জাস্টিন ল্যাঙ্গার অস্ট্রেলিয়ার কোচ হওয়ার পর ২০১৮-১৯ মৌসুমের শুরুতে মিচেল মার্শকে সহ-অধিনায়ক বানিয়েছিলেন। কিন্তু প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হন অস্ট্রেলিয়ার এই পেস অলরাউন্ডার। সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাকিস্তানের বিপক্ষে একটা বাজে সফর কাটে তার। এরপর ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষেও খারাপ করেন মিচেল মার্শ। এ কারণে টেস্ট দল থেকে তো বটেই অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ পরিকল্পনা থেকেও বাদ পড়েন তিনি। সঙ্গে হারান বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তি। মিচেল মার্শের খারাপ করার পেছনে অনেক কারণ ছিল। প্রথমত যেমন ফিটনেস দরকার, তা ছিল না।
দ্বিতীয়ত গত বছর মিচেল মার্শের খুব কাছের একজন বন্ধু আত্মহত্যা করেন। সেটার বাজে প্রভাব পড়েছিল মার্শের ওপর। তৃতীয়ত, মানুষের সমালোচনা। তবে দুঃসময় ফেছনে ফেলে আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছেন মার্শ। ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অ্যাশেজের পঞ্চম ও শেষ টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৪৬ রানে ৫ উইকেট নেন তিনি। ৩২ টেস্টে যা তার সেরা বোলিং ফিগার। ওভালে আগের দিনের ২৭১/৮ সংগ্রহ নিয়ে গতকাল অল্পতেই থামে ইংল্যান্ডের ইনিংস। গতকাল ইংল্যান্ডের ইনিংসের শেষ শিকার তুলে নিয়ে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন মিচেল মার্শ। ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংস শেষ হয় ২৯৪ রানে।
২২৮ রানেই ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলা ইংল্যান্ড জস বাটলার-জ্যাক লিচের নবম উইকেট জুটিতে ৮২ ওভারে ২৭১/৮ তুলে ম্যাচের প্রথম দিন পার করে। তবে গতকাল দ্বিতীয় দিনে মাত্র ৫.১ ওভার টেকে ইংল্যান্ডের ইনিংস। ৭ বলের ব্যবধানে বাকি ২ উইকেট হারিয়ে অলআউট হয় তারা। ৮৭তম ওভারের প্রথম বলে বাটলারকে সরাসরি বোল্ড করেন প্যাট কামিন্স। ৯৮ বলে ৭ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায় দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭০ রান করেন বাটলার। পরের ওভারেই জ্যাক লিচকে (২১) বোল্ড করে টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবার ইনিংসে ৫ উইকেট নেয়ার স্বাদ নেন মিচেল মার্শ।
প্রথম দিনে একটা সময় ইংল্যান্ডের স্কোর ছিল ১০৩/২। কিন্তু দলীয় ১৩০ রানে মার্শের বলে বেন স্টোকস আউট হওয়ার পর ইংলিশদের ধস নামে। ৯৬ রানের ব্যবধানে আরো ৫ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। যার ৩টিই যায় মার্শের পকেটে। ৪ উইকেট নেয়া মার্শ প্রথম দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘‘জেএল (জাস্টিন ল্যাঙ্গার) মধ্যাহ্ন বিরতির সময় আমাকে বললেন, ‘যাও আক্রমণ করো। তুমি যেভাবে পারো বোলিং করো। এটা আমাকে আত্মবিশ্বাস যুগিয়েছিল।’’
সংবাদ সম্মেলনে নিজের একটা দুঃখও শেয়ার করেন মার্শ। বলেন, ‘আমাকে অধিকাংশ অস্ট্রেলিয়ান ঘৃণা করে। তারা ক্রিকেট খেলাটা খুব ভালোবাসে। তারা চায় ক্রিকেটাররা ভালো খেলুক। টেস্টে আমি অনেক সুযোগ পেয়েছি সত্য। কিন্তু সেভাবে নিজেকে প্রমাণ করতে পারিনি। কিন্তু আমার প্রত্যাবর্তনটা যেমন হয়েছে তাতে আশা করা যায় তারা আমাকে সম্মান করবে। আমি এই ব্যাগি গ্রিন ক্যাপটা ভালোবাসি। আশা করি, একদিন আমি তাদের মন জয় করতে পারবো।’ মার্শ কি পেরেছেন অজি ক্রিকেট ভক্তদের সন্তুষ্ট করতে?