× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

স র জ মি ন মিটফোর্ড হাসপাতাল /ডেঙ্গু রোগীদের ভিড়

প্রথম পাতা

রাশিম মোল্লা
২০ জুলাই ২০১৯, শনিবার

দুপুর ২টা। মিটফোর্ড হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের কোনো ইউনিটেই সিট খালি নেই। শুধু তাই নয়, ওয়ার্ডের ভেতরেই ফ্লোরিং করেছেন অনেক ডেঙ্গু রোগী। কেউবা বারান্দায় বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কথা হয় ডেঙ্গু আক্রান্ত মোশাররফ হোসেনের স্বজনের সঙ্গে। মানিকগঞ্জের হরিরামপুর থেকে এসে গতকালই ভর্তি হয়েছেন। স্থানীয় হাসপাতালে বেশ কয়েকদিন চিকিৎসা নিয়েছেন। কোনো কাজ না হওয়ায় মিটফোর্ড হাসপাতালে এসেছেন তিনি।
কিন্তু সিট না পেয়ে হতাশ এই রোগী ও তার স্বজনরা।

মিটফোর্ড হাসপাতালের ২ নম্বর ভবন। এই ভবনের ৬ষ্ঠ তলায় মেডিসিন বিভাগের পুরুষ ওয়ার্ড। সরজমিন ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, ডেঙ্গু রোগীদের ভিড়। সব রোগীর শরীরেই স্যালাইন লাগানো। সিট না পেয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন ফ্লোরে। শরীর ব্যথায় অনেকে কান্নাকাটি করছেন। তাদের সেবা দিতে ইন্টার্নী চিকিৎসকরা রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। রোগীর ফাইল দেখতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। দায়িত্বরত চিকিৎসক মো. আহসান জানান, এই ওয়ার্ডে ৪৭ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন।  শুক্রবার ১০ জনের মতো নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এদের একজন প্লাটিলেটের পরিমাণ অনেক কম। ওই রোগীর অবস্থা এখন উন্নতির দিকে।  প্রত্যেক রোগীকে প্রতিদিন টেস্ট করতে হচ্ছে। এতো টেস্ট হাসপাতালে করা সম্ভব হচ্ছে না। একই ভবনের ৭ম তলায় মহিলা ওয়ার্ড (মেডিসিনি বিভাগ)। ওয়ার্ডের ভিতরে সিট না পেয়ে বাইরে গাদাগাদি করে চিকিৎসা নিচ্ছেন বহু রোগী। এখানে প্রচণ্ড গরম। ফ্যান আছে। কিন্তু চলে না। এই ওয়ার্ডের দায়িত্বরত নার্স জানান, তাদের ওয়ার্ডে বর্তমানে ২৫ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। গতকাল ৪ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।

স্মৃতি নামে এক ডেঙ্গু রোগীর মা হেনা বেগম জানান, মেয়েকে নিয়ে ৪ থেকে ৫ দিন ধরে হাসপাতালে। প্রতিদিন টেস্ট করতে হয়। কিন্তু মেডিকেলে টেস্ট করতে না দিয়ে বাইরের হাসপাতালের স্লিপ ধরিয়ে দেন চিকিৎসকরা। তিনি অভিযোগ করে বলেন, এই পর্যন্ত ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে। আর মেয়র বলেন ফ্রি চিকিৎসা। এখানে এসেতো দেখলাম টাকা ছাড়া কোনো কিছুই হয় না। বিকাল ৪ টায় চিকিৎসকের টেবিলে গিয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি কোনো তথ্য দেয়া যাবে না বলে জানান।

পুরাতন ভবনের ৭ম তলায় শিশু বিভাগ। ওই বিভাগে তিনটি ওয়ার্ডে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ১ নম্বর ইউনিটে  ৪ জন, ২ নম্বর ইউনিটে  ১৫ জন ও ৩ নম্বর ইউনিটে ১২ জন শিশু ভর্তি আছে। এদের মধ্যে ৩ নম্বর ইউনিটে ২ জন নতুন  ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। এদের একজন শিশু আহসান। জিনজিরা পিএম পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী। বারান্দার  মায়ের কূলে শুয়ে আছে। গলায় প্রচণ্ড ব্যথা। কথা বলার শক্তি নেই। ২ নম্বর ইউনিটে গিয়ে দেখা যায়, চিকিৎসককে ঘিরে আছে ডেঙ্গু রোগের স্বজনরা। এই ওয়ার্ডে ১২ জন ডেঙ্গু রোগী রয়েছে। ২ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে। এদের একজন আল আদিব, অপরজন ঈশান। আল আদিব মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। তিনদিন আগে গায়ে প্রচণ্ড জ্বর ওঠে তার। এরপর হঠাৎ করে পা ফুলে যায়। হাটতে পারছেনা আদিব। তাই মা হাবিবা নিয়ে আসে হাসপাতালে।
 এই হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে ১৪১ জন ডেঙ্গু রোগী। ১৬৮ জন ছাড় পত্র নিয়ে বাসায় চলে গেছেন। গতকাল নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ১৬ জন ডেঙ্গু রোগী। গতকাল পর্যন্ত মিটফোর্ট হাসপাতালে ৩০৯ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর