× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মৌলভীবাজারে নদীতে ফেলা হয়েছে চামড়া

বাংলারজমিন

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
১৭ আগস্ট ২০১৯, শনিবার

মৌলভীবাজারে এবার কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি হয়নি। কেউ নদীতে ফেলে দিয়েছে। কেউবা মাটিতে পুঁতে ফেলেছে। গুটিকয় ব্যবসায়ী কিছু চামড়া নামমাত্র মূল্যে ক্রয় করে লবণ ছিটিয়ে প্রক্রিয়া করে রেখেছে। এটিও বিক্রি করতে পারবে কিনা তা নিয়ে চিন্তায় আছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। মৌলভীবাজারে মাত্র কয়েক বছর আগে দেখা গেছে কোন কোরবানিদাতা যখন বাজার থেকে কোরবানির পশু ক্রয় করতেন তখনই মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীরা পিছু নিতেন এবং চামড়া ক্রয় করতেন। এখন এই দৃশ্য পাল্টে গেছে। উল্টো এখন কোরবানিদাতা পশু ক্রয় করে চামড়া ছালাই কর্মী খোঁজ করতে হয়।
আর চামড়া বিক্রির জন্য ব্যবসায়ীকে খোঁজে বের করতে হয়। তারপর কিছু কম হলেও চামড়ার একটি মূল্য পাওয়া যেত। যা দেয়া হতো দরিদ্র পরিবার বা বিভিন্ন দ্বীনি প্রতিষ্ঠানে। তবে এবার ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। এবার সারা দিন অপেক্ষা করেও কোনো ব্যবসায়ীর দেখা মেলেনি। যারা কোনো ব্যবসায়ীকে পেয়েছেন নামমাত্র মূল্যে চামড়া বিক্রি করেছেন। কোনো কোনো ব্যবসায়ী বিনা মূল্যেও চামড়া নিতে চাননি। ফলে চামড়া সংগ্রহকারীরা, ছালাই কর্মী ও মাদ্রাসা, এতিমখানা কর্তৃপক্ষ চামড়া নিয়ে বিপাকে পড়ে। চামড়া বিক্রি করতে না পেরে কয়েক হাজার চামড়া নদীতে ফেলে দেন তারা। অন্যরা মাটিতে পুঁতে ফেলেন। কেউ কেউ রাস্তায় ফেলে দেয় চামড়া। এই ফেলে রাখা পচা চামড়া অপসারণ করে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা র্মিীরা মনু নদীর তীরে গর্ত করে চামড়া মাটিচাপা দেন। এবার চামড়ার এই অবস্থার জন্য স্থানীয় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন ঢাকার পোস্তার আড়তদার ও ট্যানারি মালিকরা সিন্ডিকেট করার কারণে এমনটাই হয়েছে।
মৌলভীবাজারে অন্যান্য বছর কোরবানি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চামড়া ব্যবসায়ী বা তাদের প্রতিনিধিরা বাড়ি বাড়ি হাজির হতেন। কখনো চামড়ার অগ্রিম টাকা দিয়ে আসত কিন্তু এবারের চিত্র ছিল ভিন্ন। সারা দিনেও চামড়া ব্যবসায়ীদের দেখা মেলেনি। তাই কোরবানি দাতা ও সংগ্রহকারীরা চামড়া বিক্রি করতে না পারায় গ্রামগঞ্জ থেকে শহরে নিয়ে আসেন। দিনভর অপেক্ষা করার পর কোনো ব্যবসায়ীর দেখা পাননি রাত পর্যন্ত। দীর্ঘ অপেক্ষার পর মৌলভীবাজার পৌর বাস টার্মিনালে, রাস্তায় চামড়া ফেলে যান। কেউ কেউ ক্ষোভে বাড়িতেই চামড়া গর্ত করে পুঁতে ফেলেন। ঈদের সাড়া দিন চামড়া সংগ্রহ করে বিক্রি করতে না পেরে আর্থিক ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এতিমখানা ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। এতে বেকার ছিলেন চামড়া শিল্পের প্রাথমিক প্রক্রিয়াজাতকারী কয়েক হাজার মৌসুমী শ্রমিক।

মৌলভীবাজার বালিকান্দি বাজারের ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন জানান, ঢাকার আড়তদাররা ব্যবসায়ীদের টাকা ঠিকমতো পরিশোধ না করায় এবার তারা চামড়া প্রাথমিক প্রক্রিয়ার জন্য লবণ কেনার টাকা সংগ্রহ করতে পারেননি। এবার বিনা মূল্যে চামড়া পেয়েও সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়নি। চামড়ার দাম পড়ে যাওয়ার পেছনে তিনি সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের দায়ী করেন। আনোয়ার হোসেন জানান, চামড়া সংরক্ষণ করতে না পারায় এবার এলাকার ব্যবসায়ীরা তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার চামড়া নদীতে বা মাটিতে পুঁতে ফেলতে বাধ্য হয়েছেন। এই সময় তার কথা সমর্থন করেন ব্যবসায়ী কাবুল মিয়া (৫৫), মো. সুলেমান (৬৫) প্রমুখ। ব্যবসায়ী সুলেমান মিয়া ও আনোয়ার হোসেন জানান এখানকার ব্যবসায়ীরা সাধ্যমতো যে চামড়া সংরক্ষণ করেছে তা এখন বিক্রি করতে পারবে কি-না তা নিয়েই চিন্তায় আছে। তারা জানান সরকার কাঁচা চামড়া রপ্তানির যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা ভালো উদ্যোগ। যদি এটি ঠিক থাকে তবে চামড়ার সোনালি দিন আবার আসবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর