× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

কর্মচারীদের আন্দোলন / উত্তাল বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস

শিক্ষাঙ্গন

ইভান চৌধুরী, বেরোবি প্রতিনিধি
(৪ বছর আগে) জুলাই ২৪, ২০১৯, বুধবার, ৭:৩৪ পূর্বাহ্ন

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে সর্বাত্মক কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ সমাবেশ করছেন ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণিদের কর্মচারীদের সংগঠন ‘কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ’। আন্দোলনের ৩১তম দিনে বুধবার সাড়ে আটটা থেকে প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে বিভিন্ন শ্লোগান দেন তারা। যৌক্তিক দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিেেয়ছেন কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ। কর্মচারীদের লাগাতার আন্দলনের ফলে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম। ফলে বিভাগগুলোতে আবারো দীর্ঘমেয়াদী সেশনজটের আশঙ্কা করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, তিন দফা দাবিতে বুধবার ৩১তম দিনের মত আন্দোলন করেছেন কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ নামে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের একটি সংগঠন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের দুটি গেটেই তালা লাগিয়ে আন্দোলন করার ফলে প্রশাসনিক ভবনে ঢুকতেই পারছেন না কর্মকর্তারা। বিভাগগুলোর ভর্তি কার্যক্রম ও ফরম পূরণের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। যেসব বিভাগের ল্যাবে ক্লাস থাকে তারা বেশি বিপাকে পড়েছে, সেমিনার এ্যাটেনডেন্ট, ল্যাব এ্যাটেনডেন্ট এর অনুপস্থিতির কারণে ল্যাব ক্লাস হচ্ছে না, সেমিনার বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা সেমিনারে ঢুকতেই পারছেনা কেউই।
এতে শিক্ষার্থীরা আবারো ভয়ানক সেশনজটের কবলে পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ‘কর্মচারীদের যৌক্তিক দাবী নিয়ে প্রশাসন টালবাহানা শুরু করেছে। এতে যতটুকু ভোগান্তি হচ্ছে তা শিক্ষার্থীদের। চলমান সমস্যা গুলো দ্রুত সমাধান করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক সুষ্ঠু পরিবেশে ফিরিয়ে আনতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।’

জানা যায়, বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ, আপগ্রেডেশন-প্রমোশন ও নীতিমালা প্রণয়নসহ তিন দফা দাবিতে গতমাসের ২৪ তারিখ থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বিত কর্মচারী পরিষদ। এসব দাবিতে মাত্র আড়াই মাস আগে প্রায় ২০ দিনের কর্মবিরতি পালন করেছে কর্মচারী ইউনিয়ন। উল্লেখিত দাবিতে বর্তমান উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ-এর মেয়াদকালেই এটি ২য় মেয়াদে আন্দোলন কর্মচারীদের।  ড. কলিমউল্লাহ দায়িত্ব নেওয়ার আগের দুই উপাচার্যের আমলে কার্যত ক্যাম্পাস ভিসি-বিরোধী আন্দোলনে প্রকম্পিত ছিল। বিভিন্ন সময় বন্ধ ছিল বিশ্ববিদ্যালয়। এসব আন্দোলন সংগ্রামের ফলস্বরুপ শিক্ষার্থীরা পেয়েছেন দীর্ঘদিনের সেশনজট। কর্মচারীদের আন্দোলনের ফলে আবারো সেই সেশনজট হাতছানি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস স্থিতিশীল রাখার দাবিতে বুধবার দুপুর ১ টায় শেখ রাসেল চত্বরে মানববন্ধন করেন শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।

বিশ্ববিদ্যালয় বহিরাঙ্গনের পরিচালক রাফিউল আজম নিশারের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আপেল মাহমুদ, লোকপ্রশাসন বিভাগের বিভাগের বিভাগীয় প্রধান জুবায়ের ইবনে তাহের, অফিসার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, উপাচার্যের পিএ আবুল কালাম আজাদ। এছাড়া শিক্ষার্থীদেও মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী রেদোয়ানুর রহমান, বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস তমা প্রমুখ।  

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘কর্মচারীরা দীর্ঘদিন থেকে যে আন্দোলন করছে এতে করে শিক্ষার উপর বিরুপ প্রভাব পরছে। এক শ্রেণীর লোক এধরনের কাজের সাথে জড়িয়ে পড়েছে। ক্যাম্পাসকে স্থিতিশীল রাখতে হবে। এজন্য কর্মচারীদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে বসে সমস্যার সমাধান করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. গাজী মাজহারুল আনোয়ার বলেন, ‘কর্মচারীরাও বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি পার্ট। তাদের কোন দাবী-দাওয়া থাকলে তা অবশ্যই শুনতে হবে। একটি আন্দোলন এতদিন থেকে চলছে অথচ প্রশাসন তা সমাধান করতে পারছেনা। এটি অবশ্যই প্রশাসনের ব্যর্থতা। এর দায় প্রশাসন এড়াতে পারেনা। স্বাভাবিক ভাবেই প্রভাব পড়ছে শিক্ষার্থীদের উপর। শিক্ষকরা ঠিকমত ক্লাস-পরীক্ষা নিতে পারছেন না। ফলে, সেশনজট বাড়তেই পারে।’

এবিষয়ে কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি নুর আলম জানান, আমরা আমাদের যৌক্তিক দাবী নিয়ে আন্দোলনে নেমেছি। শিক্ষার্থীদের কোন ধরণের সমস্যা হলে তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানাবে। প্রশাসন আমাদের দাবী মেনে নিলেই আমরা এই আন্দোলন তুলে নেব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (চলতি দায়িত্ব) আতিউর রহমান বলেন, ‘গত সিন্ডিকেটে কর্মচারীদের নীতিমালার ভিত্তি রচনা হয়েছে। তাদের দাবি নীতিমালা কর্মচারী বান্ধব হয়নি। সেক্ষেত্রে আলোচনার মাধ্যমে এর সুষ্ঠু সমাধান নিয়ে আসতে হবে। প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে আন্দোলন কোনভাবেই কাম্য নয়।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর