× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

পর্যটকে মুখর কুয়াকাটা

বাংলারজমিন

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
১৭ আগস্ট ২০১৯, শনিবার

বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও ঈদুল আজহার ছুটিতে পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের বেলাভূমি সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা।
যেখানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য সৈকতে দাঁড়ালে চোখে পড়বে দিগন্তজোড়া আকাশ আর সমুদ্রের রাশি রাশি নীলজল আর সমুদ্রের নীলজলের তরঙ্গায়িত ঢেউ ভাঙা গর্জন আছড়ে পড়ছে বেলাভূমিতে। উড়ে যাচ্ছে সাদা গাংচিলের দল এদিক ওদিক- মাছ শিকারের জন্য লড়াকু জেলেরা ট্রলারে ও নৌকায় ছুটে যাচ্ছে গভীর সমুদ্রে তা উপভোগ করছে পর্যটকরা।
বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে ও ঈদুল আজহার আনন্দ উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার দর্শনার্থী পরিবার-পরিজন নিয়ে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে এসেছেন। কলাপাড়া-কুয়াকাটা নদীতে বর্তমানে তিনটি ব্রিজ হওয়ায় সড়ক যোগাযোগ ভালো থাকায় এ বছর সর্বাধিক পর্যটকের আগমনে কুয়াকাটায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে।
দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসা ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের উন্মাদনায় পুরো সৈকত এখন আনন্দময় পরিবেশ বিরাজ করছে। নানা বয়সি পর্যটকের আগমনে রাখাইন মার্কেট, ঝিনুকের দোকান, খাবারঘর, চটপটির দোকানসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কেনাকাটার ধুম পড়েছে। সোমবার বিকাল থেকে হোটেল-মোটেলগুলোতে পর্যটকরা উঠতে শুরু করেছে। সৈকতের কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই নেই। কখনো মেঘ, কখনো বৃষ্টি।
এরই মাঝে সৈকতে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত দেখা, লাল কাঁকড়ার অবিরাম ছোটাছুটি, বালুকা বেলায় প্রিয়জনের সঙ্গে হাঁটাহাঁটি, আর সমুদ্রের মোহনীয় গর্জন শুনতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে কুয়াকাটায় ছুটে এসেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নানা বয়সের হাজারো মানুষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সৈকত লাঘোয়া নারিকেল বাগান, ইকোপার্ক, ইলিশপার্ক, জাতীয় উদ্যান, শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, সীমা বৌদ্ধবিহার, সুন্দরবনের পূর্বাঞ্চলখ্যাত ফাতরার বনাঞ্চল, ফকির হাট, গঙ্গামতি, কাউয়ার চর, আড়াই শতবর্ষী নৌকা, লেম্বুর চর, শুঁটকিপল্লী ও কুয়াকাটার জিরো পয়েন্টে শিশু-কিশোর যুবক-যুবতীসহ নানা বয়সি পর্যটকের পদচারণায় এখন মুখরিত হয়ে উঠেছে। সৈকতে বেড়াতে আসা নানা বয়সি পর্যটক স্মার্ট ফোনে সেলফি ও ভিডিও ক্লিপস সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এদিকে পর্যটক ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা দিতে বিভিন্ন পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা রক্ষীবাহিনীর ব্যাপক টহল অব্যাহত রয়েছে।
ঈদের ছুটিতে যশোর থেকে ভ্রমণে আসা ব্যবসায়ী আবুল কালাম ও নুবাইবা দম্পতি জানান, সৈকতের অপরূপ দৃশ্য দেখে অসাধারণ লেগেছে। দর্শণীয় স্পর্টে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘুরে দেখেছি। শিক্ষার্থী রাইকা, নওসিন ও মিশু জানান, প্রথমবারের মতো কুয়াকাটায় এসেছি। খুব ভালো লেগেছে। সুযোগ পেলে প্রকৃতির টানে বার বার ছুটে আসব এখানে। অপর এক শিক্ষার্থী উম্মে কবির হাবিবা বলেন, সমুদ্রে উন্মাদনার সঙ্গে গোসল করার ছবি তুলে এফবিতে পোস্ট করেছি। যোগাযোগ, অপরুপ সৈকতের সৌন্দর্র্য এছাড়াও একই স্থানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের লোভনীয় দৃশ্য অবলোকনের করা যায়। তাই সব বন্ধুকে এফবির মাধ্যমে আহ্বান করেছি বলে ওই শিক্ষার্থী জানিয়েছেন।
রুচিসম্মত খাবার পরিবেশনার নিশ্চয়তা নিয়ে খাবার হোটেল মালিকরা জানান, ঈদুল আজহার ছুটিতে পর্যটকদের ব্যাপক চাপ রয়েছে। আমরাও চেষ্টা করছি পর্যটকদের চাহিদা অনুযায়ী খাবার পরিবেশনের।
কুয়াকাটা সমুদ্র রিসোর্ট হোটেল ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিরন জানান, ঈদের ছুটিতে পর্যটকের ঢল নেমেছে। ঈদের পরদিন থেকে কুয়াকাটায় আগাম বুকিং অনুযায়ী পর্যটক রয়েছে। চলতি মাসের ১৬ তারিখ পর্যস্ত এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি ধারণা করেছেন। ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের মো. খলিলুর রহমান জানান, ঈদ উপলক্ষে পর্যটকের ব্যাপক চাপ রয়েছে। নিরাপত্তা দিতে ট্যুরিস্ট পুলিশসহ থানা পুলিশের দর্শনীয় স্থানে টহল রয়েছে।
এদিকে কলাপাড়া রাবনা বাঁধ নদীর মোহনায় দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর পায়রায় ঈদের দিন বিকাল থেকে দর্শনার্থীদের পদভারে গোটা বন্দর এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে। প্রতিদিন শত শত লোক পায়রা সমুদ্র বন্দরে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে আসেন। এটিও এখন পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়ভাবে হয়ে উঠছে। রাবনা বাঁধ নদীর মোহনায় দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর পায়রায় ঈদের দিনে ঘুরতে আসা বাকেরগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের ছাত্রী নাজরাতুন নাইম রুজি বলেন, দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর পায়রায় বন্দর কলাপাড়ায় হওয়ায় দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষ হিসেবে আমরা গর্বিত। এখানে ঈদের ছুটিতে ঘুরতে এসে খুব ভালোই লেগেছে। ভবিষ্যতে এখানে পর্যটকদের কাছে আরো আকর্ষণীয় স্থান হয়ে দাঁড়াবে।    
এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কুয়াকাটা বিচ ম্যানেজম্যান্ট কমিটির সভাপতি মো. মুনিবুর রহমান বলেন, কুয়াকাটায় আসা পর্যটকদের নিরাপত্তা বিধানের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর