ভৈরবে এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অন্ধ ভিক্ষুকের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। থানা পুলিশের এএসআই মাজহারুল হকের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। গত মঙ্গলবার বিকালে মাদকের অভিযোগে শহরের পঞ্চবটি এলাকা থেকে জুয়েল নামে এক রিকশা চালককে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। জুয়েল জোসনা বেগম নামে এক অন্ধ ভিক্ষুকের সম্পর্কে নাতি হয়। পরে জুয়েলকে ছাড়িয়ে নিতে ভিক্ষুকের কাছ থেকে ১৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে বলে দাবি ভুক্তভোগী পরিবারের। জানা গেছে, পুলিশের এএসআই মাজহারুল হক রিকশাচালক জুয়েলকে ধরার পরে থানা হাজতে না রেখে গোপনে রান্নাঘরের একটি কক্ষে তাকে আটকে রাখা হয়। পরে তার স্বজনদের খবর দেয়া হয়। খবর পেয়ে স্বজনরা এলে তাদের কাছে জুয়েলকে ছাড়িয়ে নিতে ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে বলে দাবি করে এএসআই মাজহারুল হক।
তার কথামতো টাকা না দিলে ৫২ পিস ইয়াবা দিয়ে চালান দিবে বলে স্বজনদের জানান তিনি। জুয়েলের মা জরিনা বেগম জানান, পরে বিষয়টি জানতে পেরে তিনি এবং তার মা অন্ধ ভিক্ষুক (জুয়েলের নানি) জোসনা বেগম থানার পেছনে এএসআই মাজহারুল হকের সঙ্গে দেখা করেন। তারা পুলিশ সদস্যের হাতে-পায়ে ধরে জুয়েলকে ছেড়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু এতে তার মন গলেনি। অবশেষে জুয়েলকে ছাড়িয়ে নিতে রাত ৯টার দিকে অন্ধ ভিক্ষুক নানি জোসনা বেগম তার ভিক্ষাবৃত্তির জমানো ৫ হাজার টাকা ও ঘরের জিনিসপত্র বিক্রি করে মোট ১১ হাজার টাকা হাতে তুলে দিলে এবং দুই হাজার টাকা পরের দিন দেয়ার কথা বলে জুয়েলকে ছাড়িয়ে নেয়। পরদিন জুয়েলের মা জরিনা বেগম তাদের কথামতো আরো ২ হাজার টাকা দিয়ে আসে। জানা যায়, এএসআই মাজহারুল হকের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক আটক বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। শহরের চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী এবং ছিনতাইকারীসহ অপরাধীদের আটকের পর টাকার বিনিময়ে ৩৪ ধারায় চালান দেয়া হয়েছে। ফলে অপরাধীরা সহজে বের হয়ে ফের বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এছাড়াও মাজহারুল হকের বিরুদ্ধে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে সিএনজি গাড়ি আটকে প্রতি মাসে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। যোগদানের পর থেকে তার এমন অপকর্মে পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। অভিযোগ অস্বীকার করে এএসআই মাজহারুল হক বলেন, জুয়েলকে সন্দেহজনক কারণে আটক করা হয়। পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। তাছাড়া জুয়েলের মা তাকে খুশি হয়ে দুই হাজার টাকা দেন বলে স্বীকার করেন তিনি। ভৈরব থানার ওসি মো. মোখলেছুর রহমান জানান, ঘটনার দু’দিন পর গতকাল রাতে বিষয়টি শুনেছেন। পরে মাজহারুলকে ডেকে হুঁশিয়ার করে দেয়া হয়েছে।