× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

রংপুরে প্রসূতির পেটে সুই রেখে অস্ত্রোপচার

বাংলারজমিন

স্টাফ রিপোর্টার, রংপুর থেকে
২৩ আগস্ট ২০১৯, শুক্রবার

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক হতদরিদ্র প্রসূতির পেটে সুচ রেখে অস্ত্রোপচারের ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। সাংবাদিকরা হাসপাতালে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে তড়িঘড়ি করে হাসপাতালের চিকিৎসকরা ওই রোগীর পেট থেকে সুচ বের করেন। চিকিৎসকের অবহেলায় এমন ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন সচেতনরা। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও রোগীর স্বজন সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দেড় বছর আগে সদর উপজেলার পাগলীর এলাকার ইদ্রিস আলীর ছেলে তানজিদ হোসেনের সঙ্গে একই উপজেলার পানবাজার এলাকার আমিনুর রহমানের মেয়ে আফরোজা বেগমের (১৯) বিয়ে হয়। গত মঙ্গলবার রাতে গর্ভবতী  আফরোজার প্রসব বেদনা উঠলে বিকাল ৩টার দিকে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই ওয়ার্ডে আফরোজাকে নরমাল ডেলিভারি করানোর চেষ্টা করা হয়। বাচ্চা তুলনামূলক বড় হওয়ায় আফরোজার জরায়ু ও মলদ্বারের কিছু অংশ কেটে একটি কন্যা সন্তান প্রসব করানো হয়। এরপর রক্তক্ষরণ হতে থাকলে দুই ঘণ্টা পর অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে রোগীর শরীর অবশ না করেই সেলাই দেয়া হয়।
এ সময় সুচ পেটের ভিতরে রেখেই সেলাই করা হয়। আফরোজার শাশুড়ি রঞ্জিনা বেগম (৩২) বলেন, আফরোজার নিচের অংশ কেটে বাচ্চা প্রসব করার পর আমি সেলাই দিতে বলি। তখন অনেক রক্ত ঝরছিল। তারা রক্ত আনতে বললে, আমরা রক্ত পাচ্ছিলাম না। কোনোভাবে রক্ত ম্যানেজ হলেও রোগীকে রক্ত না দিয়ে হাসপাতালের লোকজন অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে আফরোজাকে ২ ঘণ্টা ফেলে রেখেছিল। রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে আমরা অন্য হাসপাতালে নেয়ার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করে হাসপাতালে এসে দেখি তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়েছে। সেখানে আফরোজাকে তারা শরীর অবশ না করেই অমানবিকভাবে কাটা-ছেঁড়া স্থানে সেলাই দিয়েছে। সেলাই করার পর হাসপাতালের লোকজন বলেন পেটের ভিতরে সুই রয়ে গেছে। আমরা ডিজিটাল এক্সরে করে দেখি পেটের ভিতরে সুই আছে। রোগী খুবই গরিব মানুষ, সে সুস্থ  হয়ে বাড়ি ফিরুক এটাই আমাদের চাওয়া ছিল। ভুক্তভোগী আফারোজা জানান, অপারেশনের পর আমার পেট ব্যথা করছিল। পেটে সুচের গুঁতা লাগছিল। অপারেশন থিয়েটারে দুই ঘণ্টা আমাকে হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা ফেলে রেখেছিল। আমার জরায়ুর দিকে ৪ বার কেটে সেলাই দিয়েছে। পরে তারাই বলছিল যে সুইটা পাওয়া যাচ্ছে না। এ ঘটনাটি চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে হাসপাতালের গাইনি বিভাগে সাংবাদিকরা ভিড় করেন। সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের মুখে হাসপাতালের চিকিৎসকরা বেলা ৩টায় অপারেশন করে আফরোজার পেট থেকে সুচ বের করে আনে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শারমিন সুলতানা লাকি বলেন, রোগীকে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হয়েছে। তার পেটে সুচ রয়েছে কি না, এটি দেখার জন্য গত বুধবার রোগীর স্বজনদের এক্সরে করতে বলা হয়েছিল। তারা কালক্ষেপণ করে রোগীকে সমস্যায় ফেলেছে। আমরা এক্সরে রিপোর্ট দেখে পেটে সুচ দেখতে পাই এবং অপারেশনের ব্যবস্থা করি। এখন রোগী ভালো রয়েছে। এটি অসাবধানতাবশত হয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর