পদ্মা সেতুর সঙ্গে শিশুর মাথা কাটার কোনো সম্পর্ক নেই। এটি সম্পূর্ণ গুজব বলে জানিয়েছেন নেত্রকোনা জেলার পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী। আজ দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, শহরের নিউটাউন এলাকায় অনন্তপুকুর পাড়ে ছেলে ধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত যুবক রিকশাচালক রবিন। সে একই এলাকার ভারাটিয়া রিকশা চালক রহিছ উদ্দিনের সাত বছরের শিশু সজীবকে হত্যা করেছে। রবিনের কাছে ওই শিশুর মাথা পাওয়া গেছে। শিশুটির শরীরের বাকি অংশ কাটলি এলাকার মোশারফ হোসেনের নির্মাণাধীন ভবনের টয়লেট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এর সঙ্গে ছেলে ধরা বা পদ্মা সেতুতে কাটা মাথা লাগবে- এরকম গুজবের কোন সম্পর্ক নেই।
পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী বলেন, শিশুর কাটা মাথা উদ্ধারের বিষয়টি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পূর্বের কোন জেদ বা বিকৃত মানসিকতা থেকেই শিশু সজিবের সঙ্গে নির্মম ও বর্বরোচিত এ ঘটনা ঘটেছে। শিশু সজিবের গলা কাটার বিষয়টি শুধুই একটি হত্যাকাণ্ড। এ বিষয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
পুলিশ সুপার জানান, এ ঘটনায় থানায় দু’টি মামলা হয়েছে। একটি মামলায় সজিবের বাবা বাদী হয়ে গণপিটুনিতে নিহত রবিনকে আসামি করেছেন। শিশু হত্যাকারী রবিনকে গণপিটুনিতে হত্যা দায়ে পুলিশ বাদী হয়ে অপর মামলাটি করেছে। এতে অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়। আজ লাশ দুটির ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।
গণপিটুনিতে নিহত রবিন সম্পর্কে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, রবিন পেশায় একজন রিকশা চালক এবং মাদকাসক্ত। শিশু সজিবের পিতা রইছ উদ্দিনও পেশায় একজন রিকশা চালক। শিশু সজিবের পিতা রইছ উদ্দিন এবং রবিন উভয়েই পূর্ব পরিচিত। তারা একই এলাকার বাসিন্দা।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের বারহাট্টা রোড এলাকার সুইপার কলোনির আশপাশে শিশু সজিবের কাটা মাথা ব্যাগে নিয়ে যাচ্ছিলো রবিন। এসময় রবিনকে চোর সন্দেহ করে ধাওয়া করে এলাকাবাসী। ধাওয়া দিয়ে নিউটাউন অনন্তপুকুর পাড়ে ব্যাগ বহনকারী রবিনকে আটক করা হয়। এসময় তার ব্যাগে শিশুর কাটা মাথা পাওয়া গেলে উত্তেজিত জনতা তাকে গণপিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় রবিন। এই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে দেশব্যাপি চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।