× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মধুপুরে বেগুন চাষে শাহিনুরের ভাগ্যবদল

বাংলারজমিন

মো. নজরুল ইসলাম, মধুপুর (টাঙ্গাইল) থেকে
২০ জুলাই ২০১৯, শনিবার

টাঙ্গাইলের মধুপুরে বেগুন চাষ করে ভাগ্যবদল করেছেন এক সময়ে দিন না চলা শাহিনুর বেগম। উপজেলার নাগবাড়ী (পশ্চিমপাড়) গ্রামের আবদুল জলিলের স্ত্রী শাহিনুর বেগম এখন অনেকের কাছে ঈর্ষণীয়। স্বামী-স্ত্রী, দুই ছেলে, এক মেয়ে ও শ্বশুর-শাশুড়ির সংসারে সচ্ছলতা ফিরে এসেছে। তাকে আর পেছনে ফিরেও তাকাতে হয় না। পেছনের রহস্য খুঁজে জানা গেল, বেগুন চাষ করে সচ্ছলতা ফিরে এসেছে তার ৭ সদস্য বিশিষ্ট সংসারে। কয়েক বছর আগেও স্বামী আবদুল জলিল দিনমজুরের কাজ করে যা আয় করতো তা দিয়ে সংসার চলতো না। অর্থের অভাবে সংসার চালানো তার পক্ষে খুবই কষ্টের ব্যাপার ছিল। আবদুল জলিলের পক্ষে এত বড় সংসার ও ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ জোগানো অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।
কীভাবে সংসারের সচ্ছলতা ফিরে আসবে, এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে যায় শাহিনুর বেগম। তবে, স্বামী-স্ত্রী মিলে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর প্রবল ইচ্ছা ও চেষ্টা ছিল তাদের। চেষ্টা থাকা সত্ত্বেও অর্থের অভাবে কোনো কিছু করতে পারছিলেন না তারা। এমতাবস্থায় বাংলা-জার্মান সম্প্রীতি (বিজিএস)-এর মধুপুর শাখার ক্রেডিট অফিসার হাদিউজ্জামান পাশে এসে দাঁড়ান। ২০১৭ সালের ওই সময় বিজিএস’র সহায়তায় শাহিনুর বেগম সন্ধাফুল কেন্দ্রের সদস্য হয়ে প্রথমে ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে শুরু করেন নিজের মতো কিছু করার। স্বল্প পরিসরে নিজের ভিটা জমিতে বেগুন চাষ শুরু করে সফলতার মুখ দেখা শুরু করেন। বছর শেষে মোটামুটি ভালো আয় হয় দেখে খুশি হয়ে, দ্বিতীয় দফায় ৪০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে বেগুন চাষ করে সচ্ছলতার মুখ দেখেন। বর্তমানে বিজিএস থেকে ৭০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে বেগুন চাষ আরো সম্প্রসারিত করেছেন। বর্তমানে তিনি এক একর জমিতে বেগুন চাষ করছেন। ভালোভাবে সংসার চালিয়ে ছেলেমেয়েকে মধুপুর মাদ্রাসায় লেখাপড়া করাচ্ছেন। সাহস আর ইচ্ছা শক্তির বলে দারিদ্র্যকে জয় করে সংসারে এনেছেন সচ্ছলতা।
স্বামী আবদুল জলিল জানান, তার ছিল অভাবের সংসার। এক সময়কার টানাটানির সংসারে স্ত্রী ও তার যৌথ চেষ্টার ফলে সংসারে সচ্ছলতা ফিরে এসেছে। তাদের ভাষ্যমতে, বেগুন বেচা টাকা দিয়ে তারা একটি বাছুরসহ গাভী ক্রয় করেন। বর্তমানে তাদের ২টি গাভী, ১টি ষাঁড় গরু ও ১টি বাছুর গরু রয়েছে। তাদের এখন বাৎসরিক গড় আয় প্রায় আড়াই থেকে ৩ লাখ টাকা। আলাপকালে শাহিনুর বেগম জানান, অভাবের কারণে ছেলেমেয়েদের দু’বেলা খাবার খাওয়ানো কষ্টের ছিল। আর্থিক ঋণ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে বাংলা-জার্মান সম্প্রীতি (বিজিএস) সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সাহস যুগিয়েছে। বাংলা-জার্মান সম্প্রীতি (বিজিএস)এর মধুপুর শাখা ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম জানান, বাংলাদেশ সরকারের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে বেসরকারি সংস্থাগুলো দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে মানুষের সার্বিক উন্নয়নে যেভাবে কাজ করে যাচ্ছে বাংলা-জার্মান সম্প্রীতি (বিজিএস) ও তার সে চেষ্টায় অবিচল।
তিনি আরো বলেন, শাহিনুর বেগমকে অনুকরণ করে যদি সমাজের দরিদ্র মানুষগুলো আত্মকর্মমুখী হয় তাহলে সমাজের সাফল্য অনিবার্য। মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান জানান, বাড়ির গৃহিণীরা যদি বিভিন্ন সবজি চাষে উদ্যোগী হন, তবে তাদের কৃষি বিভাগ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। তারা যদি আমাদের পরামর্শ নিয়ে কৃষি কাজ করেন, তাহলে আরো লাভবান হবেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর