ফেনীর ছাগলনাইয়ায় ছেলের অটোরিকশা কেনার ঋণের কিস্তির অর্থ পরিশোধ না করায় মা খোদেজা বেগমেকে (৩৫) হত্যার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। রোববার রাতে ছাগলনাইয়া উপজেলার উত্তর যশপুর গ্রামে মজল হক মিস্ত্রিবাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত খোদেজা বেগম ওই বাড়ির রাজমিস্ত্রি আবুল কালামের স্ত্রী। পুলিশ এ ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে। ছাগলনাইয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ জানান, উত্তর যশপুর গ্রামের মজল হক মিস্ত্রিবাড়ির খোদেজা বেগমের ছেলে আনোয়ারকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা কেনার জন্য ঋণ দেন প্রতিবেশী শামসুন্নাহার। ঋণের কয়েক কিস্তি পরিশোধ করার পর আনোয়ার বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র গা ঢাকা দেয়। রোববার রাতে কিস্তির টাকা দেয়া নিয়ে আনোয়ারের মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করেন শামসুন্নাহার ও তার ছেলেমেয়েরা। ঝগড়ার একপর্যায়ে প্রতিবেশী শামসুন্নাহার মা খোদেজা বেগমের তলপেটে সজোরে লাথি মারেন।
এতে ঘটনাস্থলে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন খোদেজা বেগম। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে তিনি মারা যান। খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। নিহতের স্বামী আবুল কালাম জানান, ‘তার অগোচরে ছেলে আনোয়ার প্রতিবেশী চাচি শামসুন্নাহার থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ নেয়। এটি তিনি আগে না জানলেও সম্প্রতি ছেলের কোনো সন্ধান না পেলে প্রতিবেশী চাচি শামসুন্নাহার টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। এর পর থেকে তাদের সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া হতো। এরই জেরে রোববার রাতে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে তার স্ত্রী খোদেজার পেটে সজোরে লাথি মারে শামসুন্নাহার। এদিকে লাশের প্রাথমিক সুরতহাল সম্পন্নকারী কর্মকর্তা ছাগলনাইয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুল ইসলাম জানান, ‘প্রাথমিক তদন্তে লাশের শরীরে দৃশ্যমান আঘাতের চিহ্ন নেই। তবে পুলিশ ধারণা করছে তলপেটে লাথির কারণে খোদেজা বেগমের মৃত্য হতে পারে। ময়নাতদন্তের পর নিহতের প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে’। এ ঘটনায় নিহত খোদেজা বেগমের স্বামী আবুল কালাম বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ হত্যাকাণ্ডে সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রতিবেশী শামসুন্নাহার, তার ছেলে মোতালেব, মেয়ে শাহেনা আক্তার এবং নাতি আবদুর রহমানকে আটক করেছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।