× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ইটপাটকেল ছোড়ার খেলায় চীন-যুক্তরাষ্ট্র

এক্সক্লুসিভ

মানবজমিন ডেস্ক
২৫ আগস্ট ২০১৯, রবিবার

বেড়েই চলেছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ। নতুন করে ৫৫ হাজার কোটি ডলার সমমূল্যের চীনা পণ্যের ওপর পাঁচ শতাংশ শুল্কারোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় শুক্রবার এই শুল্কারোপ করেন তিনি। এর কয়েক ঘণ্টা আগে ৭ হাজার ৫০০ কোটি ডলার সমমূল্যের মার্কিন পণ্য আমদানির ওপর শুল্কারোপের ঘোষণা দেয় চীন। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
খবরে বলা হয়, শুক্রবার ধারাবাহিক কয়েকটি টুইটে চীনকে চোর আখ্যায়িত করেন ট্রাম্প। মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোকে চীন থেকে সরে আসার আহ্বান জানান। জানান, বাণিজ্যে চীনকে দরকার নেই যুক্তরাষ্ট্রের। ট্রাম্প বলেন, বহু বছর ধরে চীন আমাদের লাখ লাখ কোটি ডলারের ক্ষতি করছে।
তারা বছরে আমাদের কয়েকশ’ বিলিয়ন ডলারের বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ চুরি করেছে। তারা এসব চালিয়ে যেতে চায়। কিন্তু আমি এটা হতে দিতে পারি না। চীনকে আমাদের প্রয়োজন নেই। সত্যি বলতে তাদের ছাড়াই আমরা অনেক ভালো থাকতে পারি। আমাদের মহান আমেরিকান প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাৎক্ষণিকভাবে চীনের বিকল্প খোঁজার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ট্রাম্পের ওইসব টুইটের পর পরই মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্কারোপ করে চীন। আর এর কিছুক্ষণ পর চীনা পণ্যে শুল্কারোপের কথা জানান ট্রাম্প। দুই পক্ষের এমন সিদ্ধান্ত বিশ্ব অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা। এমন আশঙ্কায় ইতিমধ্যে শেয়ার বাজারগুলোয় ধস নেমেছে। যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারে কোম্পানিগুলোর দর পতন হয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। শুক্রবার বাজার বন্ধের পর শুল্কারোপের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। আশঙ্কা করা হচ্ছে, নতুন সপ্তাহে এর প্রভাব পুরোপুরিভাবে আবির্ভূত হবে।
ট্রাম্প তার শুল্কারোপের টুইটে জানান, ১লা অক্টোবর থেকে ২৫ হাজার কোটি ডলার সমমূল্যের চীনা পণ্য আমদানির ওপর আরোপিত ২৫ শতাংশ শুল্ক হার বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হবে। প্রসঙ্গত, ১লা অক্টোবর হচ্ছে গণচীন প্রতিষ্ঠার ৭০ বছরপূর্তি। ১৯৪৯ সালের এদিনে বেইজিংয়ে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠা করে দেশটির তৎকালীন সাম্যবাদী দল।
ট্রাম্প তার টুইটে আরো বলেন, আরো ৩০ হাজার কোটি ডলার সমমূল্যের চীনা পণ্য আমদানির ওপর শুল্ক হার ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হবে। প্রসঙ্গত, ট্রাম্প প্রাথমিকভাবে এই ৩০ হাজার কোটি ডলার সমমূল্যের পণ্য আমদানিতে অতিরিক্ত শুল্কারোপ করেননি। ঘোষণাটি কার্যকর হলে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রে অতিরিক্ত শুল্কারোপের শিকার হবে পণ্যগুলো। আগামী ১লা সেপ্টেম্বর থেকেই এসব পণ্যে নতুন শুল্কারোপ কার্যকর হওয়া শুরু হবে। তবে অর্ধেকেরও বেশি পণ্যে শুল্কারোপ কার্যকর হবে ১৫ই ডিসেম্বরের পর থেকে।
এদিকে, চীনা পণ্যের ওপর ট্রাম্পের নতুন শুল্কারোপের ঘোষণায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে মার্কিন ব্যবসায়ীরা। ন্যাশনাল রিটেইল ফেডারেশনের এক জ্যেষ্ঠ ভাইস-প্রেসিডেন্ট ডেভিড ফ্রেঞ্চ বলেন, এধরনের পরিস্থিতিতে ভবিষ্যতের জন্য ব্যবসায়ী পরিকল্পনা করা অসম্ভব। এই প্রশাসনের পদক্ষেপগুলো স্পষ্টতই ফলপ্রসূ হচ্ছে না। এর মধ্যে আমেরিকান ব্যবসা ও ভোক্তাদের ওপর অতিরিক্ত শুল্কারোপ করা সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। এর শেষ কোথায়?
চলতি সপ্তাহান্তে ফ্রান্সে জি-সেভেন নেতাদের সঙ্গে সম্মেলনে অংশগ্রহণ করার কথা রয়েছে ট্রাম্পের। এর আগ দিয়ে তার এমন ঘোষণায় বিশ্বজুড়ে আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সমালোচনায় বিষয়টি প্রাধান্য পাবে। ক্ষমতায় আসার পর থেকে চীনের বাণিজ্য নীতির সমালোচনা করে আসছেন ট্রাম্প। তার দাবি যুক্তরাষ্ট্র থেকে অত্যধিক সুবিধা ভোগ করে চীন। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি অনেক। এমনকি চীনের বিরুদ্ধে বুদ্ধিবৃত্তিক চুরির অভিযোগও করেন তিনি।
তবে চীন যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। শুক্রবার এক ঘোষণায় চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ১লা সেপ্টেম্বর ও ১৫ই ডিসেম্বর থেকে ৫ হাজার ৭৮টি মার্কিন পণ্য আমদানির ওপর ৫ বা ১০ শতাংশ শুল্কারোপ কার্যকর হবে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে প্রস্তুতকৃত মোটরগাড়ি আমদানিতে ২৫ শতাংশ ও গাড়ি তৈরিতে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ আমদানিতে ৫ শতাংশ শুল্কারোপ ফের চালু করা হবে। গত ডিসেম্বরে উত্তেজনা প্রশমনের জন্য এই শুল্কারোপ স্থগিত রাখা হয়। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ অবসানের জন্য আলোচনা চলছে। তবে এখনো কোনো সুরাহা হয়নি। আগামী সেপ্টেম্বরে ফের আলোচনায় বসার কথা রয়েছে তাদের। তবে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় বৈঠকটি না হওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর