× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সরাইলে ভিজিডি’র চাল নিয়ে যা হচ্ছে

এক্সক্লুসিভ

সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, শনিবার

সরাইলে দুস্থদের বিক্রি করা ভিজিডির চাল নিয়ে চলছে নানা নাটকীয়তা। পুলিশকে ভুল তথ্য দিয়ে বসতবাড়ি থেকে জব্দ করানো হয়েছে ১০০ বস্তা চাল। গত বুধবার রাত ১১টার দিকে উপজেলার শাহজাদাপুর ইউনিয়নের দেওড়া গ্রামের আজহার উদ্দিনের বাড়ি থেকে ৩০০০ কেজি ওজনের ১০০ বস্তা চাল জব্দ করেছে পুলিশ। এ সময় পুলিশ ৫ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁরা হলেন- তৌহিদ মিয়া (৫০), মাসুদ মিয়া (৪৫), সাইফুর রহমান (৪৫), রাজন মিয়া (২১) ও শাকিল মিয়া (২০)। এ ঘটনায় সরাইল থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) গোপী মোহন সরকার বাদী হয়ে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৪ এর বি ধারায় বৃহস্পতিবার মামলা  করেছেন। মামলায় ৭ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা রয়েছে আরো ৩/৪ জন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেলা হাজতে পাঠানো হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, সরকার ভার্নারেবল গ্রুপ ডেভলপমেন্ট (ভিজিডি) কর্মসূচির আওতায় পল্লি অঞ্চলের হতদরিদ্র নারীদের মাঝে দুই বছরের জন্য প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে বিনামূল্যে চাল দিয়ে আসছে। এজন্য প্রতি নারীকে ইউনিয়ন পরিষদে প্রতিমাসে ২০০ টাকা করে সঞ্চয় জমা রাখতে হয়। যা তারা ২৪ মাস পর ফেরত পাবেন। তবে গত জুন মাস থেকে চাল বিতরণ বন্ধ ছিল। শাহজাদাপুর ইউনিয়নের ১৫৭ জন হতদরিদ্র নারী এ কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। বুধবার থেকে ওই ইউনিয়নে তিন মাসের চাল এক সঙ্গে বিতরণ শুরু হয়। বুধবার রাতে পুলিশ যে চাল জব্দ করেছে তা এ ভিজিডির চাল বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।

সরজমিনে গিয়ে জানা গেছে গতকাল পর্যন্ত ১৫৭ জন হতদরিদ্র  তাদের জন্য বরাদ্দকৃত চাল বুঝে নিয়েছেন। শাহজাদাপুর ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ড নিয়ামতপুর গ্রামের খিতিশ ভৌমিকের স্ত্রী ঝর্ণা রানী ভৌমিক (সিরিয়াল নং-৫৪), বাসুদেব সরকারের স্ত্রী শিপরা রানী সরকার (সিরিয়াল নং-৪৭), মলাইশ গ্রামের যোগেশ চন্দ্র দাসের স্ত্রী ভবানী রানী দাস (সিরিয়াল নং-৭৩), সুভাষ চন্দ্র দাসের স্ত্রী সুপ্রিয়া রানী দাস (সিরিয়াল নং-৭১), সুব্রত ভৌমিকের স্ত্রী শিল্পী রানী ভৌমিক (সিরিয়াল নং-৮৯), হরিমন রায়ের স্ত্রী প্রমিলা রানী রায় (সিরিয়াল নং-৯০), শ্রীমঙ্গলের স্ত্রী কবিতা বেগম (সিরিয়াল নং-৯২), ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড দেওড়া গ্রামের দুধ মিয়ার স্ত্রী নূরজাহান বেগম (সিরিয়াল নং-১১১), জাহের মিয়ার স্ত্রী রেহেনা বেগম (সিরিয়াল নং-১৩১), মিশন আলীর স্ত্রী রাবিয়া বেগম (সিরিয়াল নং-১১৫), আল-আমীন ভূঁইয়ার স্ত্রী তৌহিদা বেগম (সিরিয়াল নং-১১২), মিন্টু মিয়ার স্ত্রী হাসমত আরা (সিরিয়াল নং-১২৩), কুদ্দুছ মিয়ার স্ত্রী ফেরদৌসা বেগম (সিরিয়াল নং- ১৩৩), হুমায়ুন মিয়ার মেয়ে বিউটি বেগম (সিরিয়াল নং-১৩৭), বারেক মিয়ার স্ত্রী নাজমা বেগম (সিরিয়াল নং-১৪৭), রেহেনা বেগম (সিরিয়াল নং-১৪৮) ও মাসুদা বেগমসহ অন্তত ২০-৩০ জনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা সবাই ৯০ কেজি করে চাল বুঝে নিয়েছেন। তবে তাদের সবাই টাকার জন্য দুই বস্তা (৬০ কেজি) করে চাল বিক্রি করে দিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ব্যক্তি জানান, যেসব নারী দূর দূরান্ত থেকে এসেছিলেন তারা পুরো ৯০ কেজি চালই বিক্রি করে চলে গেছেন। মহিলারা প্রায় সময়ই পরিষদ থেকে চাল উত্তোলন করার পর বিক্রি করে দেন। ওই চালগুলোই আটক ব্যক্তিরা ক্রয় করে এক স্থানে মজুদ করেছিলেন। শাহজাদাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, ‘আমার এখানে যথাযথ প্রক্রিয়ায় হতদরিদ্র নারীদের মাঝে চাল বিতরণ হয়েছে। এখান থেকে চাল নিয়ে কেউ তাদের প্রয়োজনে বিক্রি করে থাকলে আমাদের কিছুই করার থাকে না। আমার এখানে চাল বিতরণের ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম হয়নি।’ সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এএসএম মোসা বলেন, ‘যেহেতু বিপুল পরিমাণ সরকারি চাল এক সঙ্গে সচ্ছল ব্যক্তিদের অধীনে পাওয়া গেছে তাই, ওই ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপির সচিব গাজী সিরাজুল ইসলাম ও সংশ্লিষ্ট টেক কর্মকর্তা (উপজেলা দারিদ্র্যবিমোচন কর্মকর্তা) কাজী আবদুল মোমেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাঁদের জবাব দিতে বলা হয়েছে। উপযুক্ত জবার দিতে ব্যর্থ হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর