বাংলাদেশ ক্রিকেটে পেস বিভাগ নিয়ে আক্ষেপের শেষ নেই। টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি তিন ফরম্যাটেই পেস বোলারদের দেখা যায় ধুঁকতে। জিম্বাবুইয়ান কোচ হিথ স্ট্রিকের সময় কিছুটা উন্নতির মুখ দেখেছিল বাংলাদেশের পেস বিভাগ। এরপর ক্যারিবীয় পেস বোলিং কিংবদন্তি কোর্টনি ওয়ালশ টাইগারদের সঙ্গে লম্বা সময় কাটালেও দেখেননি আলোর মুখ। ভাষাগত সমস্যার কারণে এই গ্রেট ক্রিকেটারের সঙ্গে বেশ দূরত্ব ছিল পেসারদের। তার বিদায়ের পর গতকাল টাইগারদের পথ দেখাতে দায়িত্ব নিয়েছেন প্রোটিয়া কোচ শার্ল ল্যাঙ্গাভেল্ট। তার সামনেও একই চ্যালেঞ্জ। তবে ল্যাঙ্গাভেল্ট আত্মবিশ্বাসী।
আফগানিস্তানে কোচ হিসেবে কাটানো সময়ের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশ দলে কাজে লাগাতে চান তিনি। জয় করতে চান সব প্রতিবন্ধকতা। মোস্তাফিজুর রহমারদের নিয়ে নিজের পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে ল্যাঙ্গাভেল্ট বলেন, ‘এই চ্যালেঞ্জটা আমার আফগানিস্তানেও ছিল। আমি দেখেছি দল হিসেবে কাজ করার চেয়ে যদি একজন একজন ধরে কাজ করা হয়, খেলোয়াড় অনেক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। আমি জানি এটা কীভাবে সামলাতে হয়।’
বাংলাদেশেও এমন অনেক বোলার আছেন যারা ইংরেজি খুব একটা বোঝেন না। এর মধ্যে দেশের সেরা তরুণ পেসার মোস্তাফিজুর রহমান অন্যতম। দক্ষিণ আফ্রিকার কোচের ইংরেজি ফিজের জন্য কঠিন হবে সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। এমন সমস্যা সমাধানের জন্য হয় কোচকে বাংলা শিখতে হবে নয়তো ক্রিকেটারকে ইংরেজি শেখার ট্রেনিং দিতে হবে। ল্যাঙ্গাভেল্ট কাজটি কীভাবে করবেন সেটির ছক আগেই কষে রেখেছেন। তিনি বলেন, ‘যদি আমার বুঝানো কাজ না হয় তখন তৃতীয় কারও সহায়তা নেবো। আমি ধীরে কথা বলবো, খুব দ্রুত বলবো না। খেলোয়াড় কী বলতে চাইছে মনোযোগ দিয়ে শুনবো। এভাবেই সুসম্পর্ক তৈরি করবো। ফাস্ট বোলারদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যদি কেউ পারিবারিক কথা বলতে চায় সেটিও বলবে। যেটিতে সে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। আমার দুয়ার সব বোলারের জন্য খোলা থাকবে। যদি অনুবাদকের দরকার হয় তাও রাখবো। জানি এটা চ্যালেঞ্জিং। এই চ্যালেঞ্জ উতরে যেতে আমি উন্মুখ।’
নতুন বলে দুর্বলতা বাংলাদেশের পেসারদের পুরনো সমস্যা। ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে পেস সহায়ক উইকেটেও নতুন বলে উইকেট এনে দিতে পারেননি বোলাররা। তাই এই জায়গায় উন্নতির প্রয়োজন দেখছেন বোলিং কোচ। এ ক্ষেত্রে ল্যাঙ্গাভেল্ট আফগান অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চাইছেন। তিনি বলেন, ‘এটা বড় একটি চ্যালেঞ্জ। আফগানিস্তানের দায়িত্বে থাকার সময়ও এটি চ্যালেঞ্জিং ছিল। নতুন বলে উইকেট নিতে পারলে কিন্তু স্পিনারদের কাজ পরে সহজ হয়ে যায়। হতে পারে, ছোট ছোট টেকনিক্যাল দিক নিয়ে কাজ করতে হবে। যেমন ফিজকে (মুস্তাফিজ) নিয়ে বলা যায়। সে বাঁহাতি, সুইং করাতে পারে। একটু কাজ করলেই হবে। টেকনিক্যাল দিক থেকে কাজ করে হোক বা ট্যাকটিক্যাল, নতুন বলে সফল হওয়া জরুরি।’
এছাড়াও পেসার তৈরী করার কথা জানান নয়া কোচ। ল্যাঙ্গাভেল্ট বলেন, একটি আরেকটি কাজ হবে এমন পেসার বের যারা বাংলাদেশের অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশে সফল হতে পারে। ভারতের দিকে তাকালে দেখবেন, ওদের এখন অন্তত এমন তিনজন পেসার আছে যারা দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়ায় ম্যাচ জেতাতে সক্ষম। এমন পেসার বের করতে হবে যারা দেশের বাইরে নিজেদের মেলে ধরতে পারবে এবং দল আরো বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে পারবে। এজন্য আমি অনূর্ধ্ব-১৯ দল নিয়েও কাজ করবো।