বন্যায় ভেঙ্গে গেছে বাঁধ, সড়ক, রেল লাইন। বিছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। বিভিন্ন এলাকায় বৈদ্যুতিক খুটি, মিটার ডুবে যাওয়ায় নেই বিদ্যুৎ। সবমিলিয়ে এক অসহায় জীবন-যাপন করছে কুড়িগ্রামের চিলমারীর মানুষ। বানভাসী এই মানুষদের উঠানে পানি ঘরে পানি। উপজেলার হাসপাতাল সড়ক, মাটিকাটা, বাঁধ,, চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন স্থানের সকল উঁচু স্থানেও ভরে গেছে মানুষে। বেশির ভাগ পরিবারের থাকারও ঠাই নেই। তাই বাধ্য হয়েই বিভিন্ন স্থানের বানভাসী মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে নৌকায় পেতেছে বাসতবাড়ি।
তাদের রান্নাবান্না, নাওয়া, খাওয়া, থাকার ভরসা এখন নৌকা। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। বন্যায় আক্রান্ত পরিবার গুলো প্রায় ১০/১২ দিন ধরে নৌকার উপরেই বাসাবেঁধে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
কেউ শুকনা খাবার খেয়ে আবার কেউ একবেলা রান্না করে পার করছে দিনরাত। বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও চিলমারী উপজেলা সদরসহ চলাঞ্চল গুলো জলমগ্ন থাকায় বিস্তীর্ণ জনপদে দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির অভাব। নৌকার উপর বসবাসরত নয়ারহাটের আকতারা বেগম, জোড়গাছ মাঝি পাড়ার বালাসহ বেশ কিছু পরিবারের মহিলারা জানিয়েছেন পরিবার পরিজন নিয়ে ছোট নৌকায় বসবাস করতে তাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। দুর্গত এলাকায় ত্রানের জন্য চলছে হা-হা কার। এখন পর্যন্ত বেশির ভাগ বানভাসী মানুষের মাঝে জোটেনি একমুটো ত্রানের চাল। অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছে অনেক পরিবারের। এদেিক নৌকাবিহীন পরিবারগুলো কেউ মাচা পেতে, কেউ রাস্তার উপর খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
সরকারী পর্যায়ে সীমিত ত্রান তৎপরতা শুরু হলেও বিপুল সংখ্যক বানভাসীর ভাগ্যে জুটছে না তা। রমনা মাঝিপাড়া, নয়ারহাটের বড়জা দিয়ারখাতা এলাকার আকতারা, আমিনুল, বালারানিসহ অনেকে জানান, ঘরেও কোমর পানি তাই থাকি এখন নৌকার উপর। একবেলা রান্না না হলে খাই খালি শুকনা খাবার। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মো: কহিনুর জানান, এ পর্যন্ত বানভাসী মানুষের মাঝে ৫৫টন চাল ও ১শত পরিবারের মাঝে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও ২৪ টন চাল হাতে রয়েছে তা অতিশিঘ্রই বিতরণ করা হবে। এদিকে পাউবো সূত্রে জানা গেছে, চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কমলেও তা বিপদ সীমার ৯০ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।