টেকনাফে যুবলীগ নেতা ওমর ফারুক হত্যা মামলার আরো ২ আসামি ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন মো. আব্দুল করিম (২৪) ও নেছার আহাম্মদ প্রকাশ নেছার ডাকাত (২৭)। তারা দুজনেই নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শিবিরের বাসিন্দা ছিল। বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ১২ টার দিকে জাদিমুরা এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে তারা নিহত হয়। এনিয়ে ওমর ফারুক হত্যা মামলার প্রধান আসামি ডাকাত নুর মোহাম্মদ সহ ৫ জন বন্দুকযুদ্ধে নিহত হলো। অপরদিকে কুষ্টিয়ায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মোল্লাতেঘরিয়া ক্যানেলপাড়ায় ‘বন্দুকযুদ্ধের’ এ ঘটনা ঘটে। নিহত মাদক ব্যবসায়ীর নাম সুজন (৩২)।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার দাশ সংবাদের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, যুবলীগ নেতা ওমর ফারুক হত্যা মামলার আসামিরা হ্নীলা ইউপিস্থ জাদিমুরা এলাকায় চাইল্ড ফেন্ডলী স্পেস অফিসের পিছনে পাহাড়ের উপরে পানির ট্যাংকির নিচে অবস্থানের সংবাদ পায়।
এই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওসি নিজের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল সেখানে অভিযানে যায়। এসময় পুলিশের উপস্থিত টের পেয়ে অস্ত্রধারী দৃষ্কৃতিকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়তে থাকে।
এতে ঘটনাস্থলে এএসআই কাজী সাইফ উদ্দিন, কনস্টেবল নাবিল ও রবিউল ইসলাম আহত হয়। তাৎক্ষণিক নিজেদের জীবন সরকারি সম্পত্তি রক্ষার্থে পুলিশ ২৮ রাউন্ড গুলি করা হয়। গোলাগুলির শব্দ শুনে ঘটনাস্থলে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসতে থাকলে গুলি করা বন্ধ করি এবং ঘটনাস্থল হইতে অস্ত্রধারী দৃষ্কৃতিকারীরা গুলি করিতে করিতে দ্রুত পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত উৎসুক জনসাধারনের মধ্যে হতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝি ও স্থানীয় জনসাধারনের উপস্থিতিতে ঘটনাস্থলের দিকে আগাইয়া গেলে দৃষ্কৃতিকারীদের ছোঁড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ২ জন ব্যক্তি মাটিতে পড়ে থাকতে দেখি।
ঘটনাস্থলের আশপাশ ব্যাপক তল্লাশি করে আসামিদের বিক্ষিপ্তভাবে ফেলে যাওয়া ২টি এলজি ৭ রাউন্ড শর্টগানের তাজা কার্তুজ এবং ৯ রাউন্ড কার্তুজের খোসা জব্দ করা হয়।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১লা সেপ্টেম্বর ভোরে ওমর ফারুক হত্যা মামলার প্রধান আসামি রোহিঙ্গা ডাকাত সর্দার নুর মোহাম্মদ ও ২৩শে আগস্ট মো. শাহ আব্দুর শুক্কুর নামে আরো দুই আসামি একই এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছিলেন। তার আগের দিন ২২শে আগস্ট রাতে একদল রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুরা এলাকায় ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি আব্দু মোনাফ কোম্পানীর ছেলে ওমর ফারুক কে নিজ বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে পাহাড়ী এলাকায় নিয়ে গুলি করে হত্যা করেছিল।
এদিকে কুষ্টিয়ায় প্রতিনিধি জানান, বন্দুকযুদ্ধে নিহত মাদক ব্যবসায়ী সুজন মোল্লাতেঘরিয়া ক্যানেলপাড়ার আবুল কাশেমের ছেলে। ঘটনাস্থল থেকে ১টি বিদেশী পিস্তল, ১রাউন্ড পিস্তলের গুলি, ৫০ বোতাল ফেন্সিডিল ও ৩শ পিচ ইয়াবা উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশের এক এস আইসহ চার পুলিশ আহত হয়েছেন বলে পুলিশ দাবী করেছে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ নাসির উদ্দিন বলেন, রাত ২টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর আসে মোল্লাতেঘরিয়া ক্যানেলপাড়ায় দু’দল মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ চলছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছালে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। পুলিশও পাল্টা জবাব দিলে বেশ কিছুক্ষণ উভয়ের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ চলে। একপর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে গেলে গুলিবিদ্ধ আহত অবস্থায় একজনকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া ২শ ৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে খোঁজ নিয়ে তার পরিচয় জানা যায় সে মোল্লাতেঘরিয়া ক্যানেলপাড়া আবুল কাশেমের ছেলে মাদক ব্যবসায়ী সুজন। তার বিরুদ্ধে মডেল থানায় মাদক ব্যবসার একাধিক মামলা রয়েছে।