স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে ছেলেধরার গুজব ছড়িয়ে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। যারাই এই ঘটনা ঘটাচ্ছে তাদের শাস্তি পেতেই হবে। গতকাল সচিবালয়ে সমসাময়িক ইস্যুতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কামাল বলেন, সোস্যাল মিডিয়ায় গুজব সৃষ্টির মাধ্যমে কতগুলো অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটছে। ঘটনাগুলো কারো কাছে কাম্য নয়। সবগুলো নিছক গুজব, এগুলোর  কোনো ভিত্তি নেই। আমি এর সঙ্গে জানাতে চাচ্ছি, যারা এই ধরনের গণপিটুনিতে অংশ নেন, একজন যদি এই ধরনের হত্যাকাণ্ড ঘটান বা ১০০ জনে ঘটান-শাস্তি কিন্তু একই রকম হবে। এই ধরনের হত্যাকাণ্ড ঘটালে অবশ্যই আমরা আইনের মুখোমুখি করব। আইন অনুযায়ী তাকে শাস্তি পেতেই হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অস্থিতিশীল পরিস্থিতি, একটা কনফিউশন, মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্যই এগুলো। একজন সাধারণ মানুষ, যারা শ্রমিক, অশিক্ষিত লোক তারাও বোঝে ব্রিজ তৈরি করতে মানুষের মাথা লাগে না। তাহলে কেন এই ধরনের ঘটনা ঘটাবে। এগুলোর নিশ্চয়ই কোন উদ্দেশ্য আছে। আমরা সবগুলো দেখছি। তিনি বলেন, এর সঙ্গে (পিটিয়ে মানুষ হত্যা) যদি কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকে বা কোন অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য থাকে কিংবা কোন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য- যেটার জন্যই করে থাকুক, যে ঘটিয়েছে আমরা তাকে ধরছি, তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব। ছেলেধরা সন্দেহে গত কয়েকদিনে সারাদেশে ৬ জনকে হত্যা করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এতে আহত হয়েছেন ১৫ জন। মামলা হয়েছে ৯টি, জিডি (সাধারণ ডায়েরি) হয়েছে ১৫টি। পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় সারাদেশে ৮১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা আরও গ্রেপ্তার করব। তবে আমরা গণগ্রেপ্তারে বিশ্বাস করি না। আমরা বিশ্বাস করি, যিনি অপরাধ করেছেন তাকে শনাক্ত করে বিচারের মুখোমুখি করব। সে একজন করুক কিংবা ১০ জন করুক কিংবা আরও বেশি মানুষ সম্পৃক্ত থাকুক।

তিনি বলেন, গত ২০শে জুলাই বাড্ডায় মা তার সন্তানকে ভর্তির তথ্য নিতে গিয়ে যে ঘটনার শিকার হল এটা সারাদেশবাসীকে ব্যথিত করেছে, আমরাও এই ঘটনা খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। কেন এই ঘটনা ঘটাল। ইতোমধ্যে ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে আমরা ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছি। যারা যারা সেখানে ছিল, এই ঘটনার জন্য দায়ী যারা সবাইকে শনাক্ত করে ব্যবস্থা আমরা নেব ইনশাআল্লাহ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা মসজিদের ইমাম সাহেবদের বলছি, সব জায়গায় বলছি- এই ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে। আমরা সঙ্গে সঙ্গে বলতে চাচ্ছি, যারা ফেসবুকে এই ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছেন..., আমাদের পুলিশ কিন্তু বসে থাকবে না। যারাই ঘটাবেন, তাদের আমরা শনাক্ত করব। তাদের আমরা আইনের মুখোমুখি অবশ্যই করব। আমাদের পুলিশকে এত অদক্ষ ভাববেন না। আসাদুজ্জামান খান বলেন, যারা সাইবার ক্রাইম করেছেন, ফেসবুকে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে যে ক্রাইম করেছেন আমরা অলরেডি কয়েকজনকে শনাক্ত করে অ্যারেস্ট করেছি। সবাই (আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী) সক্রিয় রয়েছে। তিনি বলেন, ডিসি ও এসপিদের বলে দেয়া হয়েছে তারা যেন খেয়াল রাখেন কোন জায়গায় যেন এই ধরনের গুজব বিস্তার লাভ করতে না পারে। যেখানে গুজব সেখানেই যেন তারা অ্যাকশনে যেতে পারে, সেই ধরনের ইন্সট্রাকশন দিয়ে দেয়া হয়েছে।