× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

জেটি ও টার্মিনাল প্রস্তুত /কর্ণফুলীতে চালু হচ্ছে ওয়াটারবাস

এক্সক্লুসিভ

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
২৬ আগস্ট ২০১৯, সোমবার

জেটি ও টার্মিনাল প্রস্তুত প্রায়ই সম্পন্ন। শুধুমাত্র কর্ণফুলী নদীর তলদেশ খনন সম্পন্ন হলেই চালু হবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ওয়াটারবাস সার্ভিস প্রকল্প। আর এতে ৪০ মিনিটেই নগরীর সদরঘাট থেকে জাহাজে করে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাতায়াত করা সম্ভব হবে।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক জানান, সড়কপথে নগরীর কালুরঘাট-বিমানবন্দর সড়কে যানজট কমাতে কর্ণফুলী নদীপথে ওয়াটারবাস চালুর প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। প্রথমত, এ সড়কের চট্টগ্রাম বন্দরের পণ্য পরিবহন এবং দ্বিতীয়ত শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রীদের যাতায়াত করতে হয়।

এতে সড়কে যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। আবার সময়মতো পৌঁছাতে না পারায় বিমানের শিডিউল বিপর্যয় দেখা দেয় হরহামেশা। একইভাবে চট্টগ্রাম বন্দরের পণ্য পরিবহনেও চরম ব্যাঘাত ঘটে।
তার ওপর বর্ষায় জলজট, পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলন-অবরোধ পড়লে তো আর কথায় নেই। যার মাশুল গুনতে হয় বন্দরকে।

ওমর ফারুক বলেন, বছরের শুরুতে এই প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। গত জুন মাস থেকে এই প্রকল্প চালুর কথা ছিল। কিন্তু নদীর তলদেশে পলি থাকার কারণে তা এখনো সম্ভব হয়নি। তবে শিগগিরই পলি খনন কাজ শুরু হবে। এরপর ওয়াটার বাস প্রকল্প চালু হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ওয়াটার বাসের জন্য নগরীর সদরঘাট এলাকায় ১৫০টি গাড়ির পার্কিং সুবিধাসহ দুই তলার একটি নান্দনিক টার্মিনালও নির্মাণ করা হয়। আর এই টার্মিনালের সামনে গড়ে তোলা হয় জেটি। সদরঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া জাহাজগুলো বিমানবন্দরের কাছে যেখানে ভিড়বে সেখানেও জেটি নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। রোববার নগরীর সদরঘাট ট্রাফিক পুলিশের বিপরীত পাশে দেখা যায় বিশাল গেট ও পার্কিং সেপস। ভেতরে প্রবেশ করতেই নান্দনিক এক দ্বিতল ভবন। কাঁচের ঘেরা দিয়ে গড়ে তোলা ভবনটিকে কোনো রেস্টুরেন্ট ভাবলেও ভুল হবে না। এর ভেতরে প্রবেশ করে কথা হয় ঠিকাদারের কেয়ারটেকারের সাথে। তিনি জানান, তৈয়বিয়া কনস্ট্রাকশন নামের ঠিকাদার কোমপানি টার্মিনাল নির্মাণের কাজ অনেক আগেই সমপন্ন করেছে। কিন্তু জেটির সামনের অংশে ড্রেজিং না হওয়ায় জেটির কাজ শেষ করা যাচ্ছে না। সরজমিনে দেখা যায়, পাশে থাকা স্কেভেটর দিয়ে নদী থেকে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে। তবে জোয়ারের কারণে তখন ড্রেজিং বন্ধ ছিল। আর জেটির সামনের অংশে আরেকটি সিঁড়ি নামানোর কথা থাকলেও তা হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় কর্ণফুলী ড্রেজিং এ নিয়োজিত ই ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের কাছে। ই ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ড্রেজিং প্রকল্পের ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, স্কেভেটর দিয়ে নদীর ধারে ড্রেজিং করা হলেও নদীর ভেতরের অংশে ড্রেজিং করা যায়নি। তাই জেটি ও নদীর মধ্যবর্তী স্থানে পলি থাকায় জাহাজ ভেড়ানোর মতো সুযোগ সৃষ্টি হয়নি।

বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, কর্ণফুলী নদীর সদরঘাট থেকে বাকলিয়ার চর পর্যন্ত ড্রেজিং এর মাধ্যমে নাব্যতা বৃদ্ধি প্রকল্পের অধীনে ডিপিএম পদ্ধতিতে বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ নৌ কল্যাণ সংস্থাকে দায়িত্ব দেয় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। মূলত ড্রেজিংয়ের কাজ দ্রুত বাস্তবায়নের জন্যই এই দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল ৫ই মে। কিন্তু নৌ কল্যাণ সংস্থা ড্রেজিংয়ের দায়িত্ব নেয়ার পর সাব ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ দেয় ই ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডকে। ই ইঞ্জিনিয়ারিং আবার চার কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকায় নদীর মাটি খনন, আটটি খালের মুখ পরিষ্কার ও লাইটার জেটি এলাকার মাটি অপসারণের কাজ করতে আরো তিন প্রতিষ্ঠানকে সাব ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ দেয়। ঠিকাদারের আবর্তে ঘুরতে ঘুরতে কর্ণফুলীর মাটি ঘূর্ণন বন্ধ হয়ে নদী থেকে আর মাটি উঠেনি। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রকৌশল) কমডোর খন্দকার আক্তার হোসেন বলেন, এটা ঠিক ড্রেজিংয়ের কারণে ওয়াটার বাস সার্ভিস চালু হতে বিলম্ব হচ্ছে। তবে যেভাবেই হোক বিকল্প উপায়ে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে হলেও তা চালু করার উদ্যোগ নিতে হবে। অন্যথায় আগামীতে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চালু হলে বিমানবন্দরমুখী মানুষ দুর্ভোগে পড়বে। বিকল্প উপায় কী হতে পারে জানতে চাইলে বন্দরের এ কর্মকর্তা জানান, গ্র্যাব ডেজারের মাধ্যমে নদীর তলদেশের উপরের অংশের মাটি উত্তোলন করে কাটার সাকশান ড্রেজার ব্যবহার করা যেতে পারে। আর এই কাজটি ঠিকাদারকেই করতে হবে। সূত্র জানায়, ওয়াটারবাস সার্ভিস প্রকল্পের আওতায় চারটি ওয়াটারবাস ইতিমধ্যে তৈরি হয়ে গেছে। ওয়েস্টার্ন মেরিন এগুলো ঢাকায় নির্মাণ করেছে। প্রতিটিতে ১৫০ জন যাত্রীর বসার ব্যবস্থা রয়েছে। সদরঘাট থেকে বিমানবন্দরে যেতে ৪০ মিনিট সময় লাগবে। প্রথমদিকে এক ঘণ্টা পর পর ও পরবর্তীতে আধা ঘণ্টা পরপর এই সার্ভিস উভয় প্রান্ত থেকে চলাচল করবে। একইসাথে টার্মিনালে বিমান পরিবহন সার্ভিসগুলোর শাখাও এখানে রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। এর মাধ্যমে বিমানের যাত্রীরা এখানে লাগেজে ট্যাগ যুক্ত করে নিতে পারবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর