বিএডিসি’র ঝিনাইদহের দত্তনগর বীজ উৎপাদন খামারের ১২৯ দশমিক ২২ মেট্রিক টন ধান বীজ আত্মসাতের ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে বিএডিসি’র পরিচালক (অর্থ) মোমিনুর রশিদ আমিন।
কমিটির অপর সদস্যরা হচ্ছেন, ব্যবস্থাপক (বিক্রয়) সার ব্যবস্থাপনা মো. আবুল কালাম আজাদ ও উপ পরিচালক (সংস্থাপন) রাজীব হোসেন। এ সংক্রান্ত বিএডিসি’র এক অফিস আদেশে বলা হয়, কমিটি গুরুতর অনিয়মের বিষয়ে সরজমিনে তদন্ত করে সুস্পষ্ট মতামতসহ প্রতিবেদন ও সুপারিশ দাখিল করবে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে যশোর বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে সদর দপ্তর হতে প্রাপ্ত কর্মসুচি বহির্ভূতভাবে ১২৯ দশমিক ২২ মেট্রিক টন এসএল ৮ এইচ হাইব্রিড ধান বীজ মজুদ করা হয়। এ বীজের মধ্যে ৭৫ দশমিক ০৭৫ মেট্রিক টন গোকুলনগর খামার, ৩২ দশমিক ১১ মেট্রিক টন পাথিলা খামার ও ২২ দশমিক ০৩৫ মেট্রিক টন করিঞ্চা খামার থেকে কর্তৃপক্ষের কোন অনুমোদন না নিয়ে ও চালান ব্যতিরেকে যশোর বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে পাঠানো ও মজুদ করা হয়।
যশোর বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রের উপ পরিচালক মো. আমিন উল্লাহ, দত্তনগরের গোকুলনগর খামারের উপ পরিচালক তপন কুমার সাহা, পাথিলা খামারের উপ পরিচালক আকতারুজ্জামান তালুকদার ও করিঞ্চা খামারের উপ পরিচলক ইন্দ্রজিৎ শীল পরস্পর যোগসাজসে ধান বীজ চুরির কা- ঘটায়। তদন্ত শেষে প্রতিবেদনে অনিয়মের কারণ উদঘাটন, অনিয়মের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের চিহ্নিতকরণ, জড়িতদের দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ, অনিয়মের কারণে সংস্থার আর্থিক সংশ্লেষণ নিরুপন ও ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম রোধে সুপারিশ প্রদান করতে বলা হয়েছে।
আগামী ১০ অক্টোবরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন চেয়ারম্যানের কাছে দাখিল করতে বলা হয়।
সূত্র মতে, মাস তিনেক আগে এ বীজ দত্তনগরের গোকুলনগর, পাথবিলা ও করিঞ্চা খামার থেকে ১২৯ দশমিক ২২ মেট্রিক টন বীজ অবৈধভাবে যশোর বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে পাঠিয়ে আত্মসাতের জন্য মজুদ করা হয়। গত মাসে এ কেন্দ্রের উপ সহকারি পরিচালক আবদুল কাদের উর্ধতন কর্তপক্ষকে বিষয়টি জানান। তারপর এ দুর্নীতির তথ্য ফাঁস হয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে সত্যতা পাওয়া গেলে যশোর বীজ প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্রের উপ পরিচালত মো. আমিন উল্লাহ, গোকুলনগর খামারের উপ পরিচালক তপন কুমার সাহা, পাথিলা খামারের উপ পরিচালক মো. আকতারুজ্জামান তালুকদার ও করিঞ্চা খামারের উপ পরিচালক ইন্দ্রজিৎ শীলকে সাময়িক বরখাস্ত করে ঢাকা অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই কমিটি তদন্ত কাজ শুরু করেছে।
এদিকে, অভিযোগ পাওয়া গেছে, ৩ কোটি টাকা মুল্যের এই ধান চুরির ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে একটি মহল দৌড় ঝাপ শুরু করেছে। তারা ধান বীজ প্রেরণের অনুমোদন ও চালান তৈরী করে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।