× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ঈদে বাড়িতে এসে কর্মস্থলে ফেরা হলো না রাসেলের

বাংলারজমিন

পাকুন্দিয়া (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
২০ আগস্ট ২০১৯, মঙ্গলবার

পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়িতে এসেছিলেন রাসেল। কিন্তু এ আসাই যে তার শেষ আসা হবে তা কে ভেবেছিল। ঈদ করতে এসে সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন তিনি। ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে রোববার বিকেলে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রাসেল। সে কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার জাঙালিয়া ইউনিয়নের চরটেকী গ্রামের মরহুম মঞ্জু মিয়ার ছেলে। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবারে বইছে মাতম।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চরটেকী গ্রামের রাসেল ঢাকার কালীগঞ্জে ব্যবসা করতেন।
মাহিন বারটেক হাইলেট নামের তার একটি প্যান্টের বাটন লাগানোর প্রতিষ্ঠান ছিলো। কোরবানির ঈদ মায়ের সাথে করতে ঈদের আগের দিন বাড়িতে আসেন। ঈদের পরদিন মঙ্গলবার হাল্কা জ্বর অনুভব করেন। স্থানীয় ফার্মেসি থেকে জ্বরের ওষুধও খান। কিন্তু জ্বরের তীব্রতা আরও বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে গত বৃহস্পতিবার কিশোরগঞ্জ শহরে র মিডটাউন প্রাইভেট হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষা করে জানতে পারেন তিনি ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত। ওইদিনই ভর্তি হন কিশোরগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতালে। ওই হাসপাতালে দুইদিন চিকিৎসা নেয়ার পর অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে গত রোববার সকালে তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। পরে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মারা যান রাসেল। সোমবার জোহর নামাজের পর চরটেকী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জানাজা নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়। সোমবার দুপুরে সরজমিনে রাসেলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, শোকে স্তব্ধ পুরো বাড়ি। রাসেলের মারা যাওয়ার খবর শুনে দূর-দূরান্তের আত্মীয়-স্বজনসহ স্থানীয় লোকজন তাদের বাড়িতে এসেছেন। রাসেলের মা ও স্ত্রীকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন কেউ কেউ। ঘরের এক কোনে তিন মাস বয়সী বাচ্চাকে নিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে বসে রয়েছেন রাসেলের স্ত্রী মুন্নী। রাসেলের মা আঙ্গুরা খাতুন বলেন, তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে সোহেল সৌদি আরব থাকেন। ছোট ছেলে রাসেল ঢাকায় একটি ছোটখাটো ব্যবসা করতো। ঈদে বাড়িতে এসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে রাসেলের মৃত্যু হয়। এতে পুরো পরিবার শোকে স্তব্দ। তিনি আরও বলেন, ১২ বছর আগে স্বামীকে হারিয়েছি। এখন হারালাম ছেলেকে। এত কষ্ট সইবো কি করে।
রাসেলের স্ত্রী মুন্নী জানান, রোববার সকালে মুঠোফোনে রাসেলের সাথে তার শেষ কথা হয়। ওই সময় রাসেল তাকে বলে, ‘আমি আর বাঁচব না, আমার জন্য দোয়া কর। কোন দাবি-দাওয়া রেখো না।’ বিকেলেই খবর পাই উনি (রাসেল) আর নেই। তিনি আরও জানান, ২০০৯ সালে তাঁদের বিয়ে হয়। মাহিন নামে আট বছরের এক ছেলে ও তিন মাস বয়সী মাহিয়া নামে এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। রাসেল এভাবে অকালে চলে যাবে ভাবতেও পারিনি। অভাবের সংসার, ছেলে-মেয়ে নিয়ে আমি এখন কীভাবে চলবো।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর