× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

চট্টগ্রাম বন্দর পর্যবেক্ষণে আইএমওর তদন্ত দল

এক্সক্লুসিভ

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
২৫ আগস্ট ২০১৯, রবিবার

আন্তর্জাতিক বন্দরে আইএসপিএস কোড অনুযায়ী নিরাপত্তা কর্মসূচি পর্যবেক্ষণে জাতিংসংঘের অঙ্গ সংস্থা আইএমওর তদন্ত দল এখন চট্টগ্রাম বন্দরে। গতকাল বিকালে আইএমওর পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্র কোস্টগার্ডের তিন সদস্যের গঠিত তদন্ত দল চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, তদন্ত কমিটি রোববার ও সোমবার আইএসপিএস কোড অনুযায়ী চট্টগ্রাম বন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ ৪২টি স্থাপনার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করবেন। একই সঙ্গে তারা প্রশিক্ষণ প্রদান এবং দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনাসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।
এর আগে আইএমওর পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিভিন্ন দুর্বলতা চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা (আইএসপিএস কোড) নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। নিরাপত্তা কর্মসূচি জোরদারের আওতায় ২০১৭ সালের ১১ ও ১২ই সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করা হয়।

এ সময় চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি দূর করতে ১৬ দফা নির্দেশনা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ডের প্রতিনিধিদল। তবে এসব নির্দেশনার বেশিরভাগই বাস্তবায়ন করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বন্দরের নিরাপত্তা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মেজর মো. রেজাউল হক জানান, বন্দরের নিরাপত্তা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত করতে ৪৫৯টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।
সিটিএমএস, ভিটিএমআইএসসহ বিভিন্ন পর্যায়ে অটোমেশন, মোবাইল ভেহিক্যাল স্ক্যানার সংগ্রহ, অ্যাম্বুলেন্স শিপ সংগ্রহ, ডিজিটাল পাস ইস্যুর মাধ্যমে বন্দরে প্রবেশের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

রপ্তানি পণ্যভর্তি কনটেইনার স্ক্যানিংয়ের জন্য কাস্টম হাউজ কর্তৃপক্ষ দুইটি নতুন স্ক্যানার সংগ্রহ করা হয়েছে। আধুনিক সব হ্যান্ডলিং ইক্যুইপমেন্ট সংগ্রহ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত লক্ষাধিক মানুষের ডাটাবেস গড়ে তোলা হয়েছে। ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষকে অটোমেটেড ডিজিটাল এন্ট্রি পাস দেয়া হয়েছে।

তিনি জানান, বন্দরের যেসব নিরাপত্তাব্যবস্থা উন্নত করার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল সেগুলোর বাস্তবায়ন শুরু হয় ২০০৪ সালের ১লা জুলাই। ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলার পর জাতিসংঘের অধীন আন্তর্জাতিক নৌ সংস্থা বিভিন্ন বন্দরের নিরাপত্তাসংক্রান্ত ব্যবস্থা বা আইএসপিএস কোড (জাহাজ ও বন্দর স্থাপনার নিরাপত্তাঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম) প্রণয়ন করে। জাহাজ বা কনটেইনারে বিপজ্জনক পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে যাতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করা না হয়, সেজন্যই এই নিরাপত্তাব্যবস্থা নেয়া হয়। বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৪৮টি দেশের বন্দরে তা বাস্তবায়িত হয়েছে।

বাংলাদেশে আইএসপিএস কোড বাস্তবায়ন সংক্রান্ত কমিটির প্রধান সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডর আরিফুল ইসলাম বলেন, প্রতিনিধিদলটি নিরাপত্তার যে বিষয়গুলো দেখতে চেয়েছে, তা উন্নত করে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এটি অব্যাহত থাকবে। এক দিনে সব পরিবর্তন হয়তো করা যাবে না। তবে জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।
তিনি বলেন, রোববার ও সোমবার সরজমিনে বন্দর, বিভিন্ন ডিপোসহ ৪২টি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা পরিদর্শন করবে তদন্ত প্রতিনিধিদল। তাদের চোখে বন্দরের নিরাপত্তায় কোনো ঘাটতি ধরা পড়লে পণ্য পরিবহনে বাড়তি নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে।

তবে সেটি হলে বন্দরে জাহাজ আগমন থেকে শুরু করে বৈদেশিক বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা।
তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর বন্দর ও জাহাজীকরণ বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বন্দরের নিরাপত্তা বিষয়ে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া দরকার। কারণ এর সঙ্গে বৈদেশিক বাণিজ্য জড়িত।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল জুলফিকার আজিজ বলেন, বর্তমানে বন্দরের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড় কোনো ঘাটতি নেই। নিরাপত্তাব্যবস্থা উন্নত করতে বন্দরের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। কিছু কিছু নির্দেশনা বাস্তবায়নাধীন আছে। পণ্য খালাসের পদ্ধতি বন্দরের বাইরে নেয়ার জন্য বে-টার্মিনালে ইয়ার্ড নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, আইএসপিএস কোড বাস্তবায়নে চট্টগ্রাম বন্দর আগামী ২০২২ সালের মধ্যে বিশ্বের শীর্ষ বন্দরের তালিকার ৫০-এর মধ্যে পৌঁছাবে। এ বছর ৬ ধাপ এগিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর শীর্ষ বন্দরের তালিকায় ৬৪ তে অবস্থান করছে।

তিনি বলেন, এ বছর চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণ ছিল ২৯ লাখ তিন হাজার। বন্দরের ইয়ার্ড ও টার্মিনাল সম্প্রসারণের ফলে হ্যান্ডলিং ক্ষমতা ৩১ লাখে উন্নীত হবে। এর ফলে বন্দরে আসা জাহাজ ৭২ ঘণ্টার স্থলে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পণ্য খালাস ও বোঝাই কাজ সম্পন্ন করতে পারবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর