চরফ্যাশনের গ্রামে কিছু কাঁচা রাস্তার অবস্থা খুবই নাজুক। সড়ক না চাষের জমি চেনাই মুশকিল। অপরিচিত কেউ দেখলে আঁতকে ওঠে। বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই সড়কটি কাদামাখা পানি থই থই করছে। একেবারে কৃষি আবাদের উপযোগী হয়ে পড়েছে। এমন একটি সড়কের নাম মাদ্রাজের জামান সড়ক।
চরফ্যাশন পৌর শহরের আজম খান সড়ক দিয়ে একটু দক্ষিণে গিয়ে সোজা পূর্ব দিকে মাদ্রাজের উত্তর চর নাজিমউদ্দিন গ্রামের ৮ কি. মি. পথ অতিক্রম করে মেঘনা পাড়ের বেড়িবাঁধে গিয়ে মিশেছে জামান সড়ক নামের কাঁচা সড়কটি। ৩০ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষকে এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন পায়ে হেঁটে চলাচল করতে হচ্ছে।
কাদাপানির কারণে কোনো যানবাহন তো দূরের কথা কেউ হেঁটে যেতেই আঁতকে ওঠেন। অথচ এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ছাত্রছাত্রীরাসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ চলাচলে বাধ্য হচ্ছে। ওই এলাকায় বসবাসকারী মানবজমিন পত্রিকা বিক্রেতা মো. কবির জানান, এ গ্রামের মানুষ যদি কোনো রোগী কিংবা দুর্ঘটনায় পড়ে তাহলে ওইসব লোক কেবল কোলে-পিঠে করে বা রথযাত্রা ছাড়া কোনো স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারে না।
এ সড়ক দিয়ে মেঘনার মনোরম দৃশ্য দেখার জন্য শুকনো মৌসুমে পর্যটকদের ঢল নামে। জেলেরা নদীতে মাছ শিকার করে দেশের বিভিন্ন জেলায় মৎস্য রপ্তানি করে আসছে। বর্ষা হলেই তা অসম্ভব হয়ে পড়ে। সড়কের কোল ঘেঁষে স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীরা যাতায়াতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। তারা প্রতিষ্ঠানে না গিয়ে অলস সময় কাটাচ্ছে।
মাদ্রাজের বেড়িবাঁধ ভেঙে প্রবল স্রোতের কারনে ওইসব এলাকায় অন্যান্য পাকা সড়কগুলোও নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে যাতায়াতের অনুপযোগী হয়ে পড়ে রাস্তাগুলো। সড়কের পাশে বসবাসকারী নাজিমুদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আমিনুল মালতিয়া জানান, প্রায় কয়েক যুগ আগে থেকেই এ কাঁচা সড়কটি বেহাল। কোনো সরকারের নজরেই আসেনি এ সড়কটি। তবে বর্তমান সরকারের আমলে মাদ্রাজ ইউনিয়নে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। যা অ। আগে কোনো সরকারের আমলে হয়নি। বেড়িবাঁধ ভেঙে মেঘনার পানি প্রবেশ করার কারণে সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়। স্থানীয় সংসদ সদস্য সাবেক পরিবেশ ও বন উপমন্ত্রী আলহাজ আব্দুল্যাহ আল-ইসলাম জ্যাকব এমপির একান্ত প্রচেষ্টায় সড়কের ব্যাপক উন্নয়ন হলেও এ কাঁচা সড়কটি তার নজরে আসেনি। ওই এলাকার সাবেক মেম্বার জাকির আখন জানান, সড়কটি দ্রুত পাকা না করলে দুর্ভোগের সীমা থাকবে না। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রুহুল আমিন জানান, সড়কটি পাকাকরণের কাজ প্রক্রিয়াধীন। সড়কটির দ্রুত পাকা করার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করেন ওইসব এলাকার ভুক্তভোগী জনগণ।