× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের গুলিতে যুবলীগ নেতা নিহত, বিক্ষোভ, ভাঙচুর

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ও টেকনাফ প্রতিনিধি
২৪ আগস্ট ২০১৯, শনিবার

রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করেছে টেকনাফ যুবলীগ নেতা ওমর ফারুককে। এ ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে টেকনাফ। ফারুক হত্যার প্রতিবাদে স্থানীয়রা বিক্ষোভ করে। পাঁচ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে। এ অবস্থায় অচল হয়ে পড়ে টেকনাফ। বৃহস্পতিবার রাতে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে স্থানীয় ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা ওমর ফারুককে (২৯)। এই ওমর ফারুকই ২০১৭ সালে আগস্টের শেষের দিকে টেকনাফের জাদীমুরা এলাকায় পালিয়ে আসা শতশত রোহিঙ্গা পরিবারকে আশ্রয় ও মুখে খাবার তুলে দিয়েছিলেন। দুই বছরের মধ্যেই সেই তাকেই নির্মমভাবে খুন করল ওই রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা।
এই হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মী ও গ্রামবাসীরা সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

নিহত যুবলীগ নেতা ওমর ফারুক টেকনাফ হ্নীলা ইউনিয়নের জাদীমুড়া গ্রামের আবদুল মোনাফ কোম্পানীর ছেলে ও হ্নীলা ৯ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি এবং জাদীমুরা এম,আর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০ টারদিকে জাদিমুরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তাকে হত্যা করা হয় ।

স্থানীয়রা জানায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০ টায় রাতের খাবার শেষে পার্শ্ববর্তী স্থানে নির্মানাধীন একটি ট্রেনিং সেন্টারের জন্য সড়কের উপর রাখা ইট সরাতে যান ওমর ফারুক। এ অবস্থায় কয়েকজন লোক তার দিকে এগিয়ে আসলে তিনি টর্চের আলো ফেলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী সেলিমের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন তাকে ঘিরে ধরে মারধর ও পায়ে গুলি করে। এ সময় ওমর ফারুক বাঁচার জন্য তাদের হাতে পায়ে ধরে আঁকুতি মিনতি করেও রেহাই পায়নি। বরং সেখান থেকে আরো কয়েক গজ দুরে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে একে একে পা, মাথা, পেট ও কাঁধে ৫টি গুলি করে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু নিশ্চিত করে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা আরো ১০-১২ টি ফাঁকা গুলি চালিয়ে পাহাড়ের আস্তানার দিকে চলে যায়। পরে খবর পেয়ে নিহতের বড় ভাই ওসমান, ইসমাইল, আমির হামজাসহ স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে কক্সবাজার মর্গে প্রেরণ করেন।

এদিকে যুবলীগ নেতাকে হত্যার প্রতিবাদে গতকাল সকাল থেকে জাদিমুরাসহ পুরো ৯নং ওয়ার্ডে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করে গ্রামবাসী। এসময় বিক্ষুব্ধ জনতা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়, রোহিঙ্গাদের সহায়তাকারী বিভিন্ন এনজিও সংস্থার সাইনবোর্ড, অফিস, নয়াপাড়ায় রোহিঙ্গাদের ডাটা এন্ট্রি অফিস, এসিএফ অফিসের মাইক্রোবাস, ডব্লিউএফপি ফুড শপ, টেরিডাস হোম হাসপাতাল ভাঙচুর করে। সকাল থেকে শুরু হওয়া অবরোধে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে দুপুর সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। অবরোধ চলাকালিন টেকনাফ মডেল থানার ওসির নেতৃত্বে একদল পুলিশ ও টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নুরুল আলম, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবুল মনসুর, কক্সবাজার জেলা যুবলীগের সভাপতি সোহেল আহমদ বাহাদুর, হ্নীলা ইউপির নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং বিক্ষুদ্ধ জনতাকে এঘটনার সুষ্টু তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়ে অবরোধ তুলে নেন। এসময় শোক সন্তুপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান তারা।

নিহতের পিতা আবদুল মোনাফ কোম্পানী জানান, মানবিকতার কারণে যাদের আশ্রয় দিয়েছি তারাই আমার আদরের সন্তানকে খুন করেছে। এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর কি হতে পারে। তিনি এ হত্যাকান্ডে জড়িত চিহ্নীত রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী জানান।
হ্নীলা ইউপির চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানান, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা স্বদেশে ফিরে না যেতে নানা তাল বাহনা শুরু করেছে। এর ধারাবাহিকতায় সন্ত্রাসীরা স্থানীয় যুবলীগ সভাপতিকেও খুন করে। এর ফলে গোটা এলাকায় স্থানীয় বাংলাদেশীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।

এব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ প্রদীপ কুমার দাস জানান, যুবলীগ নেতা হত্যাকান্ডে জড়িতদের দ্রুত সময়ে আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর