× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সংসদ সচিবালয়ের মেডিকেল সেন্টারে সাবেক এমপিদের চিকিৎসা সেবা বন্ধের নির্দেশনা

এক্সক্লুসিভ

কাজী সোহাগ
২৪ আগস্ট ২০১৯, শনিবার

সাবেক এমপি, তাদের পরিবার, আত্মীয়স্বজন এমনকি বন্ধুদের চিকিৎসা সেবার জন্য আনা হচ্ছে সংসদ সচিবালয়ের মেডিকেল সেন্টারে। করানো হচ্ছে নানা ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা। নেয়া হচ্ছে ওষুধপত্র। আর এসবই হচ্ছে একদম ফ্রি। কারণ সংসদের মেডিকেল সেন্টারে বিল করা বা টাকা নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। এই সুবিধা পেতেই সাবেক এমপিরা অনেকটা দৌঁড়ঝাপ করেন এখানে চিকিৎসা সেবা পেতে। ফ্রি চিকিৎসা সেবা ও ওষুধের পাশাপাশি এখানে কর্মরত চিকিৎসকদের কাছ থেকে নানা ধরনের সেবা নিতেও তৎপর থাকেন তারা। বিশেষ করে টেলিফোনে নানা রোগের পরামর্শ নেন।
আবার কোনো রোগীকে কোনো মেডিকেলে ভর্তি করানোর সময়ও চিকিৎসকদের শরনাপন্ন হন সাবেক এমপিরা। কখনো অন্য চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনের ওষুধও মেডিকেল সেন্টার থেকে নেয়ার চেষ্টা করেন। এতে হিমশিম খেতে হচ্ছে মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসকদের। ভিআইপি হওয়ায় তারাও কিছু বলতে পারেন না। সংসদ সচিবালয় জানিয়েছে, নিয়ম অনুযায়ী সংসদের মেডিকেল সেন্টার থেকে চিকিৎসা সেবা পেতে পারেন সংসদের বর্তমান এমপি ও সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কিন্তু সাবেক এমপিরাও যেভাবে এখান থেকে চিকিৎসা সেবা নেয়ার চেষ্টা করেন তা সত্যিই দুঃখজনক। নিয়মটি তারা জানার পরও সেবা নিতে তৎপর থাকেন। এ পরিস্থিতিতে সংসদের মেডিকেল সেন্টার থেকে সাবেক এমপিদের চিকিৎসা সেবা বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে সংসদ সচিবালয়। পরিস্থিতি সামলাতে জরুরি বিজ্ঞপ্তি হিসেবে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। ওই নির্দেশনা লাগানো রয়েছে মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসকদের টেবিলের গ্লাসের নিচে। এতে বলা হয়েছে,‘বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয় মেডিকেল সেন্টারের সকল চিকিৎসকদের অবগতির জন্য জানানো যাইতেছে যে,এক্স-এমপিদের চিকিৎসা সংসদ মেডিকেল সেন্টার হতে না দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো। এ ব্যাপারে সিরিয়াস অডিট অবজেকশন রয়েছে এবং মাননীয় স্পিকার স্যারের অফিস হতে অক্টোবর ২০১৮ হতে এক্স এমপিদের কোনো প্রকার চিকিৎসা এবং ওষুধ সুবিধা না দেয়ার জন্য সরাসরি নিষেধ করা হয়েছে।’ কিন্তু এ ধরনের নির্দেশনাও কোনো কাজে লাগছে না বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেন, এরপরও সাবেক অনেক এমপি আসছেন চিকিৎসা সেবা পেতে। আবার অনেকে মেডিকেল সেন্টারের অধীনে থাকা অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারের সুযোগ চান। বিষয়গুলো বিব্রতকর বলে জানান মেডিকেল সেন্টারে কর্মরত চিকিৎসকরা। এ প্রসঙ্গে মেডিকেল সেন্টারের চীফ মেডিকেল অফিসার ডা. মো. রফিকুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, চিকিৎসক হিসেবে আমরা সেবা দিয়ে থাকি। কেউ আসলে তাকে ফিরিয়ে দিতে পারি না। সংসদ সচিবালয় যে নিয়ম জারি করেছে সেটা মানা প্রয়োজন বলে তিনি জানান। এদিকে সংসদ সচিবালয় জানিয়েছে, ফ্রি ওষুধ দেয়ার কারণে এর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। প্রতি বছরই ওষুধ কিনতে বাজেট বাড়ানো লাগছে। সংসদে এমপি রয়েছেন ৩৫০ জন, সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারী আছেন ১২শ জন। প্রতিটি পরিবারে অন্তত ৫ জন সদস্য হিসেব করলে সংখ্যা দাঁড়ায় ৬ হাজার। একইভাবে এমপিদের পরিবারের সদস্য হয় ১৭শ। অর্থাৎ সবমিলিয়ে সংখ্যা হয় প্রায় ৮ হাজার। অথচ ২০১৮ সালে সংসদের এই মেডিকেল সেন্টার থেকে ৯৪ হাজার রোগী দেখা হয়েছে। তাদেরকে বিনামূল্যে ওষুধ দেয়া হয়েছে। এটা এক ধরনের রেকর্ড বলে জানান সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্টরা। একইভাবে ওষুধ কেনার ক্ষেত্রেও রেকর্ড তৈরি হচ্ছে। গত বছর ১ কোটি ৮৪ লাখ টাকার ওষুধ দেয়া হয়েছে চিকিৎসা সেবা প্রাপ্তিদের। চলতি বছর প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকার ওষুধ প্রয়োজন হতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। সংশ্লিষ্টরা জানান, ১৪ জন চিকিৎসক রয়েছেন সংসদ সচিবালয়ের মেডিকেল সেন্টারে। এর মধ্যে ৭ জন কনসালটেন্ট, ৫ জন মেডিকেল অফিসার, একজন ডেন্টাল সার্জন ও একজন চীফ মেডিকেল অফিসার।

অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর