পাকুন্দিয়ায় নবম শ্রেণির ছাত্রী স্মৃতি আক্তার রীমার ময়নাতদন্ত রিপোর্টে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। গত বৃহস্পতিবার বিকালে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে স্মৃতি আক্তার রীমার লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ময়নাতদন্ত শেষে কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান জানান, ময়নাতদন্তে ধর্ষণের সুস্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে।
তার পায়ুপথ ও যৌনাঙ্গ রক্তাক্ত ছিল। এর আগে সকাল ১১টার দিকে পাকুন্দিয়া উপজেলার গাংধোয়ারচর গ্রামে নানাবাড়ির পাশে পুকুর পাড়ের একটি বরই গাছের ডালে ঝুলন্ত অবস্থায় কিশোরীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। নিহত স্মৃতি আক্তার রীমা হোসেনপুর উপজেলার জামাইল গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের মেয়ে এবং হোসেনপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী।
পারিবারিক সূত্র জানায় , জামাইল গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে সবার ছোট ছিল স্মৃতি আক্তার রীমা। রীমার দুই ভাইয়ের মধ্যে বড় ভাই মামুন ইতালী প্রবাসী এবং ছোট ভাই মাসুদ পলিটেকনিক শিক্ষার্থী। রীমার জন্মের কিছুদিন পর বাবা আবুল হোসেন মারা যান।
পিতৃহারা রীমাকে মা আঙ্গুরা খাতুনই সব সময় বুকে আগলে রাখতেন।
মায়ের সাথেই রীমা প্রায়ই বেড়াতে যেতো পাকুন্দিয়া উপজেলার গাংধোয়ারচর গ্রামে নানার বাড়িতে। এই আসা-যাওয়ার সুবাদে নানাবাড়ির পাশের চরফরাদী গ্রামের খুরশিদ উদ্দিনের ছেলে জাহিদের সঙ্গে পরিচয় হয় রীমার। এই পরিচয় থেকে রীমার সঙ্গে প্রেমের ফাঁদ পাতে জাহিদ। এই ফাঁদে পা দিয়ে অবশেষে লাশ হতে হলো ১৫ বছরে পা দেওয়া এই কিশোরীকে।
রীমার মামা মোস্তফা জানান, গত মঙ্গলবার বিকালে অসুস্থ নানীকে দেখতে মায়ের সঙ্গে নানাবাড়িতে এসেছিল রীমা। বুধবার রাতে জাহিদ রীমাকে ডেকে বাড়ি থেকে সামনের পুকুর পাড়ে নিয়ে যায়। পরে তার বন্ধু একই গ্রামের রুবেল মিয়ার ছেলে পলাশসহ আরও ২-৩ জন মিলে রীমাকে গণধর্ষণের পর হত্যা করে বরই গাছের ডালে ঝুলিয়ে রাখে। বড়ই গাছ থেকে ২০ হাত উত্তর পাশে ধর্ষণের আলামত হিসেবে কয়েকটি কনডম ও সেক্সুয়াল বড়ি পড়েছিল বলেও মোস্তফা জানান।
এদিকে, বৃহস্পতিবার সকালে লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আনোয়ার, পাকুন্দিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মফিজুর রহমান ও পরিদর্শক (তদন্ত) এস এম শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ ব্যাপারে পাকুন্দিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মফিজুর রহমান বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার রাতে নিহত স্কুলছাত্রীর লাশ তার পৈতৃক বাড়িতে দাফন করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের মা আঙ্গুরা খাতুন বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।