কিশোরগঞ্জের নিকলীতে প্রায় ছয় মাস যাবৎ উপজেলা পোস্ট অফিস ও কৃষি ব্যাংক শাখাটি পানিবন্দি হয়ে রয়েছে। মুখ থুবড়ে পড়েছে কার্যক্রম। প্রতিষ্ঠান দুটিতে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাশাপাশি চরম ভোগান্তিতে সেবা গ্রহীতারা।
জানা যায়, নিকলী উপজেলা সদরের কামারের পুকুরটি এক বছর পূর্বে ভরাট করে মালিক পক্ষ। এটির পশ্চিম পাড়ে নিজস্ব ভূমিতে উপজেলা পোস্ট অফিস ও দোতলা একটি ভবনে ভাড়ায় নেয়া বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের নিকলী শাখা। নালা ব্যবস্থা না থাকায় কয়েকটি পাড়ার পানি প্রতিষ্ঠান দুটির সামনের সড়কে জমা হয়। সড়কটির চারদিক বর্তমানে উঁচু ভূমিতে পরিণত। সামান্য বৃষ্টিতেই জমে থাকা পানিতে বন্দি হয়ে থাকে অতীব জরুরি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান দুটি।
গত ছয় মাস ধরে চলছে এই জলাবদ্ধতা। এই সড়কটি উপজেলা সদরের পশ্চিম অংশের কয়েক হাজার মানুষের চলাচলের পথও। পশ্চিম গ্রামের পুকুরপাড় জামে মসজিদে যাতায়াতেরও একমাত্র পথ। জলাবদ্ধতার কারণে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী, মুসল্লি ও প্রতিষ্ঠান দুটির কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
নিকলী শহীদ স্মরণিকা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী হাজরা মোমেন প্রভা জানায়, এই রাস্তাটি দিয়ে স্কুলে যেতে কাদা আর ময়লা পানিতে কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। ঘুরপথে সময় ও বেশিপথ হেঁটে স্কুলে যাই। মুসল্লিদের অভিযোগ, ময়লা পানির কারণে অনেকেই নিয়মিত জামাতে নামাজ আদায় করতে পারছেন না। কৃষি ব্যাংকের গ্রাহক আ. জলিল বলেন, ব্যাংক ও পোস্ট অফিস দুটি দ্বীপ এলাকায় পরিণত হয়েছে। ময়লার ভাগার মাড়িয়ে কাজ করতে হয়। বয়স্কভাতা প্রাপ্ত অনেক মুমূর্ষু ব্যক্তি হামাগুড়ি দিয়ে ব্যাংকটির সেবা নিতে হচ্ছে। ময়লা পানিতে সর্বাঙ্গ কাদাজলে একাকার এই অসহায়দের দেখে মায়া লাগে। তিনি আরো বলেন, যেসব সেবার বিকল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে, বেশি খরচ হলেও এই কাদাজলের কারণে মানুষ সেদিকেই ঝুঁকছে এখন।
নিকলী উপজেলা পোস্টমাস্টার (ভারপ্রাপ্ত) মো. নুরুজ্জামান ভূঁইয়া জানান, নিত্য কাদাজল পেরিয়ে অফিসে যেতে আসতে পায়ে ঘা হয়ে গেছে। এখন ১০ ফুট রাস্তা রিকশায় চড়ে কোনো রকমে অফিসের সীমানায় পৌঁছি। কৃষি ব্যাংকটির নিকলী শাখা ব্যবস্থাপক মো. সাদিকুর রহমান জানান, দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থা চলছে। আমরা ঊর্ধ্বতনকেও জানিয়েছি। ভবন মালিক পক্ষকেও বলছি। শিগগিরই এই সমস্যার সমাধান না হলে আমরা অন্য ভবন দেখবো। নিকলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার এ প্রতিনিধিকে বলেন, আমি একাধিকবার পরিদর্শন করেছি। রাস্তাটির পাশে নালা তৈরীর জায়গা নেই। মালিক পক্ষও জায়গা ছাড়ছে না। দ্রুত ব্যস্থাগ্রহণে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।