× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

একই পরিবারের সবাই ডেঙ্গু রোগী

শেষের পাতা

রাশিম মোল্লা
২৪ আগস্ট ২০১৯, শনিবার

দুপুর ২টা। মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর ভবন। রাজধানীর ধোলাই খালের দনিয়ার বাসিন্দা মশিউর রহমান পারভেজ। সাতদিন আগে তিনি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন। তিনি জানান, দুই ছেলে আর স্বামী-স্ত্রী মিলে তাদের সংসার। প্রথমে তিনি নিজে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন। দিন পার হতে না হতেই আক্রান্ত হন বড় ছেলে শান্ত। এরপর আক্রান্ত হন ১১ বছরের ছেলে আফসার।
বাকী ছিল স্ত্রী আয়শা। গত পরশু তিনিও আক্রান্ত ডেঙ্গু রোগে। এলাকার বেশ কয়েকটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন তারা। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। পরে গতকাল সবাই মিলে ভর্তি হয়েছেন স্যার সলিমুল্লাহ মিটফোর্ট হাসপাতালে। তিনি জানান, বড় ছেলে ও তিনি ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালের তিন নম্বর ভবনের নিচ তলায়। সিট না পেয়ে ওয়ার্ডের প্রবেশদ্বারের গলির ভিতরে ফ্লোরিং করতে হয়েছে তাদের। ছোট ছেলে আফসার ভর্তি হয়েছে ১ নম্বর ভবনের শিশু বিভাগে। আর স্ত্রী আয়শাকে ভর্তি করা হয়েছে ২ নম্বর ভবনে। ভাগিনার সহায়তায় হাসপাতালের তিনটি ভবনে ডেঙ্গুর চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা । ডেঙ্গু আক্রান্ত পারভেজ জানান, তাদের এলাকার আরো অনেকেই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে। এলাকাবাসী কাউন্সিলরকে মশার ওষুধ ছিটাঁনোর জন্য দাবি জানিয়েছে। কাউন্সিলর বলেন, আমি ওষুধ না পেলে ছিটাবো কি করে। ওষুধ ছিটানোর কাজ তো আমার নয়। এখন পর্যন্ত কোনো ওষুধ ছিটানো হয়নি তাদের এলাকায় । তার মতো আরো অনেকেই এই হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন। তাদেরও একই কথা মশার ওষুধ ছিটানো হয়না তাদের এলাকাতে।  চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতালের চিকিৎসক নার্সদের। ঈদের ছুটি বাতিল হয়েছে। সরকারি ছুটিও পান না তার। এমন অভিযোগ তাদের।

সূত্র জানায়, বুধবার রাতে মিটফোর্ড হাসপাতালে ডেঙ্গু সেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুই নারীর মৃত্যু হয়। নিহতরা হলেন- কেরানীগঞ্জ মডেল থানার জিনজিরা এলাকার তাসমীম (১৭) ও কদমতলী থানার জুরাইন এলাকার তাসনিন (৩৫)।  এর আগে ১৫ই জুলাই থেকে ১৬ই আগস্ট পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ৭ জন ডেঙ্গু রোগী। এরা হলেন, মাদারীপুরের জুলহাস, সিরাজদিখানের আনোয়ার হোসেন, বঙ্গবাজারের কাফিয়া এবং কেরানীগঞ্জের তিনজন সৌরভ, কায়েব ও ফাহিম।  এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ঢাকা দক্ষিণ এলাকার ডেমরা, শ্যামপুর, কদমতলী, সুত্রাপুর, লালবাগ ও হাজারীবাগের ১৭ থানা ও কেরানীগঞ্জ, নবাবগঞ্জ, দোহার ও সিরাজদিখানের ৪ থানাসহ মোট ২১ থানার ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

 স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, শুক্রবার পর্যন্ত মিটফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ২৯২০ জন ডেঙ্গু রোগী। ডিসচার্জ হয়েছে ২৫২১ জন। নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ৭১ জন ডেঙ্গু রোগী। বৃহষ্পতিবার ভর্তি হয়েছে ১০২ জন ডেঙ্গু রোগী। বুধবার ভর্তি হয়েছেন ৫৫ জন। পরিসংখ্যানে পর্যালোচনা করে দেখা যায়, মিটফোর্ড হাসপাতালে কোনো দিন বাড়ছে, কোনো দিন কমছে। কর্তব্যরত নার্সরা জানান, গতকাল ইউনিট ৪,৮ এ নতুন ৩২ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। এদের বেশিরভাগ রোগী কেরানীগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা।  ভবনের ৫ম তলায় বুধবার লতা নামে কেরানীগঞ্জের এক বাসিন্দা মারা গেছেন। তারা আরো জানান, তাদের বেশ কয়েকজন সহকর্মীও ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এরা হলেন ইশরাত, পূর্নিমা, সামছুন নাহার, মরিয়ম আক্তার সুমি, খালেদা। ১ নম্বর ভবনের শিশু বিভাগে গতকাল ৩ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে ১ নম্বর ইউনিটে ২৩ জন, ২ নম্বর ইউরিটে ৩৯ জন ও ৩ নম্বর ইউনিটে ৩৪ জন ডেঙ্গু চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদের একজন ফাহিম। সে মাদরাসায় পড়ালেখা করে। ১০ দিন ধরে তার চিকিৎসা চলছে। এই ভাল হয়ে যায় আবার রাতে প্রচন্ড জ্বর উঠে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর