× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

আন্দোলনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা /শেষ হলো জাবি’র উন্নয়ন প্রকল্প আলোচনা

বাংলারজমিন

জাবি প্রতিনিধি
২০ জুলাই ২০১৯, শনিবার

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা উন্মুক্ত আলোচনা অনেকটা ‘অপ্রত্যাশিত’ভাবেই সমাপ্ত হয়েছে। অধিকতর এই উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ক্যাম্পাসের প্রাকৃতিক পরিবেশ বিনষ্ট হবে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ঐক্যমঞ্চসহ কয়েকটি ছাত্র-সংগঠনের আপত্তির মুখে এই উন্মুক্ত আলোচনা সভা আহ্বান করে প্রশাসন।
আলোচনা সভায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বক্তব্য চলাকালে উত্তেজনা ও উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় শুরু হলে ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বিব্রতবোধ করে আলোচনার ইতি টানেন।
গত বুধবার বিকাল ৪ টা থেকে শুরু হওয়া এ আলোচনা শেষ হয় রাত ৯ টায়। আলোচনায় অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের মহাপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন কমিটির প্রধান স্থপতি আহসান উল্লাহ মজুমদার।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য যে বাজেট এসেছে তা অবশ্যই বাস্তবায়নের দাবি রাখে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক প্রাকৃতিক পরিবেশের বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনায় রাখতে হবে। যেহেতু মহাপরিকল্পনার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো পক্ষের কাছেই স্পষ্ট নয় তাই উক্ত পরিকল্পনাটি অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের দাপ্তরিক ওয়েবসাইটে আপলোড করতে হবে।’ সেই সাথে তিনি মহাপরিকল্পনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনার করে তিন মাস পরে প্রকল্পটির কাজ শুরু করার দাবি করেন।

তবে আলোচনার শেষ পর্যায়ে ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম  প্রকল্পের কাজ স্থগিত করা সম্ভব নয় বলে জানান। সেই সঙ্গে তিনি ছেলেদের ও মেয়েদের হলের জন্য নির্ধারিত স্থানেই হল হবে ঘোষণা দেন। এ সময় হল নির্মাণের স্থান পুনঃনির্ধারণের দাবি জানিয়ে আসা শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিস্ময় প্রকাশ করে আন্দোলনের ঘোষণা দেন। এদিকে আলোচনার একপর্যায়ে, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন এর বক্তব্যকে খণ্ডন করতে গিয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে তোপের মুখে পড়েন পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আশরাফুল আলম। নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস এমন হঠকারী মন্তব্যের প্রতিবাদ করলে তার সঙ্গেও রূঢ় আচরণ করেন আশরাফুল আলম। এরপর ভিসি তাকে থামিয়ে দিয়ে কোনো কথা বলতে নিষেধ করেন। ভিসি সমাপনী বক্তব্যে ‘প্রকল্পের কাজ চলবে’ ঘোষণা দিলে একজন শিক্ষক দাঁড়িয়ে আপত্তি জানান। এই সময়েও আশরাফুল আলম মাইক ছাড়া ফের উচ্চবাচ্য শুরু করেন। পরে ভিসি-পন্থি অধ্যাপক বশির আহমদ ও  ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল হাসান তাকে থামিয়ে দেন। তার এমন উদ্ভট ও হঠকারী আচরণে তাৎক্ষণাৎ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম অসম্পন্ন রেখে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন। এ বিষয়ে ভিসি-পন্থি আওয়ামী শিক্ষকদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক বশির আহমেদ বলেন,  ‘কে কখন কী বলবে সেটা তো আমরা বুঝি না। তবে তার এই বক্তব্য আপত্তিকর ছিল। ব্যক্তিগতভাবে কোনো শিক্ষককে এভাবে আক্রমণ করা উচিত হয়নি।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে বাধায় শিক্ষার্থীরাও
উন্নয়নের মহাপরিকল্পনা নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে ছাত্রলীগের বাধার মুখে পড়েছেন শিক্ষার্থীরাও। সভার একপর্যায়ে  ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সদস্য রাকিবুল রনির বক্তব্যের সময় হট্টগোল করতে থাকেন শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক তারেক হাসান, আফ্‌ফান হোসেন আপন ও সমাজ সেবা বিষয়ক সম্পাদক কানন সরকার সহ বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী। তারা রনিকে ‘জুনিয়র, এই ছেলে এত কথা বলে কেন?’ ইত্যাদি বলে উচ্চবাচ্য, কটুক্তি ও ব্যঙ্গ করতে থাকেন। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও  শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানা এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন। এ সময় ভিসি বিব্রতবোধ করে উপস্থিত সকলের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন। ভিসি নেতাদের থামিয়ে বলেন, আমি এখানে উপস্থিত থাকতে তোমরা কাউকে কথা বলা থামিয়ে দিতে পারো না। যদি তার ভুল হয় বা সীমা ছাড়িয়ে যায় তবে আমি নিজেই তাকে বসিয়ে দিবো। তাদেরকে তো আমি কথা বলার জন্যই ডেকেছি।’
অন্যদিকে সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমানের বক্তব্য চলাকালেও ছাত্রলীগ নেতারা তাকে থামিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন।’ এই সময় প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের একজন অধ্যাপককে আশিকুর রহমানকে ব্যঙ্গ করতে দেখা যায়।
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানা বলেন, ‘আলোচনা সভায় সকল সংগঠনই হট্টগোল করেছে। সেখানে ঢালাওভাবে ছাত্রলীগকে দায়ী করা সমীচীন হবে না।’
আন্দোলনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
এদিকে গাছকাটা  ও মাহপরিকল্পনা নিয়ে প্রশাসনের অনড় অবস্থানের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ঐক্যমঞ্চ। বেলা ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের টারজান পয়েন্ট থেকে এই বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন রেজিস্ট্রার ভবনে গিয়ে শেষ হয়।
আন্দোলন নিয়ে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা বলেন,‘ আমরা কোনোভাবেই উন্নয়নের বিরুদ্ধে নই। পরিকল্পিতভাবেই উন্নয়ন চাই। আমাদের যে মহাপরিকল্পনা দেখানো হয়েছে তা অপরিকল্পিত। এই প্ল্যান বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে দেয়া হউক। রেজিস্ট্রার গ্র্যাজুয়েট, প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে একটি গ্রহণযোগ্য পরিকল্পনা গ্রহণ করাই আমাদের দাবি।’
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর