যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র ১৭ এজেন্টকে আটক করেছে ইরান। তাদের সকলকেই বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকজনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে ইরানের সপর্শকাতর এলাকায় যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করার দায়ে তাদেরকে শনাক্ত ও পরে আটক করা হয়। খবর দিয়েছে দেশটির বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ।
খবরে বলা হয়, ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয়ের গুপ্তচর-বিরোধী দপ্তরের পরিচালক সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ খবর নিশ্চিত করেছেন। এতে তিনি বলেন, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র হয়ে কাজ করা ১৭ পেশাদার গুপ্তচরকে গত ১৮ই জুন আটক করা হয়। তারা ইরান সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সংস্থা ও বেসরকারি খাতে কার্যরত ছিলেন। এসব সংস্থার সঙ্গে কয়েকটি কেন্দ্রের যোগাযোগও রয়েছে। কেন্দ্রগুলো তাদের জন্য ঠিকাদার হিসেবে কাজ করতো বলেও জানান তিনি।
তার দাবি, ইরানের অর্থনৈতিক, পরমাণু, সামরিক ও সাইবার প্রতিষ্ঠানের ভেতরে এসব কেন্দ্রের অস্তিত্ব বিদ্যমান।
আটক ১৭ ব্যক্তি আলাদাভাবে কাজ করছিল। তাদের একজনের সঙ্গে অন্যজনের কোনো যোগাযোগ নেই বলে জানানো হয়েছে। এর মধ্যে কোনো কোনো ব্যক্তিকে ভিসার ফাঁদে ফেলে সিআইএ গোয়েন্দাগিরিতে বাধ্য করেছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। মার্কিন কর্মকর্তারা নিজেদেরকে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা বলে পরিচয় দিয়ে ব্যক্তিগত মেইল অথবা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বার্তা পাঠিয়ে গোয়েন্দাগিরিতে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গত মাসেই সিআইএ’র একটি চক্রকে আটক করার ঘোষণা দিয়েছিল ইরান। তবে সোমবারের ঘোষণার সঙ্গে ওই ঘোষণার কোনো সমপৃক্ততা রয়েছে কিনা সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
প্রসঙ্গত, সমপ্রতি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ একাধিক পশ্চিমা দেশের সঙ্গে তীব্র বিরোধে জড়িয়ে পড়েছে ইরান। চলতি বছরের মে মাসে দেশটির ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপরই নতুন বিরোধের মাত্রা বেড়ে যায়। এর আগে গত বছর ইরানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে যায় যুক্তরাষ্ট্র। আরোপ করে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা। এতে চরম অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় ইরানে। চলমান উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায় চলতি বছরের মে মাসে বেশ কয়েকটি সৌদি ট্যাংকার ইরান নিয়ন্ত্রিত হরমুজ প্রণালি পার হওয়ার সময় হামলার শিকার হলে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি ওই হামলা চালিয়েছিল ইরান। তবে ইরান সে অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। এরপর অঞ্চলটিতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ড্রোন ভূপাতিত করে ইরানের রেভ্যুলুশনারি গার্ড। এরপর ইরানে হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রামপ। তবে শেষ মুহূর্তে হামলার নির্দেশ বাতিল করে দেন তিনি।
এর মধ্যে যুক্তরাজ্যের সঙ্গেও একটি বৃটিশ ট্যাংকার আটক নিয়ে সমপর্কের অবনতি হয়েছে ইরানের। এর আগে অবশ্য জিব্রালটার প্রণালিতে ইরানের একটি ট্যাংকার আটক করে বৃটিশ নৌবাহিনী।