কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক। ফোরলেইন কুমিল্লা টমছম ব্রিজ থেকে বেগমগঞ্জ পর্যন্ত ৫৯ কি.মি. রাস্তা। আগামী ২০২০ সালের ৩০শে জুনের মধ্যে প্রকল্প কাজটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারবে না বলে স্বীকার করেন সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী। এ ছাড়া লাকসাম বাইবাস সড়কে ওয়ান ওয়ে ওয়ান রাস্তা নির্মাণের সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে বলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম জানান। পদুয়া বাজার (বিশ্বরোড) থেকে লাকসাম অংশ পর্যন্ত রাস্তাটি বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়ে যানবাহন চলাচলে মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে। ৪৫ কি.মি. রাস্তা অতিক্রম করতে দেড় থেকে ২ ঘণ্টা সময় লাগে। এ ছাড়াও রয়েছে সড়কে অবৈধ সিএনজির দাপট। থানায় থানায় মাসোহারা দিয়ে চলছে এ যানবাহন।
সড়ক ও জনপথ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লা টমছম ব্রিজ থেকে বেগমগঞ্জ পর্যন্ত ৫৯ কি.মি. রাস্তা। এর মধ্যে কুমিল্লা অংশে ৪৫ কি.মি. ও নোয়াখালী অঞ্চলে ১৪ কি.মি.। ফোরলেইনে রাস্তা নির্মাণ করার জন্য ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ১৭০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। কাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালের ৩০শে জুন। কুমিল্লা থেকে লালমাই পর্যন্ত এবং লাকসামের পর খিলা, নাথেরপেটুয়া, বিপুলাসার রাস্তার মাটির কাজ প্রায় সমাপ্ত। কিছু কিছু অংশ পাকাকরণ কাজ শেষ হয়েছে। বাগমারা বাজার ও লাকসামের বাইপাস এলাকা ফোরলেইন করা হলে অনেকের বড় বড় মার্কেট, বিল্ডিং ক্ষতিপূরণসহ জমি অধিগ্রহণ করতে যে পরিমাণ টাকা খরচ হবে তা বিবেচনা করে অনেক কম মূল্যে জমি অধিগ্রহণ করে ওয়ান ওয়ে ওয়ান রাস্তা নির্মাণের সিদ্ধান্ত দেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। তিনি আরো জানান, শিগগিরই জমি অধিগ্রহণসহ টেন্ডার কাজ শুরু হবে। কুমিল্লা পদুয়া বাজার (বিশ্বরোড) এলাকা থেকে লাকসাম পর্যন্ত রাস্তার মাঝে মাঝে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ৪৫ কি.মি. রাস্তা চলাচলে বর্তমান সময় লাগছে দেড় থেকে ২ ঘণ্টা। যানবাহন চলাচলের সময় দেখা যায়, গাড়ি দোলনার মতো দুলছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চালকরা গাড়ি চালাচ্ছে। এ ছাড়াও উক্ত সড়কে দাপটে চলছে সিএনজি, নছিমনসহ তিন চাকার অটো। ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ওই রাস্তা যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা করার জন্য সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের দৃষ্টি আর্কষণ করা হয়েছে। বৈধ সিএনজি ছাড়াও চলছে অবৈধ নম্বরবিহীন সিএনজি। থানায় থানায় রয়েছে ক্যাশিয়ার। ক্যাশিয়ার থেকে টোকেন নিয়ে চলছে মাসের পর মাস নাম্বারবিহীন এসব সিএনজি। অধিকাংশ সিএনজি নির্দিষ্টের চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই করে। এসব সিএনজি মাসিক টোকেন থাকায় ট্রাফিক পুলিশ দেখেও না দেখার মতো চলছে। সিএনজি চালকদের অধিকাংশরই কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। লাকসাম, নাঙ্গলকোট, রামগঞ্জ ও নোয়াখালীর প্রতিদিন এ সড়কে দিয়ে শ’ শ’ যাত্রীবাহী বাস চলাচল করছে। বিশেষ করে লাকসামের তিশা পরিবহন বিশ্বরোড আসলে চালকরা তাদের হেলপার দিয়ে গাড়ি চালিয়ে লাকসাম আসেন। কুমিল্লা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেছেন, গত রোববার হেলপার দিয়ে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর ফলে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে সড়ক জনপথের কুমিল্লা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আহাদ অলি উল্ল্যাহ বলেন, চারলেনের উন্নয়ন কাজের কারণে ধীরগতিতে যানবাহন চলাচল করে। ঈদের পূর্বে রাস্তার কিছু অংশ মেরামত করা হয়েছে। চারলেনের কাজটি আরো ১ বছর সময় বাড়ানো হতে পারে বলে তিনি জানান।