দুর্ভোগ বেড়েছে গবাদি পশুর। এইসব এলাকার মানুষের প্রধান সম্পদ গবাদিপশু রক্ষায় তারা বিভিন্ন উঁচু জায়গায়, বাঁধে এবং মাচা করে রাখছে তাদের গরু-ছাগল। মানুষ ও গরু-ছাগল একাকার হয়ে একই জায়গায় রাত দিন কাটাচ্ছেন। তার ওপর রয়েছে চোর ডাকাতের উৎপাত। পলের পুঞ্জ মাঠ ডুবে যাওয়ায় খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে গবাদিপশুর। এদিকে বাদিয়াখালী এলাকায় রেল লাইন ডুবে যাওয়ায় বুধবার দুপুর থেকে উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে সকল জেলার ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। ত্রাণ বিতরণের কথা শোনা গেলেও দুর্গতরা অভিযোগ করে বলেন আমরা খেয়ে না খেয়ে কোনমতো মানবেতর জীবন যাপন করছি কিন্তু কেউ আসে না। রিলিফ তো দূরের কথা খোঁজও করতে আসে না। তাই চরাঞ্চলের প্রায় ৪ শতাধিক পরিবার তাদের ঘরবাড়ি ভেঙে নিয়ে নৌকায় বসবাস করছে। আবার কেউ অন্যত্র উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে।