× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

প্রত্যাবাসনে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন, তবে...

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ও টেকনাফ প্রতিনিধি
২২ আগস্ট ২০১৯, বৃহস্পতিবার

প্রত্যাবাসনের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশ। চীনের মধ্যস্থতায় আজই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার সময়ক্ষণ নির্ধারিত হয়েছে। তবে রোহিঙ্গাদের রাজি করাতে মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের কক্সবাজার ক্যাম্প পরিদর্শন এবং জাতিসংঘের শরনার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের চেষ্টার ফল এখনও দৃশ্যমান নয়। অর্থাৎ মিয়ানমার যাদের গ্রহণে সম্মতি দিয়েছে তারা যেতে রাজী কি-না? তা এখনও অস্পষ্ট। গতকাল সন্ধ্যা অবধি একটি পরিবারের তরফেও ফিরে যাওয়ার বিষয়ে সম্মতি মিলেনি। কর্মকর্তারা বলছেন, তারা স্বেচ্ছায় যেতে রাজী হলেই কেবলমাত্র পূর্ণ নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে তাদের সীমান্ত পার করে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এটাই বাংলাদেশের একমাত্র কাজ। অন্য কিছু নয়।
মাঠ পর্যায়ে এটারই প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ। তবে তারা রাজী কি-না?

সেই রিপোর্ট বা মতামত গ্রহণ করছে ইউএনএইচসিআর। চূড়ান্ত বিবেচনায় তাদের ওই রিপোর্টই বলবে প্রত্যাবাসন হচ্ছে কি-না? প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের ক্লিয়ারেন্স পাওয়া ৩ হাজার ৪৫০ জন রোহিঙ্গার তালিকা যাচাই বাছাই শেষে ৩৩৯৯জনের ফিরে যাওয়ার সম্মতি আছে কি-না? যাচাই করছে ইউএনএইচসিআর। উল্লেখ্য, গত নভেম্বরে রোহিঙ্গাদের প্রতিবাদের মুখে প্রত্যাবাসন পরিকল্পনা স্থগিত হয়ে যায়। আজকে এটি দ্বিতীয় চেষ্টা। সূত্র মতে, দুই দফায় দুই শতাধিক রোহিঙ্গা পরিবার ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। সাক্ষাৎকারে বেশিরভাগই জানিয়েছেন, দাবি পূরণ না হলে তারা মিয়ানমারে ফিরবে না। ফলে প্রত্যাবাসন প্রস্ততি সত্ত্বেও অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারের শরনার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন (আরআরআরসি) ও ইউএনএইচসিআর মঙ্গল ও বুধবার দু’দিনে টেকনাফের শালবাগান রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এ সাক্ষাৎকার সম্পন্ন করেন। তালিকায় থাকা ৯৫ ভাগ রোহিঙ্গাদের মাঝে প্রত্যাবাসনের বার্তা পৌঁছানো হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রত্যাবাসনের জন্য কেরুনতলী ও ঘুমধুম ঘাট প্রস্তুত রয়েছে। প্রত্যাবাসনকে কেন্দ্র করে সেনা, বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ ও আনসারের টহল জোরদার রয়েছে।

গতকাল টেকনাফে শালবাগান রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরেও ওই প্রস্তুতি দেখা গেছে। শালবাগান সিআইসি (ক্যাম্প ইনচার্জ) অফিসে সাক্ষাৎকার প্রদান শেষে ফেরার পথে রোহিঙ্গা মোঃ আলম, ইসমাইল, নুর বাহার, নুরুল ইসলাম, নুর হাসান, শব্বির আহমদের সঙ্গে কথা হলে তারা দাবি দাওয়া পূরণ হলে মিয়ানমারে ফিরে যাবেন বলে জানান। অন্যথায় তারা স্বদেশে ফিরতে রাজি নয়। তাদের এ দাবী দাওয়া গুলোর মধ্যে সরাসরি নাগরিকত্ব প্রদান, ভিটে-বাড়ি ও জমি-জমা ফেরত, আকিয়াব জেলায় আশ্রয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের নিজ বাড়িতে ফেরত, কারাগারে বন্দি রোহিঙ্গাদের মুক্তি, হত্যা, ধর্ষনের বিচার, অবাধ চলাফেরা, নিরাপত্তা প্রদানসহ একাধিক শর্ত । তবে এসব রোহিঙ্গাদের সবাইকে একই সুরে কথা বলতে দেখা গেছে। অনেকটা শেখানো বুলি’র মত। এদিকে প্রত্যাবাসন বিরোধী একটি চক্র ক্যাম্পগুলোতে সক্রিয় রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের চোখ রাঙ্গানীতে তটস্থ সাধারন রোহিঙ্গারা। এমনকি তারা উচ্চ স্বরে ক্‌থা বলতেও শঙ্কিত। অদৃশ্য এ চক্রের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে রাজি নয়। প্রত্যাবাসনের রাজি ১০-১৫টি পরিবারের খবর জানা গেলেও স্পস্ট কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। টেকনাফ নয়াপাড়া শালবন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের (নং- ২৬) ইনচার্জ মোঃ খালিদ হোসেন জানান, দুই দিনে ২৩৫ পরিবার প্রধানের সাক্ষাৎকার গ্রহন করা হয়েছে। এর মধ্যে মঙ্গলবার ২১ পরিবার সাক্ষাৎকার দিয়েছে। তবে এদের মধ্যে কত পরিবার প্রত্যাবাসনের জন্য রাজি হয়েছে তা সাক্ষাৎ প্রক্রিয়া শেষে জানা যাবে বলে জানান তিনি। আবার আগের দিনের চেয়ে সাক্ষাৎকার প্রদানে রোহিঙ্গাদের আগ্রহ বেড়েছে। টেকনাফ র‌্যাবের কোম্পানী কমান্ডার লেঃ মির্জা শাহেদ মাহতাব জানান, র‌্যাবের তিনটি টহল দল রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সার্বক্ষনিক তৎপর রয়েছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিরোধী উস্কানীমুলক কর্মকান্ড ঠেকাতে কাজ করছে তারা।  

প্রত্যাবাসনে প্রস্তুত টেকনাফের কেরুনতলী ও ঘুমধুম ঘাট: এদিকে প্রত্যাবাসনের জন্য টেকনাফের কেরুনতলী ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমঘুম ঘাট প্রস্তুত রয়েছে। নাফ নদীর কিনারে কেরুনতলী প্রত্যাবাসন ঘাটে রোহিঙ্গাদের সাময়িক অবস্থানের জন্য ৩৩ টি ঘর ও অন্যান্য সুবিধাদি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জলপথে প্রত্যাবাসন হলে এঘাট দিয়েই রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো হবে। তবে বৈরি আবহাওয়ার কারণে এ ঘাটটি এখনই ব্যবহার করা  হচ্ছে না বলে জানানো হয়েছে। অপরদিকে স্থল পথে প্রত্যাবাসন হলে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ঘাট দিয়ে রোহিঙ্গাদের স্বদেশ ফেরত পাঠানো হবে। চুক্তি অনুযায়ী একটি পয়েন্ট দিয়ে দিনে ১৫০জন রোহিঙ্গা ফেরার কথা।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর