নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার আশুজিয়া জেএনসি একাডেমির নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী দীপ্তি রানী সূত্রধর অপহরণ নয় প্রেমের টানেই ঘর ছাড়ে। পুলিশ দীপ্তিকে উদ্ধার করে গতকাল থানায় এনে অপহরণ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রেমের টানে ঘর ছাড়ার বিষয়টি পুলিশকে জানায়। উপজেলার পাড়াদুর্গাপুর গ্রামের শিরীষ সূত্রধরের মেয়ে দীপ্তি (১৬)।
সূত্রে জানা যায়, কেন্দুয়া উপজেলার বলাইশিমুল ইউনিয়নের পাড়াদুর্গাপুর গ্রামের শিরিষ সূত্রধরের কন্যা দীপ্তি রানী সূত্রধর আশুজিয়া জেএনসি একাডেমির নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার সিংরাউন্দা গ্রামের আবদুল হাইয়ের ছেলে রড মিস্ত্রি আবদুল হান্নানের সঙ্গে দুই বছর আগে রং নম্বরে পরিচয় ঘটে এবং এ থেকেই দুইজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ১৬ই জুলাই স্কুলের নাম করে উধাও হয় দীপ্তি। এদিকে দীপ্তিকে অপহরণ করা হয়েছে এই মর্মে তার বাবা শিরিষ সূত্রধর বাদী হয়ে কেন্দুয়া থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামি করা হয় আশুজিয়া গ্রামের সুজিত বর্মণ, প্রদীপ বর্মণ ও সহপাঠী মনি বর্মণকে।
মামলা দায়ের পর পুলিশ সুজিত বর্মণ গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলা হাজতে পাঠিয়েছেন। মামলা দায়েরের পর পুলিশ তদন্তে গিয়ে প্রযুক্তি ব্যবহার করে জানতে পারেন দীপ্তি পালিয়ে যাওয়ার আগে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে প্রায় বিশজনকে মেসেজ দেন। যে কারণে অনেক বেগ পেতে হয়েছে তদন্তকারী কর্মকর্তা। এদিকে গোপন সংবাদের খবর পেয়ে বুধবার গভীর রাতে গাজীপুর চৌরাস্তা এলাকায় অভিযান চালিয়ে দীপ্তি রানীকে উদ্ধার করে গতকাল কেন্দুয়া থানা পুলিশ ২২ ধারা জবানবন্দির নেত্রকোনা আদালতে পাঠানো হয়েছে।
দীপ্তি রানী জানায়, কেউ তাকে অপহরণ করেনি। তার সঙ্গে মোবাইল ফোনের রং নম্বরে পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আর প্রেমের টানেই সেদিন আশুজিয়া থেকে আমি ঈশ্বরগঞ্জ চলে যাই। সেখান থেকে প্রেমিক রড মিস্ত্রি আবদুল হান্নানের সঙ্গে পালিয়ে গাজীপুরের টঙ্গী গিয়ে নাম পরিবর্তন করে সানজিদা আক্তার রুনা নাম ধারণ করে মুসলমান হই এবং মুন্সি দিয়ে বিয়ে পড়ানোর পর স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করছিলাম। এক প্রশ্নে জবাবে দীপ্তি বলে আমি বাবার কাছে যাব না। স্বামীর বাড়ি যেতে চাই। কেন্দুয়া থানা ওসি মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান বলেন, স্কুলের নাম করে দীপ্তি বাড়ি থেকে উধাও হলে তার বাবা অপহরণ মামলা দায়ের করেন। সে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে বিয়ে করাসহ হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে মুসলমান হওয়ার কথা জানিয়েছে। ২২ ধারা জবানবন্দির জন্য দীপ্তিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।