গর্ডন গ্রিনিজ থেকে স্টিভ রোডস- অনেক কোচই এসেছেন বাংলাদেশে। এসব কোচের হাত ধরে সাফল্যও এসেছে। কিন্তু তাদের অনেকেরই শেষটা ভালো হয়নি। বিশেষ ডেভ হোয়াটমোর ও চন্ডিকা হাথুরুসিংহের বিদায়টা ছিল দৃষ্টিকটু। সর্বশেষ এই তালিকায় যুক্ত হয়েছে স্টিভ রোডসের নামও। বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স প্রত্যাশিত না হওয়ায় রোডসের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ২০২০ পর্যন্ত চুক্তি থাকলেও বিদায় করে দিয়েছে তাকে। বিসিবি এখন নতুন কোচ খুঁজছে।
এরই মধ্যে কোচের জন্য বিজ্ঞাপন দিয়েছে তারা। জানা গেছে টাইগারদের কোচ হতে অনেকেই আবেদন করেছেন। তাদের মধ্যে আছেন বেশ কয়েকজন হাইপ্রোফাইল কোচও। বিসিবির সিইও নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন বলেন, ‘হ্যাঁ, আমরা বেশ কয়েকজন কোচের বায়োডাটা পেয়েছি। হাইপ্রোফাইল কোচও সেখানে আছেন। তবে আমরা কোন নাম প্রকাশ করতে পারবো না। সব ঠিক হলেই অনুষ্ঠানিক ভাবে আমরা জানাবো কে হচ্ছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের নতুন প্রধান কোচ।’ এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কোচদের এমন বিদায়ের পর হাইপ্রোফাইল কোচরা বাংলাদেশে আসবেন কিনা? আরেকটি ব্যাপার হলো- বাংলাদেশের কোচ হতে আগ্রহী অনেক প্রার্থী বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগের দলের সঙ্গে যুক্ত আছেন। বাংলাদেশে কোচিং করার পাশাপাশি তারা সেখানেও কাজ করার অনুমতি চান। তাদের ব্যাপারে কি ভাববে বিসিবি। কারণ বাংলাদেশ বোর্ড ‘ফুলটাইম’ কোচ চাইছে।
নতুন কোচের তালিকায় আলোচনায় আছে বেশ কয়েকটি নাম। তাদের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশেরই সাবেক কোচ শ্রীলঙ্কান চন্ডিকা হাথরুসিংহে ও বাংলাদেশের খালেদ মাহমুদ সুজন। কিন্তু বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের সবুজ সংকেত না পাওয়ায় প্রধান কোচের জন্য আবেদন করেননি সুজন। যদিও শ্রীলঙ্কা সফরে সুজন ভারপ্রাপ্ত কোচের দায়িত্বে আছেন। আর হাথুরুর সঙ্গে যে তিক্ত সম্পর্ক বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের, তাতে তাকে পুনরায় ফিরিয়ে আনার ব্যাপারটাও বিবেচ্য হবে না। আর বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন নিশ্চিত করেছে যে, তারা কোন এশিয়ান কোচ চান না। তবে এমন কাউকে খুঁজছেন যিনি কিনা এশিয়ান ক্রিকেট সম্পর্কে ভালো জানেন। এমন কোচদের তালিকায় একটি নাম টম মুডি। এই অস্ট্রেলিয়ান কোচ আইপিএলে হায়দরাবাদে ও বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন। সম্প্রতি হায়দরাবাদ মুডিকে ছেড়ে দিয়েছে। মুডি বিসিবি বরাবর আবেদন করেছেন কিনা তা জানা যায়নি। তার প্রতি বিসিবির আগ্রহ দেখানোর কথা অবশ্য শোনা গেছে। এছাড়াও শোনা যাচ্ছে আফগানদের সাবেক কোচ ফিল সিমন্সের নাম। কেমন কোচ চান? এমন প্রশ্নের জবাবে নাজমুল হাসান পাপন বলেছিলেন, ‘এর আগে আমরা কোচ খুঁজছিলাম তখন ভালো ভালো সব কোচ কোন না কোন দলের সঙ্গে জড়িত ছিল বিশ্বকাপের জন্য। বিশ্বকাপ শেষে অনেকেই নতুন করে অন্য কারো সঙ্গে চুক্তির কথা চিন্তা করবেন। যে কারণে আমাদের মনে হয়েছে এখনই সঠিক সময় আমাদের মনের মত কোচ খুঁজে নেয়ার।’ এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি দেশের কোচ দায়িত্ব ছেড়েছেন। তাই তাদের দিকেও নজর থাকবে বিসিবির।
গত ১৪ জুলাই কোচ নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয় বিসিবি। আবেদনপত্র জমা দেওয়ার সর্বশেষ তারিখ ছিল গত ১৮ জুলাই। আবেদনের পাঁচদিন সময়ের মধ্যে বিশ্বের অনেক হাই-প্রোফাইল কোচ বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের দায়িত্ব নিতে আবেদন করেছেন। এখন কোচ নিয়োগ কবে নাগাদ হতে পারে তা নিয়ে নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন বলেন, ‘আমরা কিছু আবেদন পেয়েছি। কিছু হাই- প্রোফাইল কোচ আমাদের সাথে যোগাযোগ করেছে। টি-২০ ফ্রাঞ্চাইজি লীগের কারণে কিছু কোচ জাতীয় দলের পাশাপাশি সেখানেও দায়িত্ব পালন করতে চায়। কিন্তু আমাদের প্রয়োজন ফুল টাইম কোচ। এই দিকটার দিকে নজড় দিয়েই আমরা কোচ চূড়ান্ত করবো।’