কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় একটি বিদ্যালয়ে কাদাপানি পেরিয়ে স্কুলে যেতে হয় শিশু শিক্ষার্থীদের। আবার ছুটির পর কাদাপানি মাড়িয়ে বাড়ি ফিরতে হয় তাদের। অনেকেরই পা পিছলে পানিতে পড়ে পোশাকসহ বই-খাতাও নষ্ট হয়।
উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের ১২৪নম্বর হোসেন্দী আতকাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের চিত্র এটি। এ অবস্থার জন্যই বর্ষা মৌসুমে বিদ্যালয়ে উপস্থিতি আশঙ্কাজনকভাবে কমে যায়। অথচ মাত্র ১শ’ হাতের একটি রাস্তা শতাধিক শিশু শিক্ষার্থীর কষ্ট দূর করতে পারে।
গতকাল সকালে সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, প্রধান সড়ক থেকে প্রায় ১শ’ হাত দূরে বিদ্যালয়টি অবস্থিত। বিদ্যালয়ে যেতে কাঁচা একটি সরু রাস্তা।
পুরো রাস্তাটিই পানির নিচে ডুবে আছে। কয়েকজন শিশু শিক্ষার্থী রাস্তা দিয়ে কাদাপানি পেরিয়ে জুতা হাতে নিয়ে হিমশিম খেয়ে বিদ্যালয়ে যাচ্ছে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৮২ সালে মো. লুৎফর রহমান, মো. শামছ উদ্দিন, মো. ইসরাঈল, আবদুল খালেক ও আবদুল মান্নান নামের পাঁচ ব্যক্তি ৫২শতাংশ জমি দান করে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ হয়। শিক্ষার্থী মোট ১২০ জন। এর মধ্যে শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী ২৫ জন। হোসেন্দীর পূর্ব আতকাপাড়া, পশ্চিম আতকাপাড়া, কন্দরপদী ও চরপাড়া গ্রামের শিক্ষার্থীরা এ বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে। তবে বিদ্যালয়ে প্রবেশের রাস্তা ভালো না থাকায় বহু শিক্ষার্থী আশপাশের কিন্ডারগার্টেনসহ অন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলে যায়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আল আমিন বলেন, এক বছর হয়েছে আমি এই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেছি। আমি এসেই দেখি বিদ্যালয়ে প্রবেশের রাস্তাটির খুবই নাজুক অবস্থা। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তায় পানি জমে যায়। এই রাস্তাটির জন্যই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা আসতে চায় না। কিন্তু হোসেন্দী-মঠখোলা পাকা সড়ক থেকে ১শ’ হাতের একটি সংযোগ সড়ক হলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কষ্ট লাঘব হতো। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ও ভর্তিও অনেক বেড়ে যেত। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে আমি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ ইউপি চেয়ারম্যান ও তৎকালীন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। কিন্তু কারো কাছ থেকে কোনো সহায়তা পাইনি।
হোসেন্দী ইউপি চেয়ারম্যান মো. মজিবুর রহমান হামদু বলেন, রাস্তাটি নির্মাণের জন্য এলাকাবাসীকে নিয়ে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যে রাস্তাটি নির্মাণ করতে পারব বলে আশা করছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ফাইজ উদ্দিন আকন্দ বলেন, উপজেলা পরিষদের আগামী মাসিক সমন্বয় সভা ও শিক্ষা কমিটির মিটিংয়ে বিষয়টি তুলে ধরে এর প্রতিকার চাইব।