× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

কারাগারে এনামুল বাছির

শেষের পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
২৪ জুলাই ২০১৯, বুধবার

ঘুষ কেলেঙ্কারির মামলায় গ্রেপ্তার দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালক (সাময়িক বরখাস্ত) খন্দকার এনামুল বাছিরকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েস কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে সোমবার রাত ১০টা ২০ মিনিটে রাজধানীর মিরপুরের দারুস সালাম এলাকা থেকে এনামুল বাছিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার বেলা ২টার দিকে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। বেলা পৌনে ৩টার দিকে শুনানি শুরু হয়। তদন্ত কর্মকর্তা দুদক পরিচালক শেখ মো. ফানা ফিল্ল্যাহ আদালতে পাঠানোর আবেদন করেন। দুদকের সাবেক প্রসিকিউটর মো. কবির হোসাইন আসামির জামিন আবেদন করেন। তারা আসামির বিরুদ্ধে থাকা ঘুষ গ্রহণের সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং এটি তার পৃষ্ঠা ৫ কলাম ১
বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেন।
তারা বলেন, এনামুল বাছির চাকরিতে পদোন্নতি না পাওয়া সংক্রান্তে হাইকোর্টে একটি রিট করার কারণেই তার বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে এ মামলা করা হয়েছে। যদিও দুদকের প্রসিকিউটর এ অভিযোগ অস্বীকার করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আদালত কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়ার পর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা কারাগারে ডিভিশন প্রদানের আবেদন করেন। দুদক প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল এ বিষয়ে কারাবিধি অনুযায়ী আদেশ হলে তাদের কোনো আপত্তি নেই মর্মে জানান। এরপর বিচারক ডিভিশনের বিষয়ে কারবিধি অনুযায়ী আদেশ হবে বলে জানান। এর আগে কারাগারে থাকা এ মামলার আরেক আসামি ডিআইজি মিজানুর রহমানকে (সাময়িক বরখাস্ত) গত ২২শে জুলাই শোন অ্যারেস্ট দেখান একই আদালত। তিনি অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে গত ২রা জুলাই থেকে কারাগারে রয়েছেন। ১৭ই জুলাই ৪০ লাখ টাকা ঘুষ লেনদেনের মামলার পর থেকেই এনামুল বাছিরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে আসছিল দুদক। কিন্তু বাছির আত্মগোপনে থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। গ্রেপ্তারের দিন এনামুল বাছির দারুস সালাম এলাকায় তার এক ভাগ্নির বাসায় ছিলেন। সেখান থেকে একটি ফোনের মাধ্যমে স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সেই ফোনের সূত্র ধরে এনামুল বাছিরের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৭ই জুলাই ডিআইজি মিজান ও এনামুল বাছিরকে আসামি করে মামলা করে দুদক।

মামলার এজাহারে বলা হয়, খন্দকার এনামুল বাছির কমিশনের দায়িত্ব পালনকালে অসৎ উদ্দেশ্যে নিজে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার আশায় ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ডিআইজি মিজানুর রহমানকে অবৈধ সুযোগ দেয়ার উদ্দেশ্যে ডিআইজি মিজানের অবৈধভাবে অর্জিত ৪০ লাখ টাকা ঘুষ হিসেবে নিয়েছেন। ঘুষের ওই টাকার অবস্থান গোপন করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি দন্ডবিধির ১৬১ ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং আইন ২০১২-এর ৪(২) (৩) ধারায় অপরাধ করেছেন। একইভাবে ডিআইজি মো. মিজানুর রহমান সরকারি কর্মকর্তা হয়েও তার বিরুদ্ধে ওঠা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার আশায় অর্থাৎ অনুসন্ধানের ফলাফল নিজের পক্ষে নেয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে খন্দকার এনামুল বাছিরকে অবৈধভাবে প্রভাবিত করেছেন। এ জন্য ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে পরস্পর যোগসাজশে দণ্ডবিধির ১৬৫(ক) ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং আইন ২০১২-এর ৪(২) (৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। মামলার কয়েক দিন পর গত রোববার ঘুষের মামলায় ডিআইজি মিজানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মিজান ১লা জুলাই থেকে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় কারাগারে। সোমবার দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল সাংবাদিকদের বলেন, ঘুষ লেনদেনের মামলায় ডিআইজি মিজানকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে দুদক। ঢাকার জ্যৈষ্ঠ বিশেষ জজ ইমরুল কায়েসের আদালত শুনানি নিয়ে মিজানকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন।

দুদকের মামলার এজাহারের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ২৯শে অক্টোবর ডিআইজি মিজানের অবৈধ সম্পদ অর্জন সংক্রান্ত একটি অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেয়া হয় এনামুল বাছিরকে। অনুসন্ধান চলমান অবস্থায় গত ৯ই জুন ডিআইজি মিজান নিজে বাঁচতে এনামুল বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর আসে। এর পরপরই দুদকের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে উচ্চপর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি তাৎক্ষণিকভাবে খন্দকার এনামুল বাছিরের বক্তব্য গ্রহণ করে এবং পারিপার্শ্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে ঘুষ নেয়ার বিষয়ে প্রাথমিক সত্যতা পায়।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর