গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জি.কে) সেচ প্রকল্প এলাকার ৮টি নদীর উৎসমুখ খুলে দেয়ার দাবি করেছে নদী রক্ষা সংগঠন রিভারাইন পিপল। একই সঙ্গে যেসব নদীর ওপর দিয়ে জিকে খাল অতিক্রম করেছে সেখানে সাইফুন পদ্ধতির ব্যবস্থা করতে আহ্বান জানিয়েছে তারা। নদী রক্ষায় দুই দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে সরকারকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করেছে রিভারাইন পিপল’র কেন্দ্রীয় নেতারা।
সূত্র মতে, সারা দেশের নদী রক্ষায় গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে কাজ করছে রিভারাইন পিপল নামে সংগঠনটি। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের নদীগুলো নিয়ে কাজ করছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। সম্প্রতি তারা কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলের নদী নিয়ে গবেষণা ও পরিসংখ্যান চালিয়েছে। এতে জি.কে প্রকল্পের আওতাধীন কালীগঙ্গা, ডাকুয়া, হিসনা, সাগরখালী, চন্দনা, মাথাভাঙ্গা ও কুমার নদ মরা খালে পরিণত হচ্ছে বলে দাবি করেছে সংগঠনটি। গত বুধবার ইবি প্রেস কর্নারে জি.কে প্রকল্প অঞ্চলের নদ-নদী সুরক্ষা বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
এ সময় সংগঠনের কেন্দ্রীয় পরিচালক ও ইবির পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক আলতাফ হোসেন রাসেল লিখিত বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, ‘৫০ এর দশকে জি.কে সেচ প্রকল্প শুরু হয়।
তখন ফারাক্কায় বাঁধ ছিল না। কিন্তু ফারাক্কা বাঁধের পরে পদ্মায় পর্যাপ্ত পানি না থাকায় প্রকল্পটি নিজেই এখন মৃত প্রায়। জি.কে প্রকল্প বাস্তবায়নকালে ৮টি নদীর প্রবাহমুখ বন্ধ করে দেয়া হয়। অর্থনৈতিকভাবে কিছুটা লাভবান হলেও ওই নদীগুলোর বন্ধ হওয়া প্রবাহমুখের উভয় দিকে প্রায় দুই কিলোমিটার পর্যন্ত দখলের শিকার হয়েছে। বর্তমানে নদীগুলোর অস্তিত্ব বিলীনের পথে। তাই প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য এসব নদীর উৎসমুখ খুলে দিয়ে দখল মুক্ত করতে হবে। একই সঙ্গে খাল ও নদীর ক্রসিং স্থানে সাগরখালী নদীর মতো সাইফুন পদ্ধতি স্থাপন করে দ্বৈত প্রবাহ ব্যবস্থা চালুর আবেদন করেন তিনি। এতে নদী ও জি.কে সেচ প্রকল্প উভয়ই চলমান থাকবে।’
সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন রিভাইরাইন পিপল ইবি শাখার আহ্বায়ক ও বাংলা বিভাগের প্রফেসর ড. রবিউল হোসেন। এতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির উপদেষ্টা ও অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর ড. আবদুল মুঈদ ও কেন্দ্রীয় পরিচালক আলতাফ হোসেন রাসেল। এ সময় সংগঠনের সদস্য তৌহিদুল ইসলাম, ওবায়দুল হক, কুমার নদ রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক আবদুল্লাহ মারুফ, সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ইমরান শুভ্র, সহ-সভাপতি মাহফুজ মিশু, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির জীবন, যুগ্ম-সম্পাদক ইরফান রানাসহ অন্যান্য সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় নদী রক্ষায় সাংবাদিকরা বিভিন্ন পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দেন।